Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জড়িতদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের দাবী

রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের মুখে আরাকানের সহিংসতা তদন্ত কমিশনের সদস্যরা

| প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার অফিস : কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শনকালে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছে বাংলাদেশে সফররত মিয়ানমার তদন্ত প্রতিনিধি দল। ক্যাম্প সূত্রে জানাগেছে, আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার এই তদন্ত কমিশন গঠন করলেও তারা রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে মোটেও আন্তরিক নয়। আরাকানের সহিংসতা তদন্ত কমিশনের ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল গতকাল থেকে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো সফর শুরু করেছেন। মিয়ানমার সরকারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সুচি কর্তৃক গঠিত আরাকানের সহিংসতা তদন্ত কমিশনের ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদল রোববার উখিয়ার কুতুপালং নতুন রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন করেন। এসময় প্রতিনিধিদল নতুন আশ্রয় নেওয়া অর্ধশতাধিক নির্যাতিত নারী ও পুরুষের পৃথক পৃথক সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদল রোহিঙ্গাদের কথার সাথে একমত পোষণ করেনি বলে জানাগেছে। এছাড়াও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কোন কথা বলেননি তদন্ত কমিশন। প্রতিনিধিদলের সফরকালে ক্ষুব্ধ রোহিঙ্গারা মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
বেলা ২টার দিকে মিয়ানমার তদন্ত কমিশন কুতুপালং বস্তি পরিদর্শনকালে ব্যানার সহকারে শত শত রোহিঙ্গা কমিশনের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এসব অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মাধ্যমে বিচারের আহŸান জানান। আলোচনায় অংশ নেওয়া রোহিঙ্গারা জানান, আরাকানের বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলেও তদন্ত কমিশন একবারও রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফিরে যাবে কিনা জানতে চায়নি এবং তাদের নির্যাতনের কথাগুলো বোঝার চেষ্টা করেনি। তদন্ত কমিশনের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মিয়ানমার সরকার গঠিত তদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব জ্য মিন প্য, কমিশনের সদস্য ড. অং থুন তেথসহ ৬ সদস্যের প্রতিনিধি। প্রতিনিধিদলের সাথে ছিলেন কুতুপালং ক্যাম্প ইনচার্জ মোঃ শামসুদ্দোজা, উখিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নুরুদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী, উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল খায়েরসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর একটি চৌকি আক্রান্তের অভিযোগে অপারেশন ক্লিয়ারেন্স এর নামে প্রায় ৪ মাস ব্যাপী আরাকান (রাখাইন) প্রদেশের মংডু, বুচিডং, আকিয়াবসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত পাড়া-গ্রামগুলোতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ব্যাপক তান্ডব চালানো হয়। এর প্রেক্ষিতে সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নারী-পুরুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এসব রোহিঙ্গাদের বাস্তব অবস্থা জানতে এই তদন্ত কমিশন কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ও টেকনাফের নয়াপাড়া-লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন।
মিয়ানমার প্রতিনিধি দল গতকাল বিকেল ৪টার কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেয়। ২১মার্চ তারা উখিয়া বালুখালী এবং টেকনাফের লেদা নতুন রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন করবেন জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ