Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ডোমার জৈব কৃষিতে জৈব সার

| প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ময়নুল হক, ডোমার (নীলফামারী) রামনিবাস আগরওয়ালা ১৯৯৫ সালে বিভিন্ন জৈব বর্জ্য যেমন গোবর, কচুরীপানা, খড়, হাড়চ‚র্ন্য, শিঁং চ‚র্ন্য, কাঠের গুড়া, হাঁস-মুরগীর বিষ্ঠা, চিনি কলের বর্জ্য ইত্যাদি পচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উন্নতমানের পরিবেশ বান্ধব জৈব সার উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করেন এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে এর উপকারিতা যাচাই করত প্রদর্শনী স্থাপন করেন। তিনি প্রথম ১৯৯৮-১৯৯৯ সালে টঝঅওউ ঝঁঢ়ঢ়ড়ৎঃবফ চৎড়লবপঃ অঞউচ- ওঋউঈ এর খঙএঙ ব্যবহার করার অনুমতি পেয়ে বানিজ্যিক ভাবে সীমিত পরিসরে বাজারজাত শুরু করেন । এর পরবর্তীতে ব্যবহার চাহিদা বেশি হওয়ায় ‘সার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ১৯৯৯’ প্রণীত হলে জৈব সার বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও বাজারজাত করণের জন্য বাংলাদেশে প্রথম গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি অনুমোদন লাভ করেন। ২০০৩-২০০৪ সালে তার উদ্ভাবিত জৈব সার লালমনির হাট অঞ্চলে ভ‚ট্টা চাষাবাদ সম্প্রসারণে ব্যবহার করা হয় এবং কৃষকরা এর উপকারিতা বুঝতে পারে। ২০০৫ সালে সুইজারল্যান্ড সরকারের রাষ্ট্রদূত ড. ডোরা রেপল্ড অন্নপূর্ণা জৈব সার উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিদর্শন করে প্রশংসা করেন তিনি বাংলাদেশে প্রথম ২০০৬ সালে ‘সার (ব্যবস্থাপনা) আইন ২০০৬’ প্রণীত হলে এর আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খামারবাড়ী এর নিবন্ধন লাভ করেন । ২০০৮ সালে রাসায়নিক সারের উচ্চমূল্য ও ঘাটতির সময়ে অত্র অঞ্চলে জৈব সার সরবরাহের মাধ্যমে কৃষকদের বিকল্প পন্থায় চাষাবাদের সুযোগের চেষ্ঠা করেন, যার ফলশ্রæতিতে তৎকালীন তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক কৃষি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. সি.এস করিম উক্ত অন্নপূর্ণা জৈব সার উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিদর্শনে আসেন এবং এর সম্প্রসারণের কথা বলেন ।
২০১৬ সাল পর্যন্ত রংপুর অঞ্চলের প্রায় ৩০টি উপজেলার কৃষকদের মাঝে ৬০০ এর বেশি স্থানে জৈবসারের ব্যবহার বৃদ্ধি কল্পে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক নাটিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। এ অঞ্চলে জৈব সারের ব্যবহার পূর্ব তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। বিগত ২০১০-২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩০০ প্রান্তিক চাষিকে কেঁচোসার তৈরির উপকরণ সরবরাহ এবং তাদের উৎপাদিত কেঁচো সার বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। তার উদ্ভাবিত জৈব সারে গাছের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সবগুলো উপাদান বিদ্যমান। রাসায়নিক বিশ্লেষণে প্রাপ্ত মুখ্য, গৌণ উপাদান ও জৈব পদার্থের মূল্য বিদেশ থেকে আমদানিকৃত রাসায়নিক সারের বাজার মূল্যের তুলনায় অনেক কম। এক্ষেত্রে ১০০ কেজি জৈব সারের প্রাপ্ত গুণাগুণের আনুমানিক মূল্য দাড়ায় প্রায় ২১৮৫/- টাকা অথচ কৃষক পর্যায়ে এই জৈব সার সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ৯০০/- টাকায়। ১৯৯৭ইং সাল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর তিন জন মহা-পরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণের এক জন মহা-পরিচালক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়- ময়মনসিংহ এর বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকবৃন্দ, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, এনজিও, বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অন্নপূর্ণা জৈব সারের উৎপাদন প্রক্রিয়া পরিদর্শনে এসেছেন এবং প্রশংসা করেন। রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলার কৃষক সহ সরকারি-বেসরকারি অনেক কৃষি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান যেমন, বারি, বিএডিসি, ব্র্যাক, ফেরদৌস বায়োটেক, স্বরূপ এগ্রিকালচার, কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের আইএপিপি প্রজেক্ট এ সার ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদনে আশানুরূপ ফল পাচ্ছে এবং এর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডোমার

২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ