Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মোরেলগঞ্জে অতি দরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

কেতাবে ১৩১ শ্রমিক, বাস্তবে ১২

| প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোরেলগঞ্জ (বাগেরহাট) উপজেলা সংবাদদাতা : মার্চ থেকে মে বা জুন মাস পর্যন্ত গ্রামাঞ্চলে তেমন কোন কাজ থাকেনা। এ সময় অতিদরিদ্র পরিবারগুলোর কষ্টে দিন কাটে। এমনটি ভেবে বর্তমান সরকার বছরের প্রথমদিকে ৫/৬মাস ধরে চালু করেছেন অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি। এই কাজের আওতায় শ্রমিকরা নিজ এলাকায় ৬ঘন্টা কাজ করে ১শ’ ৭৫টাকা বেতন পাবেন। প্রতিটি পর্বের কাজ চলবে ৪০দিন। সকল ইউনিয়নে এ কাজের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। যারা এই প্রকল্পে কাজ করবে তাদের নিবন্ধনও হয়ে আছে আগে ভাগেই। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এই কর্মসূচির ২য় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে গত ৬ মে। কিন্তু কোন কোন প্রকল্পের কাজ আদৌ শুরু হয়নি। শুরু হওয়া অধিকাংশ প্রকল্পে নেই নিবন্ধিত ও নির্ধারিত সংখ্যক শ্রমিক। এই কর্মসূচির শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই থাকছে অনিয়ম, দুর্নীতি। কাজ চলছে কাগজ কলমে। যার বাস্তব চিত্র ভিন্ন। গত রোববার বহরবুনিয়া ইউনিয়নের দুটি প্রজেক্টে পাওয়া গেছে ব্যপক অসঙ্গতি। ৩নং ওয়ার্ডের ফুলহাতা বাজারের কাছে চলছে একটি রাস্তা সংস্কারের কাজ। এখানে প্রতিদিন ১শ’ ৩১জন শ্রমিক কাজ করার কথা। কিন্তু কাজে আছেন মাত্র ১২জন। এই প্রকল্পটি দেখাশোনার দায়িত্ব সংরক্ষিত নারী আসনের ইউপি সদস্য মাকসুদা বেগমের। তার স্বামী হারুন অর রশিদের নাম রয়েছে এখানে শ্রমিকের তালিকায়। প্রকল্পটি তিনিই তদারকি করছেন। তবে এখানে কতজন শ্রমিক কাজ করার কথা তা লেবার সর্দার দেলোয়ার হোসেন মোল্লার জানা নেই। কর্মরত শ্রমিক শহিদুল হাওলাদার, হাসিব, ইমরান, লিয়াকত, ইলিয়াস, সোহেল, হাসান, রিপন ও আবেদ বলেন, ‘আমরা আমরা ১শ’ ফুট মাটি কেটে দিবো ১০ হাজার টাকায় এই চুক্তিতে কাজ করছি’। লেবার সর্দার বলেন, ‘শ্রমিক পাওয়া যায় না। তাই নগদ টাকার চুক্তিতে কাজ করানো হচ্ছে’। ১৩১জন শ্রমিকের স্থলে মাত্র ১২জন শ্রমিক ও কেন চুক্তিতে কাজ করানো হচ্ছে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মাকসুদা বেগম ছবি বলেন, ‘কোন লোক কাজ করতে চায় না। তাই কাজের স্বার্থেই এভাবে চালানো হচ্ছে’। এই ইউনিয়নের অপর একটি প্রকল্প রয়েছে ৪নং ওয়ার্ডে। কাগজ পত্রে এখানে শ্রমিক রয়েছে ৪২জন। প্রকল্প এলাকায় গেলে স্থানয়ীরা অভিযোগ করে বলেন, এখানে কোন কাজই শুরু হয়নি’। এ সম্পর্কে প্রজেক্ট চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মো. মাসুদ হোসেন মোবাইল ফোনে জানান, ‘আমি ও চেয়ারম্যান সাহেব জরুরি কাজে ঢাকায় আছি। ফিরে এসে কাজ শুরু করবো’। এ সম্পর্কে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এতো অসঙ্গতি, অনিয়ম কোথাও থাকার কথা নয়। তবে আগামি দিন থেকে ওই ইউনিয়নের সকল প্রজেক্টের কাজ বিশেষভাবে নজরদারি করা হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে উল্লেখিত অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির উপজেলা সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. ওবায়দুর রহমান বলেন, বহরবুনিয়া ইউনিয়নের বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। কোন প্রকার অনিয়ম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না’। এ বিষয়ে জানার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মো. রিপন তালুকদারের ০১৭১৫-৭৫৭৩১২ নং মোবাইল ফোনে একাধীকবার রিং করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মো. আনোয়র হোসেন হাওলাদার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এ ইউনিয়নে উন্নয়নের নামে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। যেন দেখার কেউ নেই। এজন্যই কি শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক পাঠিয়েছিলেন ইউপি নির্বাচনে?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ