Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত

কবি নজরুল বিশ^বিদ্যালয়ে বিচারহীনতায় যৌন অপরাধ বাড়ছে

| প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো: শামসুল আলম খান, ময়মনসিংহ থেকে : ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রী শিক্ষকের যৌন কেলেঙ্কারীর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। যৌন কেলেঙ্কারী এ ঘটনার জন্য পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিচারহীনতাকে দায়ী করেছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ^বিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ২ মে সোমবার হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আসমা সরকার রীপা একই বিভাগের প্রভাষক মোঃ মিনহাজ উদ্দিন বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে ভিসি বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় ওইদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর এএমএম শামসুর রহমানকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় র্কতৃপক্ষ। জানা যায়, শিক্ষার্থী রীপা ও শিক্ষক মিনহাজের গ্রামের বাড়ী শেরপুর জেলার পাশাপাশি এলাকায়। তারা পারিবারিক সম্পর্কে একে অপরের আত্মীয়। ফলে পূর্ব থেকেই তারা একে অপরের পরিচিত। শিক্ষার্থী আসমা সরকার রীপা জানান, প্রভাষক মোঃ মিনহাজ উদ্দিনের সাথে আমার দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক চলছে। প্রেমের ছয় মাস পরেই আমাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। ওই সময় শিক্ষক মিনহাজ আমাকে বিয়ের প্রলোভন দিলেও সম্প্রতি তিনি আমার সাথে কোন সম্পর্ক রাখতে না চাওয়ায় আমি বাধ্য হয়ে বিভাগীয় প্রধান ও ভিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. সুব্রত কুমার দে। এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও প্রভাষক মোঃ মিনহাজ উদ্দিনের কোন বক্তব্য জানা যায়নি। তবে তার একাধিক বন্ধু ও ঘনিষ্টজনরা জানান, রীপা এর আগে এক চাকরীজীবীকে বিয়ে করেছিল। ওই স্বামীকে তালাক দেয়ার পর থেকেই মিনহাজের সাথে রীপার মন দেয়া নেয়ার সম্পর্ক হয়। এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম বলেন, এ ঘটনা তদন্তের জন্য ইতিমধ্যে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিশ^বিদ্যালয় সূত্রমতে, এর আগেও বহু যৌন কেলেঙ্কারীর ঘটনা ঘটেছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর মধ্যে ২০১০ সালের ২২ জুলাই গভীর রাতে বিশ^বিদ্যালয়ের ডরমেটরিতে বাংলা বিভাগের প্রফেসর শামসুদ্দিন চৌধুরী ও একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মার্জিয়া আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করা হয়। সম্প্রতি বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তারানা নূপূর তার পূর্বের স্বামীকে তালাক দিয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের মাস্টার্স ২য় বর্ষের ছাত্র নূরুল ইমরানের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে ছাত্রকে বিয়ে করে সমালোচনার সৃষ্টি করে। এছাড়াও একাধিক শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীদেরকে লাভ ম্যাসেজ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বিশ^বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অভিযোগ, যৌন কেলেঙ্কারীর ঘটনায় দন্ডিত শামসুদ্দিন চৌধুরীকে পুনর্বহাল করা হয়েছে এবং একই অভিযোগে অভিযুক্ত মার্জিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এছাড়াও আরো একাধিক যৌন কেলেঙ্কারীর ঘটনায় বিচার না হওয়ার কারণে বিশ^বিদ্যালয়টিতে দিনে দিনে যৌন কেলেঙ্কারীর ঘটনা বেড়েই চলছে। এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিষ্টার কৃষিবিদ হুমায়ন কবীর বলেন, বিভিন্ন সময় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, তদন্ত কমিটি হয়েছে। এতে কোনোটা প্রমাণিত হয়েছে আবার কোনোটা প্রমাণিত হয়নি। ফলে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই সব ঘটনায় ব্যবস্থা না নেয়া হয়েছে। তবে সর্বশেষ ছাত্রী শিক্ষকের ঘটনায় তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ