Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

তুষ্টি

| প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মেহেরুন নেছা রুমা : অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি সময়ের সকালবেলায় প্রকৃতিতে সোনালী চিকন রোদের সাথে কুয়াশাও খানিকটা মাখামাখি করে বিরাজ করে। স্নানের পর শুদ্ধ শীতল অনুভ‚ত হলেও শাড়িটা ইস্ত্রি করতে করতে প্রায় ঘেমে ওঠে সিঁথি। নাহ্, কয়েকটা সালোয়ার কামিজ না করলেই নয়। এভাবে রোজ শাড়ি সামলানো কঠিন। কতজনেই তো এখন দিব্বি সালোয়ার কামিজ পরে স্কুল করছে, আমিই কেন পারছি না। সেদিন নীরা আপাও ধরেছেন। আমাকেও বললেন, সিঁথি এবার তুমিও শুরু করো, শাড়ি সামলানো বহুৎ ঝামেলা। নীরা আপার কথা শুনে সিঁথিও অনেকদিন থেকে ভাবছিল সালোয়ার কামিজ পরা শুরু করবে। কিন্তু নিজের কাছেই কেমন কেমন ঠেকে।
চাকরির বয়স ছয় বছর হল। শুরু থেকেই শাড়ির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে সে। শিক্ষকতার পেশাটি কেন জানি সালোয়ার কামিজের সাথে যায় না। যারা সালোয়ার কামিজ পরে আসে তাদের সাথে উপরের ক্লাসের মেয়েদের সাথে প্রায়ই গুলিয়ে ফেলে সে। কে শিক্ষক আর কে ছাত্রী দূর থেকে বোঝা যায় না। কিন্তু রোজ রোজ শাড়িতে মাড় দেয়া, ইস্ত্রি করা, গুছিয়ে রাখা, ডজনখানেক সেফটিপিন এঁটে দিয়ে শাড়ির কাঠামো ঠিক রাখা রিতিমত এক যুদ্ধ। শাড়ি পরাটা তার কাছে একটা শিল্প। এতে এত নান্দনিকতা আর নৈপুণ্য ফুটে ওঠে যে অন্য কোন পোশাকেই তা ফোটে না।
ইদানীং রোজই ভাবে শীঘ্রই ক’টা সালোয়ার কামিজ বানাবে। কিন্তু কোন মাসেই বাজেটের সাথে কুলিয়ে উঠতে পারে না।
শাড়ি ইস্ত্রি করা হয়ে গেলে নিজের এবং মারুফের খাবারবক্সে খাবার সাজায়। দরজার বেল বেজে উঠলে রান্নাঘরে ছোটে ওড়নাটার জন্য। সেখানে না পেয়ে বেডরুমে আসে। বিছানার উপর থেকে ওড়নাটা তুলে গায়ে জড়িয়ে নিয়ে দরজা খুলে দেয়।
তুলতুলকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসছে মারুফ। ঘরে কাজ করার সময় ওড়নাটা প্রায়ই খুলে রাখে সে। কখনো চেয়ারের উপর, কখনো বিছানার পাশে, কখনো রান্নাঘরের চালের ড্রামের উপর। কেউ কলিংবেল বাজালে তখনই ওড়নার খোঁজ পরে। প্রায়ই মারুফকে দরজা খুলে দেয়ার সময়ে সামনের বাসার হিমেলের বাবার সাথে মুখোমুখি হয়ে যেতে হয়। একদিন তো ওড়না না নিয়েই দরজা খুলেছিল আর সামনে হিমেলের বাবাকে দেখতে পেয়ে ঠাস করে দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছিল। কী লজ্জাটাই পেয়েছিল সেদিন! সিঁথিরই এমন লজ্জা। কই, মারুফের সাথে হেনা ভাবি কতদিন ওড়না ছাড়া দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করেছে। কখনও তো কোন জড়তা দেখেনি তার মধ্যে?
হেনা ভাবি দরজার কাছে সিঁথিকে দেখলেই আগ বাড়িয়ে কথা বলতে আসে।
‘জানেন, ভাবি, গতকাল কী হইছে? রোজ তো গোয়ালা দুধের মধ্যে পানি দেয়, কিন্তু স্বীকার করে না। গতকাল দেখি দুধ এক্কেবারে পাতলা।’
স্কুলের জন্য তৈরি হতে হবে সিঁথিকে। গল্প শোনার সময় কই? তবু মনের ভাবটা প্রকাশ করতে কেমন দ্বিধা লাগে তার। হুট করেই কারো মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিতে পারে না। কথার জবাব না দেয়াটা কেমন অভদ্রতা মনে হয়। সকাল বেলাটা তার দম ফেলারও ফুরসত হয় না। তাই ভদ্রতার খাতিরে মিনিটদুয়েক হেনা ভাবির কথা শোনে, তারপর হাসি হাসি মুখ করে বলে, ‘ভাবি, বিকেলে কথা হবে এখন রেডি হচ্ছি।’
হেনা ভাবি বেশিরভাগ সময় হিমেলকে এই দরজার কাছে দাঁড়িয়েই খাওয়ায়। হাতে তার ডিম সেদ্ধ, কখনও কলা, কখনও নুডলস্। ‘দেখেন না, ভাবি, কী দুষ্টু। ঘরে বসে একদমই খেতে চায় না। ওর সাথে আর পেরে উঠি না, ভাবি। জানেন আজ কী করেছে? ঘুম পাড়িয়ে রেখে আমি গেলাম রান্নাঘরে। ভাবলাম হাতের কাজগুলো...।’
অনেক জড়োতার সাথে দরজাটা আস্তে করে ভেজিয়ে দিতে দিতে সিঁথি বলে, ‘স্কুল থেকে এসে বিকেলে গল্প করব, এখন দেরি হয়ে যাচ্ছে, ভাবি।’
বিকেলেও বের হতে গিয়ে তার সামনে পড়ে যায় সিঁথি। সিঁথিকে দেখলেই এগিয়ে এসে বলে, ‘জানেন, ভাবি, আজ কী হয়েছে? আপনি তো ছিলেন না। বাসায় অনেকদিনের খবরের কাগজ জমে ছিল...।’
এভাবেই গল্প শুরু করে সে। সিঁথি দরজায় তালা লাগাতে লাগাতে হু হা করে জবাব দেয়।
‘তারপর রাস্তা থেকে কাগজওয়ালাকে ডেকে আনলাম। ঘরে আরও কিছু ভাঙ্গাচোরা জিনিসপত্র ছিল। তা হয়েছে কী জানেন, ভাবি?’
সিঁথি বোকার মতো দাঁড়িয়ে হাতঘড়ি দেখে। দাঁড়ানোর মতো আর একটুও সময় নেই। কিন্তু বলতে কেমন দ্বিধা লাগে। রোজ ভাবে, হেনা ভাবি মানুষটা ভালোই। খুব মিশুক, আড্ডাপ্রিয়। বেচারি সারাদিন ঘরে থাকে। কথা বলার একটা মানুষও পায় না। তাই আমাকে দেখলেই কথা বলতে আসে। কিন্তু আমার যে সময় নেই। তাকে নিরাশ করতেও মনে কেমন খারাপ হয়।
মুখ হাসি হাসি করে অনেক সংকোচের সাথে বলে, ‘ভাবি, আমি টিউশনিটা শেষ করে আসি? রাতে এসে আপনার সাথে অনেক গল্প করব।’
এভাবেই নিরন্তর ছুটে চলে সিঁথি। কখনোই সময় হয় না রুটিনের বাইরে কিছু করার। সকাল থেকে বিকাল স্কুল, স্কুল ছুটির পর বাসায় এসে আবার টিউশনি। ফেরার পথে মা’র বাসা থেকে তুলতুলকে নেয়া। সন্ধ্যার পর মারুফ এলে স্বামী-সন্তানকে সময় দেয়ার ফাঁকে ফাঁকে পরের দিনের জন্য কিছু কিছু কাজ গুছিয়ে রাখা। এসবের মধ্যে আবার পরীক্ষার খাতা থাকলে সেগুলো দেখা।
গোসলের পর মেক্সি গায়ে শরীরে লোশন ক্রিম মাখতে গিয়ে খেয়াল হলো ক্রিমের কৌটাটা খালি হয়ে গেছে। দিনে মাত্র দুইবার ব্যবহার করে, তবু মাস ফুরাবার আগেই ক্রিম ফুরিয়ে যায়। নারকেল তেলের বোতলটাতেও আঙুল পরিমাণ তেল আছে। প্রসাধনের মধ্যে এইটুকুই। ঠোঁটে কখনও লিপস্টিক দেয় না। কখনও ছুটির দিনে মারুফের সাথে কোথাও বের হলে চোখে সামান্য কাজল পরে। এই তার সাজ।
তেলের বোতলের দিকে তাকিয়ে মা খারাপ হয়ে যায়। বোতলের উপরে একটি মেয়ের ছবি। মেয়েটির দীর্ঘ ঘন চুল কোমর ছাড়িয়ে নিচে নেমে গেছে। একসময় তার মাথায়ও চুল ছিল। খোপা করলে খোপাটা মাথা ছাড়িয়ে যেত। বছরতিনেক হল চুলটা ছেঁটে ছোট করে ফেলেছে। কী করবে, শ্যাম্পু কিনে কুলানো যায় না, তেল ফুরিয়ে যায়। শেষে খরচ বাঁচাতে চুল অর্ধেক করে ফেলল। খরচও অর্ধেক বাঁচল।
মারুফ সেদিন খুব আফসোস করেছিল। কষ্টও পেয়েছিল মারাত্মক। বিয়ের পর প্রথম প্রথম সিঁথির চুল দেখে সকলের সে কী প্রশংসা! সবাই বলত, ‘দেখেছিস নতুন বউয়ের চুল? কী লম্বা আর ঘন। এখনকার মেয়েদের মাথায় তো চুলই থাকে না। তার উপর কত রকম কারসাজি করে বাঁকা চুল সোজা, সোজাটা বাঁকা, কারো চুলের রংই কালো থাকে না। নানা রকম রং-এ ঢং-এ মাথাটা যেন হয়ে ওঠে কোন এক আনাড়ি চিত্রকরের ক্যানভাস।’
এসব প্রশংসায় মনে মনে উচ্ছসিত হত মারুফ। তার বউকে সবাই পছন্দ করে। এমন রূপ তাদের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে আর কারো বউয়ের নেই। এমনকি বন্ধু মহলেও নেই। শুধু যে দেখতে সুন্দর তাই না। শিক্ষা, স্বভাব, আচরণ, বুদ্ধি বিবেচনায়, কর্মে নৈপুণ্যে সিঁথির মত মেয়ে খুঁজে পাওয়া ভার।
সেদিন সিঁথির ছেঁটে ফেলা চুল দেখে বিমর্ষ হয়ে পড়েছিল মারুফ। সিঁথি বলেছিল, রোজ রোজ ভেজা চুল বেঁধে স্কুলে যেতে হয়, সময়ের অভাবে যতœ নিতে পারি না তাই কেটে ফেলেছি। কিন্তু মারুফ জানত তার বউটি কেন তার অতি প্রিয় চুলগুলো ছেঁটে ফেলেছে। নিজেকে তখন পুরোপুরি একজন ব্যর্থ স্বামী বলে মনে হয় তার।
মারুফের এই মনোকষ্ট বুঝতে পেরে দুই হাতে গলাটা জড়িয়ে ধরে হাসি হাসি মুখ করে বলেছিল, ‘এখন তো ছোট চুলেরই ফ্যাশন, দেখো না সবাই কত রকমের কাট দেয়। আমার কি ইচ্ছে করে না বুঝি সেরকম? আমাকে ছোট চুলে কত স্মার্ট লাগে, স্কুলের আপারা সবাই বলে জানো?’
মারুফ জানে এ সবই তাকে ভোলানোর জন্য বলে সিঁথি। বড় মায়া হয় তখন। বউয়ের মুখটা মুখের কাছে এনে আদর করে।
চেষ্টা কি সেও কম করেছে? কত্ত ভালো রেজাল্ট নিয়ে পাস করল। কিন্তু সেরকম ভাল একটা চাকরি হল না। কোম্পানির চাকরি, মজুরির চাইতে শ্রম বেশি। ছুটিছাটাও নেই বললেই চলে। দিনরাত দুজনে সমানে খেটে চলে, তবু সংসারে সচ্ছলতা আসে না। দিনে দিনে জীবনযাপনের ব্যয় যেন পাগলা ঘোড়ার মতো লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে। কত ভাবে, একটা ভাল চাকরি পেলে সিঁথিকে একটু বিশ্রাম দিবে। বউটার এত খাটুনি আর সহ্য হয় না। ওর মতো মেয়ের রাজরাণী হয়ে থাকাটাই যেন মানায়।
প্যান্ট-শার্ট পরে নিয়ে মারুফ দেয়ালে ঝোলানো বেতের আয়নাটার সামনে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে চুল ঠিক করে নেয়।
শাড়ির কুচি কোমরে গুঁজতে গুঁজতে সিঁথি বলে, ‘রোজই আমার শাড়ি পরার সময় তুমি আয়নাটা দখল করে রাখো। একটু সরে দাঁড়াও না।’
মারুফ একটু পাশে সরে এসে বলে, ‘অনেকদিন থেকে ভাবছি একটা ছোট্ট ড্রেসিং টেবিল কিনব তোমার জন্য। আর তার আয়নাটা থাকবে একেবারে পা পর্যন্ত। যাতে শাড়ি পড়ার সময়ে পায়ের কাছটাও দেখতে পার।’
সিঁথি মিষ্টি করে হেসে বলে, ‘তুমি আমার দিকে তাকাও। তোমার চোখের তারায় আমি আমাকে দেখি। ওটাই আমার ড্রেসিং টেবিল।’
বউকে বুকে টেনে নিয়ে ধরে রাখে মারুফ। বলে, ‘এই ঘরে তুমি একটা ঐশ^র্য। ঘরটা তোমার উপযুক্ত নয়। এমন রূপ তোমার, অথচ দেখার মতো একটা ভাল আয়নাও নেই। আমার এ ছোট্ট ঘর তোমার রূপ ধারণ করতে পারছে না গো, যেন রোজ উপচে পরছে তোমার দীপ্তি। এই দৈন্য কি তোমাকে মানায়? তোমার দিকে তাকালেই নিজেকে অপরাধী মনে হয়।’
‘হয়েছে, আর অপরাধী ভাবতে হবে না। এখন শাড়ির কুচিটা একটু ধরো তো?’
কুচি ঠিক করা হলে পিঠের দিকটা মারুফের দিকে ধরে একটা সেফটিপিন এগিয়ে দেয় সিঁথি। মারুফ শাড়ির আঁচলটা পেছনের দিকে নিয়ে সেফটিপিন এঁটে দেয়। তারপর মাথা নুইয়ে এনে আস্তে করে সিঁথির ঘাড়ের কাছে একটা চুমু খায়।
মারুফের শার্টের ইন কোমরের কাছে ঠিক করে দিতে দিতে সিঁথি বলে, ‘আজ ফেরার পথে একটু নিউ মার্কেট যাব। দুই একটা সালোয়ার কামিজ কিনব।’
দরজার কাছে এসে ঘরের ভেতরটা আরো একবার পরখ করে নেয় দু জনে। মারুফ খাবারের বাটিগুলো ব্যাগে ভরে নিয়ে জুতা পরে নেয়। ফিতে বাঁধতে গিয়ে দেখে জুতার তলাটা ফেটে গেছে। সেদিকে তাকিয়ে থাকে সিঁথি।
দুই
নিউ মার্কেটের গেইটের কাছে বেজায় ভিড়। অনেক বিক্রেতা বাচ্চাদের খেলনা এবং অন্যান্য টুকিটাকি নিয়ে রাস্তার পাশেই বসে পড়েছে। একটা ম্যাজিক বল হাতে নিয়ে দোকানিকে দাম জিজ্ঞাসা করে সিঁথি। দাম শুনেই আস্তে করে বলটা রেখে দেয়। মোড়ের বইয়ের দোকানগুলোর সামনে দাঁড়ায়। পৃষ্ঠা উলটে দাম দেখে দেখে রেখে দেয়।
কেনাকাটা শেষে রিকশাভাড়ার অতিরিক্ত আর কিছু হাতে না থাকায় বই আর কেনা হয় না। ভাবে, পরের মাসে এসে ক’টা বই কিনব। ঘরের সবগুলো বইই তার পড়া। রিকশায় উঠে তবু মনে এক ধরনের আনন্দ অনুভব করে।
ফেরার পথে মায়ের বাসা থেকে তুলতুলকে তুলে নেয়।
বাসায় পৌঁছে মারুফের জন্য অপেক্ষা করে সিঁথি। বিকেলে টিউশনিতে যায়নি আজ।
সন্ধ্যা নেমে এলে মারুফ দরজায় বেল দেয়। এক ধরনের আনন্দ নিয়ে দরজা খোলে সিঁথি। মারুফের কাঁধ থেকে ব্যাগটি নিয়ে জায়গামত রাখে। বলে, ‘ফ্রেশ হয়ে এসো, চা দিচ্ছি।’
চায়ের সাথে টোস্ট ভিজিয়ে খায় মারুফ। সিঁথির মনের ভেতর সূক্ষè আনন্দের রেণু। চা শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারে না।
বাক্সটা এনে মারুফের হাতে দিয়ে বলে, ‘দেখো তো পছন্দ হয় কিনা?’
বাক্সটা খুলেই রাজ্যের বিস্ময় নিয়ে বউয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে মারুফ। মুখের কথা যায় বন্ধ হয়ে।
‘আরে দেখোই না জুতাটা। কেমন নতুন ডিজাইন। তোমার পছন্দ হয়নি?’
‘আগে বল তোমার সালোয়ার কামিজ কিনেছো?’
যেন কথাটা শুনতেই পায়নি সিঁথি। বলে, ‘এত বছরেও তোমার পায়ের মাপ একটুও বদলায়নি। আমি ঠিক আন্দাজ করে জুতাটা নিয়ে এলাম। এবার পায়ে দিয়ে একটু হাঁটো তো?’
বউয়ের জেদের কাছে হার মানে মারুফ। দুই পায়ে পরে নেয় নতুন জুতা। নতুন জুতার গন্ধে আর বউয়ের ভালোবাসায় মনের আবেগ গলে চোখ ভিজে ওঠে।
সিঁথির মুখে জ্বলজ্বলে খুশির ঝিলিক দেখে নিজের দিকে টেনে এনে মারুফ বলে, ‘এভাবে আর কত দিক সামলাবে তুমি? আমি যে কীভাবে আর দু’পয়সা রোজগার বাড়াবো দিনরাত চিন্তুা করেও পাই না। এদিকে তোমাকে এত কষ্ট দিতেও আমার বুক ফেটে যায়।’
তারপর সিঁথির মুখ উঁচু করে ধরে বলে, ‘তোমার সালোয়ার কামিজ কই?’
ভুরু কুঁচকে সিঁথি বলে, ‘আরে আমি কি ওসব পরে স্কুলে যেতাম নাকি? শাড়িই আমার জন্য ঠিক আছে।’ বলে মনে মনে ভাবে, সামনের মাসে তৈরি করে নিবে দুটো সালোয়ার কামিজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন