Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চীন অভিমুখে শরণার্থীদের ঢল

| প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : পুনরায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তবর্তী শান রাজ্যের কোকাং শহরে। গত সপ্তাহ থেকে শহরটিতে লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় সশস্ত্র নৃতাত্তি¡ক গোষ্ঠীগুলোর সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। সংঘাতের জেরে সীমান্ত পেরিয়ে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনান প্রদেশের শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। ৬ মার্চ স্থানীয় লউক্কাই শহরে হামলা করে মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মির (এমএনডিএএ) সদস্যরা। পুলিশের নিরাপত্তা পোস্টেও হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় নিহত হন পাঁচ পুলিশ ও পাঁচ বেসামরিক নাগরিক। এছাড়া আরো চার ট্রাফিক পুলিশকে জিম্মি করে এমএনডিএএ সদস্যরা। এর পরপরই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দেশটির সেনাবাহিনী এ অঞ্চলে ব্যাপক অভিযান শুরু করে। লউক্কাই শহরে পুলিশ ও সেনাদের যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়। এ অভিযান চলাকালে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। সেনাবাহিনীর ভারী অস্ত্রের বিপরীতে এসব গোষ্ঠীকে গ্রেনেডসহ হালকা অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধে নামতে দেখা গেছে। সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে এ পরিস্থিতিকে স্টেট অব ওয়ার বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। চীনা প্রশাসনের মতে, এবারের সংঘাতের পরে মিয়ানমারের সংঘাতপ্রবণ কোকাং অঞ্চল থেকে ২০ হাজারের বেশি শরণার্থী চীনের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। তারা বিপদসঙ্কুল পাহাড়ি পথে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে চীনে আসছেন। শরণার্থীদের নিরাপত্তা দিতে এরই মধ্যে প্যারামিলিটারি বাহিনী মোতায়েন করেছে দেশটি। দেশটির শরণার্থী ক্যাম্পের ম্যানেজার লি ইনজং বলেন, মিয়ানমার থেকে চীনা হান সম্প্রদায়ের মানুষ সীমানা পেরিয়ে বেশি আসছেন। ক্যাম্পে তারা কষ্টকর জীবন কাটাচ্ছেন। কিন্তু যত দিন তারা ফিরে যেতে না চাইবেন, তত দিন আমরা তাদের দেখাশোনা করব। এসব শরণার্থীকে বড় নীল রঙের শিবিরে থাকতে দেয়া হয়েছে। সার বাঁধা শিবিরগুলোয় শরণার্থীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এর আগে ২০০৯ সালে এ অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সঙ্গে স্থানীয় সশস্ত্র গ্রæপগুলোর সংঘাত ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় হতাহতের পাশাপাশি অনেক মানুষ বাস্তুহারা হন। ২০১৫ সালে আবার এ অঞ্চলটি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে এবারের সংঘাত আগের তুলনায় বেশি ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংঘাত নতুন মাত্রা পায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নয়া সিল্ক রোড নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণার পর। ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড পরিকল্পনার আওতায় সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কথা রয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। এলাকাটি চীনা অধিবাসী অধ্যুষিত হলেও স্থানীয়রা এ উদ্যোগের বিরোধিতা করছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ সংঘাত চীন-মিয়ানমার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এদিকে সংঘাতপ্রবণ অঞ্চলগুলোয় শন্তি ফিরিয়ে আনতে সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তিচুক্তি করতে উদ্যোগী হয়েছেন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু চি। এ উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট এলাকায় শান্তি ফিরবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ওয়াশিংটনের স্টিমসন সেন্টারের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট উন সুন বলেন, চীন এ অঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ দেখতে চায়। এবারের সংঘাতের মাত্রা যদি ২০১৫ সালের সংঘাতকে ছাড়িয়ে যায়, তবে তা চীনা প্রশাসনকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে পারে। সু চি জানান, শান্তি স্থাপনে এ উদ্যোগে সহায়তা দিতে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে চীন। রয়টার্স, ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ