Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

উন্মুক্ত হবে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়ক খুলে যাবে পর্যটনের অবারিত দুয়ার

৬ মে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শামসুল হক শারেক, কক্সাবজার অফিস : কক্সবাজার শহরের কলাতলী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সড়ক উদ্বোধনের মাধ্যমে উন্মুক্ত হবে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়ক। এতে খুলে যাবে অপার সম্ভাবনার পর্যটনের অবারিত দুয়ার।
আর মেরিন ড্রাইভ সড়ক উন্মুক্তকরণের মাধ্যমে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে সীমান্তবর্তী টেকনাফ উপজেলার সাবরাংয়ে প্রস্তাবিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ। এ লক্ষ্যে শেষ মুহূর্তে এর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন  সেনাবাহিনীর প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়ন ১৬ ইসিবি। কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সরকারের সময়ে কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কটির ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প গৃহীত হয়। তখন প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০৩  কোটি ২১ লাখ টাকা। ওই সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগ কক্সবাজার কলাতলী পয়েন্ট থেকে সড়ক নির্মাণকাজ শুরু করে। সওজ বিভাগের ঠিকাদার কর্তৃক নির্মিত কলাতলী মোড় থেকে পাইওনিয়ার হ্যাচারি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক সাগরের প্রবল ঢেউয়ের ধাক্কা সামলাতে না পেরে সাগরে বিলীন হয়ে যায়।
পরবর্তীতে মেরিন ড্রাইভ সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়  সেনাবাহিনীর প্রকৗশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নকে। বর্তমানে সড়কটি ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য থেকে বেড়ে ৮০ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে নব উদ্যমে কাজ শুরু করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। কাজের গুণগতমান বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগের সদস্যরা মূল সড়ককে তিন ধাপে ভাগ করে প্রথম ধাপে কলাতলী থেকে ইনানী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ইনানী থেকে শিলখালী পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার ও তৃতীয় ধাপে শীলখালী থেকে টেকনাফের সাবরাং পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণকাজ জুন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।
সওজ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৪৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দে নির্মাণাধীন মেরিন ড্রাইভ সড়কের দুই পাশে থাকবে ওয়াকওয়ে, পর্যটকদের সুবিধার্থে থাকবে সড়কজুড়ে ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট,  শেড, বিভিন্ন স্থানে গাড়ি পার্কিং ও মহিলা পর্যটকদের চেঞ্জিং রুম। ৮০ কিলোমিটার সড়কজুড়ে তিনটি বড় আরসিসি সেতু, ৪২টি কালভার্ট, ৩ হাজার মিটার সসার ড্রেন ও ৫০ হাজার মিটার সিসি বøক ও জিও টেক্সটাইল থাকবে। কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া জানান, মূল প্রকল্পের কাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি বলেন ‘কক্সবাজারবাসীর স্বপ্নের  মেরিন ড্রাইভ সড়কটি প্রথমে জেলা শহর থেকে উখিয়া উপজেলার ইনানী পর্যন্ত নির্মাণ করার পরিকল্পনা ছিল। আমি নবম জাতীয় সংসদে প্রস্তাব দিই, সড়কটি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য। এর পরিপেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনার আন্তরিক ইচ্ছায় এটি সম্প্রসারণের উদ্যোগ  নেয়া হয়। এখন সড়কটি শুধু কক্সবাজার বা গোটা দেশের নয়, বরং বিশ্বের অন্যতম দর্শনীয় ও নান্দনিক একটি সড়কে পরিণত হয়েছে। সড়কটি উখিয়া-টেকনাফের মানুষের জীবনযাত্রার মান বদলে দেবে। পিছিয়ে থাকা এই জনপদ সমৃদ্ধ হবে অর্থনৈতিকভাবে। পুরো দেশের পর্যটনের বিকাশের ক্ষেত্রে এই সড়ক নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।’
আশা করা হচ্ছে এই মেরিন ড্রাইভ সড়কটি উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৬ মে কক্সবাজার সফর করছেন। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মেয়াদকালে ৫মবারের মতো কক্সাবজার আসছেন বলেও জানা গেছে।



 

Show all comments
  • Laboni ২৫ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৩৪ পিএম says : 0
    Thanks to everybody for this road
    Total Reply(0) Reply
  • md. mahbubul haque ১ মে, ২০১৭, ১২:০৫ এএম says : 0
    “উন্মুক্ত হবে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়ক খুলে যাবে পর্যটনের অবারিত দুয়ার” শিরোনামের প্রকাশিত খবরটি অধিকতর চমৎকার। অনেক চড়াই-উৎড়াই অতিক্রম করে অবশেষে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ বাস্তবে রূপ নিয়েছে, যা আগামী ৬ই মে আমাদের প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। অসাধারণ! তবে এই মেরিন ড্রাইভের পাশাপাশি এখন দরকার প্রস্তাবিত কক্সবাজার রেলস্টেশন থেকে কলাতলী হয়ে টেকনাফ থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত মিটারগেজ ও ব্রডগেজ রেললাইনের সমন্বয়ে ডুয়েলগেজ রেললাইন। তবে কোন অবস্থাতেই স্ট্যার্ন্ডগেজ রেললাইন তৈরি/নির্মাণ করা যাবে না। কারণ, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী-ফরিদপুর-ভাঙ্গা-ভাটিয়াপাড়া, খুলনা, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চিলাহাটি, পঞ্চগড়-দিনাজপুর ইত্যাদি গুরুত্বপুর্ণ অঞ্চলে ব্রডগেজ রেললাইন চালু থাকার কারণে যমুনা নদীর পূর্বাঞ্চলে যেমন- দেওয়ানগঞ্জ-বাহাদুরাবাদ, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে মিটারগেজ রেললাইন চালু থাকার কারণে (ব্রডগেজ রেললাইন না থাকায়) বর্তমান সময় পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী-ফরিদপুর-ভাঙ্গা-ভাটিয়াপাড়া, খুলনা, রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চিলাহাটি, পঞ্চগড়-দিনাজপুর ইত্যাদি গুরুত্বপুর্ণ অঞ্চলের ব্রডগেজের দ্রুতগামী অধিক যাত্রী বহনকারী ও নিরাপদ ট্রেনসমূহ (মালগাড়িসহ) যমুনা নদীর ঐ পারে অর্থাৎ পূর্বাঞ্চলে (দেওয়ানগঞ্জ-বাহাদুরাবাদ, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, সিলেট, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম) চলাচল করতে পারছেনা। এতে জনগণের জান, মাল, সময় ও মানসিক প্রশান্তি উভয়ই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, সরকারও বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। যেহেতু টঙ্গি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় সরকার বাহাদুর ডুয়েল গেজ রেললাইন তৈরি করতে যাচ্ছেন। সেজন্য নতুন করে আর ঢাকা-কুমিল্লা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত স্বল্প যাত্রী/বগি বহনকারী ট্রেন চলাচলের জন্য স্ট্যান্ডার্ড গেজ রেললাইন তৈরি করার প্রয়োজন নেই (ইউটিউবে সার্চ দিলেই প্রমাণ পাওয়া যায়) সেইখানে অধিকযাত্রী/বগি বহনকারী দ্রুতগামী ট্রেন চলাচলের জন্য ব্রডগেজ রেললাইন তৈরি করা হোক। ইউটিউবে ইন্ডিয়ান ট্রেন লিখে সার্চ দিলেই দেখা যায় রাজধানী এক্সপ্রেস, ভূপাল শতাব্দী এক্সপ্রেস, গতিমান এক্সপ্রেসের মতোন ইলেকট্রিক ইঞ্জিনযুক্ত ২৪-২৬ টি বগির অনেক ট্রেন ঘন্টায় ১৬০-১৭০ কিঃমিঃ- এর অধিক বেগে চলাচল করছে। এছাড়াও বাংলাদেশে যে ভারতীয়/ইন্ডিয়ান ইঞ্জিন রয়েছে, এই একই শক্তির ইঞ্জিন দিয়েও (ভারত/ইন্ডিয়ায়) ঘন্টায় ১৩০ কিঃমিঃ এর অধিক বেগে ২৪-২৬ টি বগি বিশিষ্ট ট্রেন নিয়ে চলাচল করছে। তাহলে আমাদের জনসংখ্যাবহুল, শতশত অবৈধ/বৈধ রেলক্রসিং যুক্ত ও ঘনঘন (স্বল্প দূরত্ব) রেলস্টেশন বিশিষ্ট দেশে ঘন্টায় ১৬০-১৭০ কিঃমিঃ বেগে চলাচলের মতোন ট্রেন/রেললাইন তৈরি করা কি সঠিক ও যুক্তিযুক্ত পদক্ষেপ নয়? মাঝে মাঝে পত্রিকা, টেলিভিশনের খবরে এই লেভেল ক্রসিংয়ে যানবাহনের সাথে ট্রেনের প্রায় সংঘর্ষ ও প্রাণনাশের খবর পাওয়া যায়। তাহলে ঢাকা-কুমিল্লা-চট্টগ্রামে ওভারহেড বৈদ্যুতিক ক্যাবলযুক্ত স্বল্প যাত্রী/বগি বহনকারী নতুন মাপের স্ট্যান্ডার্ড গেজ রেললাইন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা/চুক্তি কেন? যদি দ্রুতগামী ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা/ইচ্ছা থাকে, তাহলে ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত কর্ড লাইন হিসেবে ও নতুন অঞ্চলে রেললাইন চালু করার বাসনায় শুধু ওভারহেড বৈদ্যুতিক ক্যাবলযুক্ত ব্রডগেজ রেললাইন তৈরিকরণ ও কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ওভারহেড বৈদ্যুতিক ক্যাবলযুক্ত ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তরকরণ এবং চট্টগ্রাম থেকে প্রস্তাবিত কক্সবাজার রেলস্টেশন হয়ে কলাতলী-টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ওভারহেড বৈদ্যুতিক ক্যাবলযুক্ত ডুয়েলগেজ (শুধু ব্রডগেজ ইলেকট্রিক ইঞ্জিন/ট্রেন চলাচলের জন্য) অথবা শুধু ওভারহেড বৈদ্যুতিক ক্যাবলযুক্ত ব্রডগেজ রেললাইন তৈরি করে ঘন্টায় ১৬০-১৭০ কিঃমিঃ- পর্যন্ত বা এর অধিক গতিবেগ বিশিষ্ট ব্রডগেজ ইলেকট্রিক ইঞ্জিনযুক্ত ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক (যেহেতু, টঙ্গি থেকে আখাউড়া-কুমিল্লা-কক্সবাজার পর্যন্ত ডুয়েলগেজ রেললাইন তৈরি করা হবে)। এমনকি আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তর করা হোক যাতে ঘন্টায় ১৩০ কিঃমিঃ গতিবেগের ব্রডগেজের ডিজেল ইঞ্জিনযুক্ত ট্রেন চলাচল করতে পারে। প্রয়োজনে (অবশ্যই) অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যমান মিটারগেজ রেললাইনকে তুলে দিয়ে সেখানে ব্রডগেজ রেললাইন তৈরি করে টেকনাফ-তেঁতুলিয়া তথা সমগ্র (৬৪ টি) জেলায় একই রেল লাইন তৈরিকরণ অর্থাৎ ধীরগতি সম্পন্ন, দূর্ঘটনাপ্রবণ, কম যাত্রী ও বগি বহনকারী এবং ভ্রমণ ও মানসিক কষ্টদায়ক মিটারগেজ ট্রেনের পরিবর্তে, স্ট্যান্ডার্ড গেজ রেললাইনের তৈরি করার মানসিকতা বাদ দিয়ে উচ্চ গতি সম্পন্ন, প্রায় দূর্ঘটনা বিহীন, অধিকতর যাত্রী ও বগি বহনকারী এবং নিরাপদ ভ্রমণ ও মানসিক প্রশান্তিদায়ক ব্রডগেজ রেললাইন তৈরি করে ব্রডগেজ ট্রেন চালু করার জন্য এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হোক।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ