Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

চলতি বছর পর্যটক কমে যাবে ৪৩ লাখ বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির আশংকা

ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় পর্যটক কমে গেছে যুক্তরাষ্ট্রে

| প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পর্যটক কমে যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছে দেশটির বিশ্লেষকরা। তাদের অনুসন্ধানে প্রকাশ পেয়েছে, পর্যটক কমে যাওযার ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি বছরে দেশটিতে ৪৩ লাখ ট্যুরিস্ট কম যাবে এবং এতে মোট আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৭৪০ কোটি ডলার। ফিলাডেলফিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্যুরিজম ইকনোমিক্সের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ২০ জানুয়ারিতে ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়া পর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ট্যুরিস্ট আসার পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে বলে অনুসন্ধানে দেখা গেছে। এ সময় চীন এবং ইরাক থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ফ্লাইট কমেছে ৪০ শতাংশ। আয়ারল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড থেকে আসা ফ্লাইট কমেছে কমেছে ৩৫ শতাংশ। এতে দৈনিক গড়ে ২ হাজার বিদেশি পর্যটককে হারিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মোট পর্যটকের সংখ্যা হ্রাস পেলেও ট্রাম্পের এ সময়ে রাশিয়া থেকে আসা পর্যটকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । গড়পরতা পর্যটকের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকলেও এ সময় রাশিয়া থেকে আসা পর্যটকের সংখ্যা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন অবস্থার অবসানে ট্রাম্প প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে আসছে বছর পর্যটক আসার পরিমাণ কমে ৬৩ লাখে দাঁড়াবে বলে গবেষণা সংস্থাটির আশঙ্কা। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১০৮০ কোটি ডলার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ফ্লোরিডার মায়ামি, এরপর সানফ্রান্সিসকো ও নিউ ইয়র্ক। ইউএস ট্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট জোনাথন গ্রেলা বলেছেন, ৯/১১ এর পর বিদেশিরা আমেরিকাকে নিরাপদ ভাবেননি। এরপর তারা কখনোই যুক্তরাষ্ট্রে এলে হৃদ্যতাপূর্ণ আতিথেয়তা পাননি। এ কারণে গত ১৫ বছরেই পর্যটন শিল্পকে লোকসানের সাগরে হাবুডুবু খেতে হয়েছে। এমন অবস্থায় ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এ খাতকে নাজুক পরিস্থিতিতে ফেলেছে। বিশ্বের বৃহত্তম হোটেল চেইন ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনাল-এর তথ্য অনুযায়ী, মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসে অবস্থানের জন্যে হোটেল বুকিংয়ের হার কমেছে ১৫ শতাংশ, মধ্যপ্রাচ্য থেকে কমেছে ৩০ শতাংশ। গেøাবাল বিজনেস ট্র্যাভেল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক মাইক ম্যাকর্মিক বলেছেন, গত দুই মাসে টিকেট বিক্রি কমপক্ষে ১৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার কমেছে। এটা এ শিল্পকে নিদারুণ ক্ষতির মুখে ফেলছে। এখন আর কেউই ব্যবসা-বাণিজ্যের মিটিংয়ের জন্যে শিকাগো, লস এঞ্জেলেস, ওয়াশিংটন ডিসি কিংবা নিউ ইয়র্ককে নিরাপদ ভাবেন না। হোটেলটির সেলস ও মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক ক্রিস জিনডেশ জানান, হোয়াইট হাউজ থেকে ১৫ মাইল দূরে অবস্থিত শেরাটন টাইসন হোটেলে রুম বুক করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিনামূল্যে অ্যাপেল ঘড়ি দেওয়ার ঘোষণা রয়েছে। এমন নাজুক পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে নানা ধরনের ছাড় দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগে বুক করা এশিয়ার একটি গ্রæপ তাদের যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিল করেছেন। ব্রিটিশের একটি ইয়ুথ গ্রæপের ৪০০ জন আসার কথা ছিল এই গ্রীষ্মে। ৩ সপ্তাহ থাকার বুকিং দেয় তারা। কিন্তু ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পর সে ভ্রমণ-পরিকল্পনা বাতিল করেছে তারা। ক্রিস জানান, এই গ্রীষ্মে জাতিসংঘে একটি অনুষ্ঠানে দুইশটি সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে বিভিন্ন দেশ থেকে পাঁচশ জনের সার কথা ছিল। কিন্তু সবাই গত সপ্তাহে ওই কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ার কথা জানিয়ে হোটেল বুকিং বাতিলের অনুরোধ করেছেন। ওয়ার্ল্ড মেরিটের চিফ অপারেটিং অফিসার মার্লো হারমসেন বলেন, নানাভাবে আমরা নাজুক অবস্থায় পড়ছি। ট্রাম্পের বিভিন্ন পদক্ষেপের নিষ্ঠুর বলি হচ্ছি আমরা। নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের অনেক সভা-সমাবেশ স্থানান্তরিত করে ইউরোপে নেয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন ভিনদেশিরা। বিবিসি, রয়টাস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ