Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভারত আমাদের শত্রু বুঝতে পারাই বড় অর্জন -নূরুল কবীর

| প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রখ্যাত সাংবাদিক ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজ সম্পাদক নূরুল কবির বলেছেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরে বাংলাদেশের অর্জন নেই বলা যাবে না। বড় অর্জন হলো ভারতকে চিনতে পারা। ভারত যে আমাদের  (বাংলাদেশ) শত্রু এটার প্রমাণ হয়ে গেছে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে। বাংলাদেশের ভূ-খন্ডের মধ্য দিয়ে একরাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে ভারত দ্রব্যাদি, পণ্য নিয়ে যাচ্ছে। এতে খারাপ কিছু দেখি না; গোঁড়ামির কিছু নেই। নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা করতে চাইলে তারা মধ্যস্বত্বভোগীর মতো ব্যবসা চায় কেন? ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লির চাণক্যপুরীতে। তারা চাণক্যনীতিতে অভ্যস্ত। তাই ভারত কখনোই প্রতিবেশী দেশের বন্ধু হতে পারে না। গতকাল চ্যানেল আই-এর টকশো তৃতীয় মাত্রায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশে আওয়ামী লীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে; আর বিএনপি করছে ধর্মকেন্দ্রিক রাজনীতি। জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় টকশোর নুরুল কবিরের বক্তব্যের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।
নূরুল কবির বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর একটা দিক থেকে সফল। একটা দেশের দু’একটা রাজনৈতিক দল এবং গুটিকয়েক বুদ্ধিজীবী যেই প্রতিবেশীকে বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত করে। তারা যে আসলে বন্ধু নয়, এদেশের মানুষ এ সফরের মাধ্যমে এটা বুঝতে পেরেছে। রাষ্ট্র যেহেতু একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা, সে রাষ্ট্রকে টিকে থাকার জন্য তার যেমন শত্রæ-মিত্র চেনা দরকার। রাষ্ট্র থাকলেই ব্যবস্থা-বাণিজ্য, বিদ্যা-শিক্ষা, আয়-উন্নতি হওয়ার কথা। ফলে একটা বৃহৎ প্রতিবেশী যে বন্ধু নয়, সেটা বুঝতে পারা একটা ভীষণ রাজনৈতিক সাফল্য।
কেননা তিস্তা নদীসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি ন্যায্য হিসা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের পাওয়ার কথা তার কোনোটিই হয়নি। তিস্তা চুক্তি হয় হয় করেও শেষ পর্যন্ত হয়নি। ভারতের কিছু কিছু মিডিয়া যারা বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী তারা এবং এখানেও (বাংলাদেশে) কেউ কেউ মিনমিনিয়ে বলার চেষ্টা করেছে, যে মমতা ব্যানার্জি নাকি এটা করতে দিচ্ছে না। আমরা সবাই জানি, ভারতের সংবিধান অনুযায়ী বিদেশের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে অথবা সম্পর্ক নষ্ট করার ক্ষেত্রে অর্থাৎ তার পররাষ্ট্রবিষয়ক ব্যাপার কেন্দ্রীয় সরকারের জুরিসডিকশনই একমাত্র জুরিসডিকশন। সেখানে রাজ্যগুলোর কিছুই করার থাকে না। এখানে খুব স্পষ্ট করে বোঝা যায়, পশ্চিমবঙ্গকে  আসলে কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজনৈতিক ও কূটনৈকিতকরা একটা উপলক্ষ হিসেবে ধরে নিয়ে বাংলাদেশকে পানি থেকে বঞ্চিত করতে চায়। বছরের পর বছর যে রাষ্ট্র তার নিকটতম প্রতিবেশীকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ন্যায্য পাওনা দেয় না। তাকে বন্ধু মনে করার যুক্তিসঙ্গত কারণ বাংলাদেশের মানুষ দেখে বলে আমার মনে হয় না।
তিনি বলেন, শত্রুতার পর্যায়টা কোন পর্যায়ে আছে? যেটা প্রত্যক্ষ, একদিকে যখন দুই দেশের বন্ধুত্বের কথা হচ্ছে তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি, ভারত একের পর এক ডবিøউটিও’র এন্টি ডাম্পিং কমিশনকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। প্রথমে ব্যবহার করেছিল, ব্যাটারির ব্যাপারে, তারপরে ঝুট প্রোডাক্টের ব্যাপারে সর্বশেষ সফর শেষ হতে না হতেই হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের ব্যাপারে তারা এন্টি ডাম্পিংকে প্রিটেক্স হিসেবে ব্যবহার করে। আর এসব তারা করছে সামান্য ব্যবসার জন্য। যেখানে দুই দেশের মধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা আছে। এর মধ্যে ভারতই সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়। কোনোটা ৮ কোটি, কোনোটা একশ’ কোটি টাকার ব্যবসা, সেগুলো বাধাগ্রস্ত করার জন্য এই আইনকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করছে ভারত। ঐতিহ্যগতভাবে যেটাকে ট্যারিফ ব্যারিয়ার, নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার। অন্যদিকে ভারতের অকৃতজ্ঞতাও আছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ফরমাল ট্রেড আছে ৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার (৫৪ হাজার কোটি টাকা)। ভারতের ইনফরমাল ট্রেড ১১ বিলিয়ন ডলার পণ্যের বাজার বাংলাদেশে। ২০১৬-১৭ বাজেট ডকুম্যান্টস অনুযায়ী, অন্যান্য দেশের শ্রমিক-কর্মকর্তারা প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার বেতন হিসেবে আপন আপন দেশে পাঠায়। তার মধ্যে ৩ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা) বাংলাদেশ থেকে ভারত লাভ করে। প্রায় সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ভারত আয় করে থাকে। খদ্দের হিসেবেও বাংলাদেশ একটা বিরাট ঘটনা (সম্মান পাওয়া) ভারতের কাছে হওয়া উচিত। সাধারণত একজন ব্যক্তি প্রতিদিন যদি একজন কলা বিক্রেতার কাছ থেকে এক ডজন করে কলা কিনে, তাহলে ওই কলা বিক্রেতা সেই ক্রেতাকে দেখলে সালাম দিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। কারণ তিনি ওই বিক্রেতার একজন নিয়মিত খদ্দের। তিনি বিক্রেতার জীবন-জীবিকার সঙ্গেে জড়িত, তার অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। ভারত যেখান থেকে প্রতি বছর সাড়ে ১৪ বিলিয়ন ডলার আয় করে, তার সঙ্গে যেই ধরনের সমীহপূর্ণ ব্যবহার করা উচিত, তা তো করেই না। বরং তারা সীমান্তে বছরের পর বছর আমাদের নাগরিকদের অন্যায়ভাবে হত্যা করে চলেছে। শুধু তাই না, আমরা দেখেছি বাংলাদেশে একটা বিরাট রাজনৈতিক সঙ্কট, দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি লাভ করছে। তা তৈরি করার জন্য ভারতের একটা প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। যখন কোনো পার্টি এদেশে আওয়ামী লীগের চাপিয়ে দেয়া পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে রাজি ছিল না। তখন আমরা লক্ষ্য করেছি, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় এসে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকে জোর করে কনভিনস (রাজি) করার নামে তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় এবং রাজনৈতিক ন্যায্যতা দেবার চেষ্টা করেছে। সেই থেকে উদ্ভূত হয়েছে রাজনৈতিক সঙ্কট, সেই সঙ্কট থেকে বাংলাদেশ এখনো উত্তরণ করতে পারেনি। বরং প্রতিদিনই সঙ্কট আরও গভীরতর হচ্ছে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক দুর্বলতা আছে কিনা এমন প্রসঙ্গ আসলে নুরুল কবীর বলেন, দুর্বলতা আছে বলেই সেটাকে কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা না করে সেটাকে যে ব্যবহার করা হয়, সেটা আর যাই হোক বন্ধুত্ব হতে পারে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দুর্বলতার জন্য প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো, শাসক শ্রেণিকে দায়ী করে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর অগণতান্ত্রিক ক্ষমতার মোহ এবং আপন আপন রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতন্ত্রহীনতা এবং নিজেদের গণতান্ত্রিক মানস না গড়ে তোলাই হচ্ছে আমাদের দেশের রাজনৈতিক সমস্যা। সেটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতে হবে। আর আমার যদি কোনো বন্ধু রাষ্ট্র থেকে থাকে, তারা এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য পাশে থাকবে।
ভারতের কাছ থেকে ঋণ সহায়তা ও বিদ্যুৎ প্রদানের অঙ্গীকারের বিষয়ে তিনি বলেন, ভারত কিংবা চীন যে টাকা দিয়েছে, সে যখন টাকা বিনিয়োগ করে বলে, এই টাকা দিয়ে তোমার দেশের উন্নয়নের জন্য আমার কাছ থেকে পণ্য কিনতে হবে। তখন সে কিন্তু আমার উন্নয়নকে সহযোগিতা করার পরিবর্তে তার পুঁজির বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করে। তার দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে আসলে চাপিয়ে দেয়। তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তির আশ্বাস আমরা বহুবার পেয়েছি। সেই আশ্বাস যদি বাস্তবায়িত হয়, সেটা যেই সরকারের আমলেই হোক না কেন। আমরা সেটাকে অবশ্যই স্বাগত জানাব। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে তিনি কি বিষয়ে আশ্বাস দিচ্ছেন। এটা কোনো সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছেন না। আমার কাছে তিনি যা চাইছেন একদিকে তা পাচ্ছেন, আর আমার যেটা ন্যায্য পাওনা সেটা বছরের পর বছর শুধু আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। এর ফলে বাংলাদেশে যে দাবিটা তৈরি হয়েছে, আমি সেটাকে সাফল্য বলছি, বাংলাদেশের মানুষ যে বুঝতে পারছে ভারত একটি নিরন্তর শত্রæতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে প্রখ্যাত এই সাংবাদিক বলেন, ভারত স্বভাববশত আমাদের সঙ্গে বৈরিতা করছে। ভারতের পক্ষে বাংলাদেশের উপকার করা তার নিজেদের কারণেই সম্ভব নয়। যেমন পাকিস্তানের পক্ষেও সম্ভব নয়। কেননা, বাংলাদেশ কিংবা উপমহাদেশের ইতিহাসে ১৯৭১ সাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ১৯৭১ সালে এখানে (ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশে) দুটি বড় ধরনের প্রায় প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক চিন্তাকে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নাকচ করে দিয়েছে। বাংলাদেশে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে উত্থিত যে রাষ্ট্র, এই রাষ্ট্রের যে স্বাধীন বিকাশ এবং তাদের শক্তিমান উত্থানের মধ্য দিয়ে ভারতের মধ্যে যে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনগুলো দীর্ঘদিন ধরে কখনো কখনো ডরমেন্ট কখনো কখনো প্রকাশ্যে যে আন্দোলনগুলো রয়েছে সেগুলোর জন্য বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা এবং শক্তিমান বিকাশ ভারত ও পাকিস্তানের জন্য অন্তত একটা দুঃস্বপ্নের মতো। কারণ বাংলাদেশ যদি স্থিতিশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয় তাহলে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যকার যে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনগুলো রয়েছে, ভাষাভিত্তিক, এলাকাভিত্তিক, ইতিহাসভিত্তিক আন্দোলনগুলো বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে অনুপ্রেরণা পায়। এটা ভারতের জন্য এবং পাকিস্তানের জন্যও সত্য। ফলে পাকিস্তান (শাসক শ্রেণি) এবং ভারত (শাসক শ্রেণি) বাংলাদেশের একটা সুস্থ, স্বাধীন ও সক্ষম বিকাশ দেখতে চাইতে পারে না। বাংলাদেশের জন্য করণীয় দিক হিসেবে তিনি বলেন, ভারত কিংবা পাকিস্তানের সঙ্গেে পারস্পরিক স্বার্থের জায়গা কৌশলগতভাবে রক্ষা করার জন্য, দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি এবং স্থিতিশীলতার জন্য যেটুকু ব্যবহার করা দরকার সেটুকু ব্যবহার করা। কারো প্রতি প্রভুত্ব করতে দেয়ার সুযোগ দেয়া, সেটা ঘৃণা কিংবা ভালোবাসার নামে এটা করা আমাদের জন্য আত্মঘাতী। ফলে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে রাজনৈতিকভাবে সাফল্য (ভারতকে শত্রæ হিসেবে চিনতে পারা) দেখলে অর্থনৈতিক এবং অন্যান্যভাবে ভারত অনেক বেশি সাফল্য লাভ করেছে বলে মন্তব্য করেন এই প্রখ্যাত সাংবাদিক।
ট্র্যানজিট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের ভূ-খন্ডের মধ্য দিয়ে তার এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে দ্রব্যাদি, পণ্য সামগ্রী সরবরাহ করার জন্য জায়গা চেয়েছে। আমরা দিয়েছি। যদি সেটা ন্যায়সঙ্গত হয়, তাহলে আমি এখানে খারাপ কিছু দেখি না। এখানে গোঁড়ামির কিছু নেই। তবে সেই সম্পর্কটা পারস্পরিক কিনা, সেটা বুঝবার মানদন্ডগুলোও কিন্তু আমাদের কাছে পরিষ্কার। নেপাল এবং ভুটান স্থলবেষ্টিত দুটি দেশ, এই দেশগুলোর সঙ্গেে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের জন্য আমাদের কানেক্টিভিটি দরকার। সেই কানেক্টিভিটি তৈরি করার জন্য ভারতের মধ্য দিয়ে যে রাস্তা তৈরি করার ব্যবস্থা বা ব্যবসা-বাণিজ্যের যে দুই তরফা আলাপ-আলোচনার ব্যবস্থা তার মধ্যে আমরা নিয়মিত ভারতকে বাগড়া দিতে দেখছি। এটা করছে কীভাবে, ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো ব্যবসা করতে গেলে তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না করে ভারত বলছে, তোমরা যদি তাদের (ভুটান) কাছ থেকে কোনো কিছু কিনতে চাও, মাঝখানে আমাদের মাধ্যমে তা করতে হবে। অর্থাৎ ভারত মাঝখানে কমিশন এজেন্ট হিসেবে তার তৃতীয় ব্যবসা যুক্ত করতে চায়। আমরা নেপাল-ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা করব, তার জন্য তুমি করিডোর দিবা না কেন। যদি আমার ভূ-খÐকে তুমি করিডোর হিসেবে ব্যবহার করো। সেখানেও আমরা ভারতের বৈরিতা ছাড়া কিছু পাচ্ছি না। তিনি বলেন, ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম হচ্ছে চাণক্যপুরী। ভারতীয় কূটনৈতিক স্টাবিøশম্যান্ট এখনো হাজার বছর আগে সেই চাণক্যনীতি, যা কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রের মধ্যে পাওয়া যাবে। যেখানে পররাষ্ট্র নীতি কি হবে তা বলা আছে। সেখানে বলা হয়েছে, তোমার আশপাশের যে ছোট ছোট রাষ্ট্র আছে তাদের দমন করে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখ। সেই আমলে তাদের জন্য কতটা সঠিক ছিল তা আমি জানি না। কিন্তু আজকের জামানায় যেখানে মানুষের মধ্যে জাতীয়তাবোধের উত্থান ঘটেছে, আধুনিক চিন্তা-চেতনার বিকাশ হয়েছে, জাতি রাষ্ট্রের উত্থান হয়েছে, বাংলাদেশে সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আপন দেশ স্বাধীন করে তার মধ্যে বিকশিত হয়ে উঠবার লক্ষ্য বিদ্যমান রয়েছে। সেখানে ভারত সারাজীবন যদি তার চাণক্যনীতিতে পররাষ্ট্র নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তাহলে এটা তার একটা অন্তর্গত সীমাবদ্ধতা। যেটা এই অঞ্চলে তাদের শত্রæতা তৈরি করা ছাড়া অন্যকিছু করতে পারবে না। কারণ অন্য জাতিগোষ্ঠী, আশপাশের জনগোষ্ঠীকে ছোট করে দেখে, তাদের অবজ্ঞা করে, তাদের মর্যাদাবোধকে অসম্মান করে সে নিজে তাদের কাছ থেকে আন্তরিক সহযোগিতা পাবে না। কিছু দালাল-টালাল সারা পৃথিবীতে পাবে। সভ্যতার প্রথম থেকেই সবদেশে কিছু দালাল থাকে। সেটি থাকতেই পারে কিন্তু তারা একটি জনগোষ্ঠীর মূল শ্রোতধারাকে-চিন্তা-ভাবনাকে কখনই প্রতিনিধিত্ব করে না। এই অঞ্চলে ভারতের যে তুলনামূলকভাবে অনেক বড় অর্থনীতি, ভারত যদি তার চাণক্যনীতি বাদ দিয়ে আশপাশের রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সত্যিকার অর্থে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী হতো। তাহলে ভারত এই অঞ্চলে স্বাভাবিকভাবে নেতাতে পরিণত হতো। যে দেশ নিজের অঞ্চলে স্বাভাবিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক, দার্শনিক যোগ্যতা রাখে না, তার বিশ্ব নেতৃত্ব পাবার যত আকাক্সক্ষাই থাকুক তা পরিহার করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বাংলাদেশের দূরে সরে আসার বিষয়ে নূরুল কবির বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্তর্গত আকাক্সক্ষা ছিল অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিকশিত করা এবং অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের জন্ম দেয়া। সেটা থেকে বাংলাদেশ এখন অনেক দূরে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক শক্তি বিশেষত এখানকার বামপন্থী আন্দোলনের ধারা নানান কারণে (জাতীয়, দলগত এবং আন্তর্জাতিক) এই মুহূর্তে প্রান্তিক সীমারেখার শক্তি হিসেবে কোনো রকম নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষণা দিয়ে চলেছে। বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি তারাই হচ্ছে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক বিকাশের প্রধান অন্তরায়। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম কখনই নির্ধারক শক্তি হিসেবে উঠে দাঁড়াবে না। বিশেষত জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় যে ভূমিকা পালন করেছে। তাদের গায়ে ইতিহাসের অমোচনীয় কলঙ্ক জড়িয়ে আছে। জামায়াত কখনই সামাজিক শক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি এবং ভবিষ্যতেও কখনো পারবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন প্রসঙ্গে নুরুল কবির বলেন, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে আর একটি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে। বিএনপি মুখে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের কথা বললেও মূলত এই দলটি প্রায়োগিক অর্থে বিকশিত হয়েছে একটি ইসলামি জাতীয়তাবাদের আবরণে। সেই রাজনীতি তারা প্রায়োগিকভাবে করে চলেছে। যেটা ঠিক ধর্ম রাষ্ট্র চায় না, অন্যান্য ইসলামিক ফোর্সেসগুলো চায়। কিন্তু ধর্মভিত্তিক রাজনীতি সে করে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মুখে ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনীতির কথা বলে। কিন্তু সে আসলে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে। বিএনপি যে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে এটা নিয়ে খুব বেশি বিতর্ক, সংশয় বা বিভ্রান্তি বাংলাদেশের সমাজে নেই। তার রাজনীতি শেষ পর্যন্ত ইসলামী জাতীয়তাবাদের রাজনীতি। আর সাম্প্রতিক ইতিহাসের কথা বললে, এরশাদের নেতৃত্বাধীন শাসনের পরে যে, কথিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্মেষ শুরু হয়েছিল, নির্বাচনী এক ধরনের গণতন্ত্রের কথা। ১৯৯১ সালের পর থেকে মুখে মুখে প্রতিদিন প্রতিবেলায় জামায়াতে ইসলামিকে দেশের শত্রæ হিসেবে ঘোষণা দেয়ার পরেও বিএনপি’র বিরুদ্ধে ক্ষমতায় যাওয়ার রাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তত্ত¡াবধায়ক সরকারের জন্য একসঙ্গে এক টেবিলে বসে এক রাস্তায় সংগ্রাম করতে দেখেছি। ২০০৫ সালের আগে আওয়ামী লীগ খেলাফত মজলিসের সঙ্গে ৪ দফা চুক্তি করেছিল। সেই চুক্তির মধ্যে রাজনীতির মর্মকথা ছিল সেটা একটা থিওক্রেটিক স্টেটের (ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের)। ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে যে ধরনের আইন কানুন হয়, সেই আইন-কানুনের একটা দার্শনিক ইশারা ছিল। হেফাজত ইসলাম রাজধানীর শাপলা চত্বরে দুইটা বড় বড় সমাবেশ করেছে। একটা হচ্ছে ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির রাজনীতির বিরুদ্ধে তারা সমাবেশ করেছিল এবং সেখানে তারা ১৩ দফা চুক্তি দিয়েছিল। হেফাজত ইসলাম যখন বিএনপি এবং জামায়াতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তখন আওয়ামী লীগকে ১৩ দফার মধ্যে অনেক দফায় ভালো লেগেছিল। ফলে আওয়ামী লীগ যখন অন্য কোনো দলকে মাঠে নামতে দেয় না, মিছিল মিটিং করতে দেয় না, একটা সময় ছিল মানববন্ধনও করতে দেয় না। তারাই আবার হেফাজত ইসলামকে ২০১৩ সালের ৫ মে আরেকটা সমাবেশ করতে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ এই আশায় এটা করেছিল যে, এবারও হেফাজত ইসলাম আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শত্রæর বিরুদ্ধে বলবে। ক্ষমতার রাজনীতিতে দুই পক্ষের কেউ কারো চেয়ে কম যায় না। নানাভাবে তারা পর্দার অন্তরালে কাজ করে। ইতোমধ্যে (ওই সময়) হেফাজতে ইসলাম বিএনপি’র সঙ্গে ঐক্য তৈরি হয়েছে তা আওয়ামী লীগের গুপ্তচর বা এজেন্সিও বুঝতে পারেনি। যার ফলশ্রæতিতে সেখানে একটা হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে। তাদেরকে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় ফোর্স ব্যবহার করে উৎখাত করা হয়েছে। এতে করে তাদের (হেফাজতের) সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈরী সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। আবার তাদের সঙ্গে নতুন করে একটা সুসম্পর্ক হচ্ছে। আজকের সরকারের যারা মন্ত্রী আছেন তাদের কেউ কেউ এক সময় আহমদ শফীকে নিয়ে বলেছিলেন, নারী সমাজ নিয়ে শহী সাহেবের বক্তব্য নিয়ে সোচ্চার হওয়া দরকার। তাদেরকেই আমি দেখলাম মনে হচ্ছে যেন, শফী সাহেব পীর সাহেব, আর তার কাছ থেকে যেভাবে বায়াত নেয় সেভাবেই আমাদের প্রধানমন্ত্রী কথা বলছেন। আসলে এটা এক ধরনের ধর্ম নিয়ে রাজনীতি। যখনই ভোটের রাজনীতির কথা মাথায় আসে কিংবা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার কথা মাথায় আসে। তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক শক্তি-সমাবেশ করার কথা আসে, তখন আমরা বারবারই ইতিহাস দেখেছি আওয়ামী লীগকে তাদের সঙ্গ দিতে, তাদেরকে প্রশ্রয় দিতে। আর এসব হয় নানান ফর্মে, টেকটিকের নামে কৌশলের নামে। তিনি বলেন, ভোটের জন্য আওয়ামী লীগের কৌশলের প্রয়োজন হয়। এটা যদি করবেনই তাহলে দয়া করে মুখে আর এই বিভ্রান্তি ছড়াবেন না যে, আপনি একটা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারক-বাহক। আপনি একদিকে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক কথা বলবেন, নিজেকে সেই শক্তি হিসেবে সমাজে জাহির করবার চেষ্টা করবেন। অন্যদিকে কৌশলের নামে ইতিহাসের প্রতিটা বাঁকে আপনি আপোষ করবেন। জীবনের জন্য হয়তো কৌশল দরকার পরে কিন্তু কৌশলটাই যখন জীবন হয়ে দাঁড়ায়, তখন সেই জীবনের প্রতি আত্মমর্যাশীল মানুষ কখনই শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে না। আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এই মুহূর্তে নিঃসন্দেহে একটা যথার্থভাবে নির্বাচিত সরকার নাই। রাজনৈতিকভাবে লেজিটিমেসি নাই, নায্যতা নাই এমন একটা সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। এই সরকার এক ধরনের নিজের কথা ও পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোনো পদ্ধতি রাষ্ট্র চালাবার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক মতামতের ক্ষেত্রের অন্য কোনো রাজনৈতিক মতামত সম্মান করার তো দূরের কথা স্বীকৃতি দিতে রাজি না। তিনি বলেন, এরকম একটা স্বৈরতান্ত্রিক শক্তি এই মুহূর্তে বাংলাদেশে অধিষ্ঠিত রয়েছে। যারা সমস্ত জায়গায় একমুখী করেছে। তবে এই বৈরী পরিবেশেও যারা বিরোধী দলে থাকে তাদের যে দায়িত্ব তা পালনের ক্ষেত্রে শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। যে অর্থে একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা উপহার দেবার জন্য আওয়ামী লীগ শতভাগ ব্যর্থ একটা রাজনৈতিক দল, সেই অর্থে মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য যে দায়িত্ব পালন করা দরকার তাতে একশ ভাগ ব্যর্থ বিএনপি। এই দলটি নিজ দলের প্রতি দায়িত্ব, নিজ দলের নেতাকর্মীদের একটি ইউনিফর্ম ধারণা দেয়ার ক্ষেত্রেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৪-৫ জন নেতা ৪-৫ ধরনের পরস্পরবিরোধী কথাবার্তা বলছে। তাদের নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করতে সরকারের প্রয়োজন হয় না, নিজেদের নেতাদের মাধ্যমেই দলের নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হয়ে পরে। সুষ্ঠু রাজনৈতিক প্রতিযোগিতাভিত্তিক নির্বাচনের জন্য যে ধরনের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান দরকার তা এখন অনুপস্থিত। আওয়ামী লীগের সঙ্কট হচ্ছে আওয়ামী লীগের জন্য সামনে অত্যন্ত কঠিন সময় আসছে। সেটা প্রধানমন্ত্রীর তৎপরতা, কথাবার্তা ও চেষ্টার মাধ্যমে দেখা যায়। তিনি বুঝতে পারেন, আবার একটা নির্বাচন হবে সেখানে ১৫৩টা আসনে কেউ প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবে না এবং সারা বিশ্বে নায্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং কেবলমাত্র ভারত বলবে ঠিক আছে, সেইভাবে আবার তিনি সরকার গঠন করবেন সেটা তিনি আশা করেন না।




 

Show all comments
  • তাহমিনা ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৩:৪৩ এএম says : 3
    যারা বুঝা তারা আগেই বুঝেছে। আর যারা না বুঝার তারা কখনই বুঝবে না।
    Total Reply(2) Reply
    • আজাদ ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৫৯ পিএম says : 5
      ভারত আমাদের শত্রু, মানলাম।কারন তারা আমাদের দেশটা স্বাধীন করতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু পাকিস্তান -যারা ৩০ লক্ষ বাঙ্গালি হত্যা করলো, চীন -যারা এই হত্যাকান্ডে পাকিস্তাঙ্কে অস্ত্র,অর্থ,কূটনৈতিক সাহায্য দিলো-তারা কিভাবে আমাদের ঘনিষ্ট "বন্ধু" হয়ে গেলো সে বিষয়ে নূরুল কবির কিছু বলেন না কেন ?
    • নুরুল আলম ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১০:২১ এএম says : 5
      নুরুল কবির সাহেব এর কথায় নতুন কিছু নেই। যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলতে কৃপনতা বোধ করে তাদের কোন আলোচনা বা সমালোচনায় সততা নিয়েই আমার বড় প্রশ্ন।
  • sumon ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৭:৪৮ এএম says : 1
    india want to finish the concept of bangladesh
    Total Reply(0) Reply
  • মক্তি ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৯:০৩ এএম says : 4
    ভারত আমাদের শত্রু বুঝতে পারাই বড় অর্জন -নূরুল কবীর জামায়াত ১৯৭১ এর আগেই বুজছে
    Total Reply(1) Reply
    • saif ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১:৫৬ পিএম says : 4
      ইন্ডিয়া আমাদের শত্রু এটা পুর্যন্ত ঠিক মানি, এবং আমি আমার ব্যক্তি জীবনে ইন্ডিয়ান পন্যের ব্যবহার না করার মাধ্যমে প্রতিবাদ করি। আসুন আমরা সবাই ইন্ডিয়ান পন্য ত্যাগ করি।আর জামায়াত বুঝে কি করেছিলো বলতে পারেন???...............
  • Mostofa ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৯:০৫ এএম says : 0
    Excellent interview. I agree 100% with Editor-Nurul Kabir. This is highly thoughtful view without partiality to anyone.
    Total Reply(0) Reply
  • Nur- Muhammad ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০৯ পিএম says : 0
    জনাব নুরুল কবির সাহেব, সবায় বলছে, বন্ধু দেশ। আর আপনি বসছেন তারা শত্রু দেশ। আবার একদল বুদ্ধিজীবি বলছে, স্বাধীনতার জন্য আমরা তাদের কাছে ঋৃনী। আর আমি বলছি, ভারত বঙ্গবন্ধুর ও বাংলাদেশের কাছে ঋৃনী।আমাদের স্বাধীনতার পূর্বে ভারত পাকিস্তানের সাথে পেরে উঠছিল না। তাই তারা আমাদের সহযোগিতা নিল। পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ বাঁধালো। আমরা ভারতকে সমর্থন করলাম। বঙ্গবন্ধুর ডাকে তরুণা ঝাপায়ে পড়ল। সারা বিশ্ব কেঁপে উঠলো। বঙ্গবন্ধুর বজ্র কন্ঠে আমরা স্বাধীন হলাম। পাকিস্তানিরা লেজ ঘুটাতে বাধ্য হলো। তারা একে বারে দূর্বল হয়ে পড়লো। এমন অবস্থায় ভারত পাকিস্তানের ঘাড়টি চেপে ধরলো। জয়ের মাল্য পেল। তাই ভারত আমাদের কাছে ঋৃনি। আশা করি সকল বিবেকবান মানুষ এটা অনুধাবন করবে। ধন্যবাদ। সবায়কে ধন্যবাদ।
    Total Reply(2) Reply
    • আজাদ ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:৫৯ পিএম says : 4
      ভারত আমাদের শত্রু, মানলাম।কারন তারা আমাদের দেশটা স্বাধীন করতে সাহায্য করেছিল। কিন্তু পাকিস্তান -যারা ৩০ লক্ষ বাঙ্গালিহত্যা করলো,চীন -যারা এই হত্যাকান্ডে পাকিস্তাঙ্কে অস্ত্র,অর্থ,কূটনৈতিক সাহায্য দিলো-তারা কিভাবে আমাদের ঘনিষ্ট "বন্ধু" হয়ে গেলো সে বিষয়ে নূরুল কবির কিছু বলেন না কেন ?
    • Mozammal ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ২:৩৬ পিএম says : 4
      Excellent your comments, This is real history. We should realise that .
  • শিহাবুদ্দীন ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ২:৩৮ পিএম says : 1
    পঁয়তাল্লিশ বছর পর বোধোদয়ের জন্যে জনাব নূরুল কবিরকে ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply
  • Dr. B.B. Dhar ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ৮:৫২ পিএম says : 1
    This is the identity of disgracing people. Nothing new. When Awami League is empowered our demand increases beyond bound and all blames goes to Awami League. What did the last governments did we never remember or realise. May Allah Hedayet us.
    Total Reply(0) Reply
  • S. Anwar ২৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১০:১৩ পিএম says : 0
    "ভারত আমাদের শুধু শত্রু নয়, একেবারে জন্মগত শত্রু"। দেশের অশিক্ষিত লোকেরা এই বিষয়টি খুব সহজে বুঝলেও শিক্ষিত বোকারা কিছুতেই বোঝে না।
    Total Reply(0) Reply
  • no name ৩০ এপ্রিল, ২০১৭, ৭:৩৮ পিএম says : 3
    Pakistan neighbour hole bujhthe koto dhane koto chal. Bujhtheche baluchistan
    Total Reply(0) Reply
  • shahidullah ২ মে, ২০১৭, ২:৫০ এএম says : 2
    নুরুল কবির স্যারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • রাশেদ ৫ জুলাই, ২০১৭, ৯:৪৩ পিএম says : 0
    দেশ স্বাধিন করছেন ৪৬ বছর আগে, আর আজকে বুঝতেছেন কে শত্রু কে মিত্র!!!! কাদব না হাসব(!) .........................
    Total Reply(0) Reply
  • syed kabir ২২ জানুয়ারি, ২০১৯, ৩:৫১ পিএম says : 1
    ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।আর তা না হলে পাকিস্তানকে বুকে টেনে নিতে হবে।কিন্তু পাকিস্তানতো আমাদের তাড়িয়ে দিতে চেয়েছিল।তাই ভারতের সাথে ঐতিহাসিক কারনেই ভালো সম্পর্ক রাখতে হবে।হাঁ্যা,সমস্যা থাকবেই।কারন বৃহৎশক্তি ভারত,হিন্দুত্ববাদী ভারত,এখনো বর্ন বাদে বিশ্বাসী ভারতের বিরাটজনসংখ্যা।তারপরও ধৈর্যশীল হয়ে এগিয়ে যেতে হবে।অন্যথায় ভালোর চেয়ে মন্দ বেশি হবে।শেখ হাসিনা সেই পথেই হাঁটছে।
    Total Reply(0) Reply
  • মুহাম্মাদ হক ১৫ জুলাই, ২০১৯, ৭:০০ এএম says : 0
    আমার মনে হয় শেখ হাসিনা বুঝতে পেরেছে "ভারত আমাদের শত্রু", কিন্তু আমার সন্দেহ হয়- "আপনি/আপনারা কি শেখ হাসিনা কে বুঝতে পেরেছেন?!!" ☺
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ সাইফুল ইসলাম ৭ আগস্ট, ২০১৯, ১:২৩ পিএম says : 0
    আমার মতে নুরুল কবির ঠিক বলেছে । ভারত আমাদের দেশ থেকে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে, বিনিময়ে আমাদের সীমান্তে লাশ দেখতে হচ্ছে ।তিস্তার পানি বাদই দিলাম । ভারত আমাদের দেশের উপর দিয়ে অন্য রাজ্যে ব্যাবসা করবে, আর আমরা করতে পারবো না । এটা কোন বন্ধুত্ব হতে পারে না ।
    Total Reply(0) Reply
  • K.A.Hamid ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ২:৪৮ পিএম says : 0
    ভারত আমাদের বন্ধু কখনোই হতে পারেনা,ভারতের দাসত্ব আমাদের মেনে নেয়া উচিৎ নয় কোন ভাবেই।ভারত শুধু শোষন করতে জানে। ডাকাতের মত লুটে নিতে জানে।
    Total Reply(0) Reply
  • Abu bakar ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:১০ পিএম says : 0
    Thanks Mr Nurul Kabir.Your analysis is always very straightforwar. It is the high time for in-depth thinking of it.
    Total Reply(0) Reply
  • Abu bakar ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:১০ পিএম says : 0
    Thanks Mr Nurul Kabir.Your analysis is always very straightforwar. It is the high time for in-depth thinking of it.
    Total Reply(0) Reply
  • ফরিদুল হক ১ মার্চ, ২০২০, ৮:০০ এএম says : 0
    ইংল্যান্ডের সাথে যুদ্ধ করে আমেরিকা স্বাধীন হয়েছিল। আজকে ইংল্যান্ড-আমেরিকা সব চাইতে কাছের মিত্র। পৃথিবীর বুকে একবার মাত্র পারমাণবিক বোমার প্রয়োগ হয়েছে। আমেরিকার সেই বোমার আঘাতে জাপানের হিরোশিমা-নাগাসিকা নামের দুইটি শহর আগ্নিকুন্ডতে পরিণত হয়েছিলো। মারা গেছিলো লাখো মানুষ।আজো সেই দুই শহরে জন্ম নেয়া নতুন বাচ্চাদের অনেকেই পারমাণবিক বোমার রয়ে যাওয়া রিয়েকশানের কারনে শারারীক অপূর্ণতা নিয়ে জন্ম নিতে হচ্ছে। তারপরেও আজকে আমেরিকা-জাপান একে অপরের উন্নয়নের সব চাইতে কাছের মিত্র। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা চিন্তা করেন, ১৯৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রাশিয়া সেসময়ে ভারতের সাথে এক জোট হয়েছিলো। আজকে সেই পাকিস্তান-রাশিয়া একে অপরের বন্ধু। জার্মান-ফ্রান্স রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ইতিহাস বিখ্যাত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ১৯১৪ সালে শুরু হয়ে শেষ হয় ১৯১৮ সালে৷ চার বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে নিহত হন ১৪ লক্ষ ফরাসি ও ২০ লক্ষ জার্মান সৈনিক৷ আজকে এককালের শত্রু দুই দেশের মিত্রতার কারনে টিকে আছে গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একমাত্র আমরা ছাড়া দুনিয়ার সকল দেশ তাদের সাবেক শত্রুকে আজকে বন্ধুতে পরিণীত হয়েছে।কারন ঐসব দেশ গুলোতে যুদ্ধকে ধান্ধা করে খাওয়ার জন্য লেখক বা বুদ্ধিজীবী নাই। ওদের দেশ গুলোতে শত্রু দেশের নাম মুখে আনলে টুথব্রাশ করি বলার মত চরম ............ একজন জাফর ইকবাল নাই। ঐসব দেশ গুলো অতীত ভুলে সামনে আগাতে চায়।আর আমাদের জাফর ইকবালরা আমাদের বর্তমানের লাঞ্ছনা,গোলামী, সীমান্ত হত্যা, ভোটের অধিকার হরণের কথা ভুলিয়ে দেয়ার জন্য অতীতে টেনে নিয়ে যায়। এদের মুখে আপনি ৪৯ বছর আগের গুম-খুনের কথা শুনবেন,কিন্তু বর্তমান গুম-খুনের কোন গল্প শুনবেন না। এরা আপনাকে পিন্ডির শেকল ভাঙ্গার গল্প বলবে,কিন্তু দিল্লীর শেকলে বাঁধা বাংলাদেশের গল্প বলবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • mdEmran ২ মার্চ, ২০২০, ৪:৫৭ পিএম says : 0
    ভাই অনেকের জলে
    Total Reply(0) Reply
  • পার্থ ৪ মার্চ, ২০২০, ৯:২৪ পিএম says : 0
    ভাই ভারত জানে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল ভাষার মর্যাদা ও সম্পদের সমবন্টন দাবী করে। তার মানে এই নয় যে সাম্রদায়িক মনোভাব বদলে গেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • পার্থ ৪ মার্চ, ২০২০, ৯:২৪ পিএম says : 0
    ভাই ভারত জানে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল ভাষার মর্যাদা ও সম্পদের সমবন্টন দাবী করে। তার মানে এই নয় যে সাম্রদায়িক মনোভাব বদলে গেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Azmal Hossain ২৩ জুন, ২০২০, ৯:৫৬ পিএম says : 0
    আমরা ইতিহাস এর অতীত নিয়ে কখনও চিন্তা করিনা বা বিশ্লেষন করিনা। দ্বিজাতিতত্ত্ব ছিল নিছক একটি রাজনৈতিক কূটচাল। তখনকার নেতাগন এই উপমহাদেশের আরো একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ধব হবে ভেবেই দুই হাজার মাইল দূরের দুটি রাষ্ট্রকে এক পাতে জোর করে ভাত খাওয়ানোর কূট চেস্টা করেছিল।
    Total Reply(0) Reply
  • Koushik roy ২৪ জুন, ২০২০, ৫:১২ পিএম says : 0
    ধন্যবাদ বিজ্ঞ সাংবাদিককে আমাদের দেশের অতীত ও ভবিষ্যতের গভীর রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ