Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিক্ষার আলো বঞ্চিত সুন্দরগঞ্জের বেদে পল্লীর শিশুরা

| প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা : জীবন জীবিকার তাগিদে পরিবার-পরিজন নিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়ানোর কারণে বেদে পরিবারের শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পূর্বপুরুষের পেশা সামাজিক অবজ্ঞা ও অশিক্ষিত অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে বংশ পরম্পরায় তারা অশিক্ষিতই থেকে যাচ্ছে। পেশার কারণে কোথাও স্থায়ীভাবে জীবনযাপন না করায় পরিবারের সঙ্গেই কাটে তাদের শিশুদের জীবন। তাই কোনো বিদ্যালয়েই চোখে পড়ে না বেদে শিশুদের। শিক্ষাগ্রহণের মতো মৌলিক অধিকার থেকে বরাবরই বঞ্চিত থাকে তারা। একজন কোমলমতি শিশুর যখন খেলা করার কথা, থাকার কথা হাতে বই-কলম ঠিক তখনই বেদে শিশুদের হাতে তুলে দেয়া হয় সাপের ডালা। নিজের জীবন-জীবিকার কৌশল শিক্ষা দেয়া হয় শিশু বয়সেই। রোদ, বৃষ্টি, ঝড়, তুফান, শীত উপেক্ষা করে ছেঁড়া-ফাটা কাপড় ও পলিথিন দিয়ে তৈরি ছোট ছোট খুপড়ির মধ্যে কাটে এদের জীবন। দুর্বিষহ জীবনযাত্রায় শিক্ষার আলো পৌঁছতে পারে না বেদে শিশুদের কাছে। গত বৃহস্পতিবার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মাঠে অবস্থিত একদল বেদের আস্তানায় কথা হয় তাদের সাথে। বেদে আবুল কাশেম জানান, তাদের স্থায়ী ঠিকানা ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জে। এটা নামমাত্র স্থায়ী ঠিকানা। কারণ সারা বছরেই ঘুরে বেড়াতে হয় দেশের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। এজন্য তাদের শিশুরা লেখাপড়া করার কোনো সুযোগ পায় না। বেদে আজিজ জানান, আমাদের অস্থায়ী খুপড়ি পাহারা দেয়ার জন্য শিশুদের সাথেই রাখি। কারণ আমরা সারাদিন গ্রাম-গঞ্জে, পাড়া-পাড়ায় ঘুরে ওষুধ বিক্রি করি। আমরা শুধু ব্যথার জন্য গাছ-গাছরার মলম ও চুঙ্গি লাগাই। এছাড়া তাবিজ-কবজ বিক্রি করি। তাই শিশুদের স্কুলে ভর্তি করে দিয়ে লাভ কি? তিনি আরো বলেন, যেমন এখানে থাকব এক থেকে দেড় মাস। আমাদের ব্যবসা ভালো না হলেই ২/১ সপ্তাহেই স্থান পরিবর্তন করি। তাছাড়া দারিদ্র্যের কারণে আমাদের শিশুদের লেখাপড়া করা সম্ভব হয় না। বেদেনী মল্লিকা বলেন, কোনো অভিভাবক চায় না তার সন্তান অশিক্ষিত থাকুক। কিন্তু আমাদের যে আয় হয় তাতে সন্তানদের লেখাপড়া চালানো কঠিন। বেদে আশরাফুল বলেন, আমাদের বেদে বংশীয় যারা স্থায়ীভাবে বসবাস করছে তাদের শিশুরা লেখাপড়া করছে। তিনি আরো জানান, আমরা এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত ঘুরছি। তারপরও আমাদের কিছু কিছু সন্তান লেখাপড়া করছে। সেটা সংখ্যয় খুব কম। তিনি আরো বলেন, আমাদের জন্য ভ্রাম্যমাণ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করলে আমাদের শিশুরা লেখাপড়া শিখতে পারত। কিন্তু এব্যবস্থা করবে কে? তাই বেদে শিশুদের স্বাক্ষর জ্ঞান দান করতে ভ্রাম্যমাণ শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ