Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভয়ভীতি ও নির্যাতন করে অর্থ আদায় শিবচরে এসআই নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবূল হাসান সোহেল, ভদ্রাসন, শিবচর মাদারীপুর থেকে : মাদারীপুরে এক এসআই বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে মামলার ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং নির্যাতন করে টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। দাবিকৃত টাকা দিতে না পারলে চালানো হয় নির্যাতন। বিভিন্ন মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়া হয়। এমনই অভিযোগ শিবচর উপজেলার ভদ্রাসন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক নূরুল ইসলাম ও জাবেদ হোসেন নামে এক কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। এদের ভয়ে সন্ধ্যার পর পরই শত বছরের পুরানো বাজার শূন্য হয়ে যায়। এমন কি দিনের বেলায় বাজারসহ আশপাশের লোকজন আতঙ্কে থাকে।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, শিবচর উপজেলা ভদ্রাসন পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পুলিশ পরিদর্শক নূরুল ইসলাম ও কনস্টেবল জাবেদ হোসেন দীর্ঘ দিন ধরে ভদ্রাসন বাজার ও তার আশপাশ এলাকায় নিরীহ মানুষকে হয়রানি করছে। ভয়-ভীতি দেখিয়ে আদায় করছে মোটা অংকের টাকা। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে মুখে গামছা বেঁধে ভুক্তভোগিদের নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভদ্রাসন বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল খালেক জানান, একটি মামলায় এসআই নূরুল ইসলাম ও তার কনস্টেবল জাভেদ আমার কাছে দেড় লাখ টাকা দাবি করেছে চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেয়ার জন্য। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমার দোকান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে।’ মাছ ব্যবসায়ী সিরূপ দাস বলেন, আমি মাছ বিক্রি করে বাড়ী ফেরার পথে এসআই নূরুল ইসলাম ও ড্রাইভার জাভেদ আমাকে আটক করে বলেন, তোর কাছে ইয়াবা আছে। এসময় আমি অস্বীকার করলে আমাকে মারধর করে শিবচর থানায় পাঠিয়ে দেয়। পরে আমি ৩০ হাজার টাকা দিলে সন্দেহভাজন হিসেবে আমাকে জেল হাজতে চালান দেয়।’ আরেক ইলেক্টিক ব্যবসায়ী সরোয়ার হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবত আমি এই বাজারে ব্যবসা করি। আমার নামে কোন দুর্নাম নেই। অথচ পুলিশ আমাকে আটক করে ব্যাপক নির্যাতন করে। পরে আমার আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ১ লাখ ৪ হাজার টাকা আদায় করে ৫০ পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দেয়।’ বাজারে আজিম নামের এক ব্যবসায়ীকে উলঙ্গ করে শারীরিক নির্যাতন করে। বাজারের শাক-সবজি বিক্রেতা এক মহিলা বলেন, এই তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশদের ভয়ে আমরা বাজারে আসতে ভয় পাই, তাদের কথা না শুনলে আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।’ গনি নামে এক ব্যক্তিকে টাকার জন্য আড়ারে সাথে ঝুলিয়ে মুখে গামছা বেঁধে নির্যাতন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনুচ্ছিক এক মহিলা বলেন, আমার স্বামী ঢাকা থাকে। এই সুযোগে এই তদন্ত কেন্দ্রের এসআই রাতে আমার বাসায় এসে গালাগালি করে। ওর ভয়ে আমি এই বাজারে আসতে পারি না। ভয়ে থাকতে হয়, কখন কি করে ফেলে।’
এ ব্যাপারে ভদ্রাসন ইউনিয়নের মহিলা মেম্বার নাছিমা বেগম বলেন, এই পুলিশ কেন্দ্র এখন এলাকার বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশের নির্যাতনে এলাকায় নিরীহ মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না। যখন তখন যাকে ইচ্ছে, তাকে মাদক, অস্ত্র মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে। কেউ টাকা না দিলে ব্যাপক নির্যাতন করে। আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রসহ প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নজর কামনা করি।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে এসআই নূরুল ইসলামের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, সাংবাদিকের সাথে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করে। নিউজ করলে সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। পুলিশ সুপার সরোয়ার হোসেন জানান, যদি কেউ লিখিত অভিযোগ করে, তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ওই এসআইয়ের বিষয় উচ্চ মহলের চাপ আছে। আমি চেষ্টা করছি, বিষয়টি সমাধানের।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ