Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কমলা

| প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম


জনপ্রিয়ও সহজলভ্য অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল কমলা। কমলা সারা বছরই বাংলাদেশে পাওয়া যায়। তবে শীতকালে কমলা বেশি পাওয়া যায়। এ সময়ের কমলা স্বাদও বেশি। কেউ বলেন, কমলার আদি নিবাস চীন, কেউ বলেন ভারত। তবে ভারতের দার্জিলিং এবং বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলের ও ছাতকের কমলা স্বাদ একটু বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক জেলায় কমলা চাষ হয়। পৃথিবীর সব দেশে কমলা পাওয়া যায়। আমরিকার ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের জাতীয় ফুল কমলার ফুল। গোলাকৃতির রসে টুইটম্বুর ফলটি ছোট বড় সবার নিকট প্রিয় এবং সকলের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী কমলা এক প্রকার লেবু জাতীয় রসালো ফল। জাম্বুরা, মাল্টা ইত্যাদি প্রাকৃতিক শংকরায়িত সাইট্রাস ফলসমূহ কমলা থেকে উদ্ভূত এবং কমলাই একমাত্র মিষ্টি স্বাদের আদি সাইট্রাস ফল। কমলা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ঈরঃৎঁং ৎবঃরপঁষধঃধ, উদ্ভিদ জগতের জঁঃধপবধব পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। কমলাকে ইংরেজিতে গধহফধৎরহ ঙৎধহমব, গধহফধৎরহ, গধহফধৎরহব বলা হয় কমলা মানব দেহের নানা রোগ প্রতিরোধ করে আমাদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে। দেহের অতিরিক্ত ওজন কমায়, ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষা করে। রক্ত সঞ্চালন সহজ করে হৃৎপিÐকে সুস্থ ও সবল রাখে। কমলাতে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন পাওয়া যায়। তাছাড়া আলফা ও বিটা ক্যারোটিনের মতো ফ্ল্যাভনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ যা দেহের নানা স্থানের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের চাহিদা একটি কমলাই জোগান দেয়। কমলাতে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ফ্রি র‌্যাডিকেল ধ্বংস করে ত্বকের সজীবতা বজায় রাখে, বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। কমলার বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধ করে। ঘন ঘন সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করে। প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী খোসা ছাড়ানো কমলাতে পুষ্টি উপাদান হলো : জলীয় অংশ ৮৯.৪ গ্রাম, প্রোটিন ০.৯ গ্রাম, ¯েœহ ০.৩ গ্রাম, শর্করা ১১.৪গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.৪ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৮০ কিলোক্যালরি, ক্যালসিয়াম ৩৩ মিলিগ্রাম, আয়রন বা লোহা ০.৬ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৩ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৩০০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ৫০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি ০.৮ মিলিগ্রাম, এবং কিছু পরিমাণ ভিটামিন ‘এ’ আছে।
উপকারিতা : * কমলাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ থাকায় নিয়মিত কমলার রস খেলে সর্দি, কাশি, জ্বর অতি সহজে কমে আসে। * কমলার রস শীরের দুর্বলতা দূর করে শক্তিশালী করে গড়ে তুলে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। * মহিলাদের মাসিকের পর শরীর দুর্বলতা দেখা দেয় এর সময় প্রচুর কমলার রস খেলে দুর্বলতা কমিয়ে দেয়। এবং শরীরের সজীবতা এনে দেয়* কমলার উপস্থিত ক্যালশিয়াম দাঁত ও হাড় গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে। * কমলার পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে দেয়। তাই যারা হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তারা নিয়মিত কমলা খান বেশ উপকার পাবেন। * তাছাড়া পটাশিয়াম দেহের ইলেকট্রো লাইট ভারসাম্য বজায় রাখে এবং কার্ডিওভাস্কুলার পদ্ধতি ভালো রাখে। * কমলাতে উপস্থিত লিমিয়েড উপাদান মুখ, ত্বক, ফুসফুস, পাকস্থলি ও স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। * কমলার ভিটামিন ‘সি’ শরীরের এনজাইনগুলোকে সক্রিয় রাখে। এবং দেহের স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে। * আমাদের শরীরে অস্থায়ী অক্সিজেন অনুগুলো ফ্রি র‌্যাডিকেল হিসাবে রক্তে ভেসে বেড়ায় যা অক্সিডেশন প্রক্রিয়ায় ত্বক ও শরীরকে ধীরে ধীরে বার্ধক্য দিকে নিয়ে যায়, এবং রক্তনালী সরু হয়ে হাটঅ্যাটাক বা স্ট্রোক হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মো. জহিরুল আলম শাহীন
শিক্ষক ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কলাম লেখক
ফুলসাইন্দ দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ গোলাপগঞ্জ, সিলেট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন