Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিদ্যুতে দুঃসহ যন্ত্রণা

ঢাকায় এলাকা ভেদে ৩ ঘণ্টা থেকে ৮ ঘণ্টা থাকে না

প্রকাশের সময় : ২২ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১১ এএম, ২২ মে, ২০১৭


প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমে শিশুসহ নারী ও বয়ষ্ক মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। গরমে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি বাড়ছে। এক ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলে পরবর্তী ২/৩ ঘন্টা বিদ্যুতের দেখা মেলা ভার। ক্রমশই ফুসে উঠছে সারাদেশের ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। যে কোন সময় গ্রাহক ও বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কাও করা হচ্ছে।


হাসান সোহেল ও পঞ্চায়েত হাবিব : বিদ্যুতের সেই পুরনো খেলা। কখনো যায় আবার কখনো আসে। এই আসা যাওয়ার মধ্যে রাজধানী ঢাকা শহরে এলাকাভেদে ৩ থেকে ৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। তীব্র দাবদাহে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এতে হাসপাতাল ও সেবাকেন্দ্রসহ দেশের কোটি কোটি মানুষ চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন। দেশের মিল-কারখানা, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ আবাসিক এলাকার জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমনকি রাজধানীর শের-ই বাংলা নগরের প্রধান মন্ত্রী কার্যালয়ের আশ-পাশেও গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিলো না। রাজধানীসহ শহর এলাকায় মাঝে মাঝে বিদ্যুত যাওয়া-আসার মধ্যে থাকলেও গ্রামের অবস্থা লেজেগোবরে। তারা দিনে তিন-চার ঘন্টার বেশি বিদ্যুত পাচ্ছেন না। লোডশেডিংয়ের নাম করে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ থাকায় রাজধানীসহ সারাদেশের গ্রাহকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের সূত্র মতে, এ অবস্থা আরও ৪/৫দিন থাকবে। এদিকে বিদ্যুত না থাকায় প্রচন্ড ভ্যাপসা গরমে শিশুসহ নারী ও বয়ষ্ক মানুষ সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে। গরমে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগব্যাধি বাড়ছে। এক ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকলে পরবর্তী ২/৩ ঘন্টা বিদ্যুতের দেখা মেলা ভার। আর তাই জনজীবনে নেমে এসেছে এক ধরনের অসস্তি। ক্রমশই ফুসে উঠছে সারাদেশের ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা। যে কোন সময় গ্রাহক ও বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এছাড়া সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ ক্ষতিয়ে দেখতে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি অধিদকতর তদন্তে ৫ কার্যদিবসের সময়সীমা বাড়িয়েছেন। তাই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সঠিক কারণ এখনও তদন্তাদীন। তবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদনে বর্তমানে চালু বিদ্যুৎ লাইনটির সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং যে সব বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে রক্ষণাবেক্ষনের কাজ চলছে তা দ্রুত শেষ করে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি রমজানে যাতে মানুষকে  কোন ধরনের ভোগান্তিতে না পড়তে হয় সেদিকে নজড় দিতে বলেছে।  
সূত্র মতে, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। গত শনিবার হারিকেন ও হাত পাখা হাতে পিরোজপুরের কাউখালী উত্তর বাজার সড়কে পুরাতন রাজস্ব অফিসের সামনে মানববন্ধন করেছেন গ্রাহকেরা। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে ভোলার লালমোহনে আহŸায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিদ্যুতের অভাবে বিপর্যস্ত দেশের মানুষ ক্ষোভে ফুসছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিরসনে কেউ কেউ সরকারের হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন।  
এদিকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে এর ব্যাখ্যা দিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি ফেসবুকে এক পোস্টে লিখেছেন- আমার নির্বাচনী এলাকাসহ বৃহত্তর উত্তরবঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহের সমস্যার কারণ হলো- মেঘনা নদীর কাছে সরবরাহ লাইনের টাওয়ার ভেঙে পড়া। ফলে প্রতিদিন ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এ সমস্যা সমাধানে বিদ্যুৎ বিভাগ কাজ করছে জানিয়ে শাহরিয়ার আলম লেখেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়েছিল সঞ্চালন লাইন ঠিক হতে দুই মাসের অধিক সময় লেগে যাবে। তবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছি কাজ দ্রæত গতিতে চলছে। রমজানের প্রথম সপ্তাহে বিদ্যুৎ সরবরাহ অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ সম্পর্কে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) সহকারী ম্যানেজার (জনসংযোগ) এ বি এম বদরুদ্দোজা খান জানান, আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ সঞ্চালন লাইন বিকল হওয়ার পাশপাশি সারাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো রক্ষণাবেক্ষনের কাজ চলছে তাই বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। মানুষের ভোগান্তিতে দু:খ প্রকাশ করে রমজানের আগেই বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পিজিসিবি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুম আল বেরুনী বলেন, আমরা দ্রæত সিস্টেম রিস্টোর করার চেষ্টা করছি। এখন অবস্থা অনেকটা ভালো, অধিকাংশ জায়গায় বিদ্যুৎ এসে গেছে। বাকি জায়গাগুলোয়ও শিগগির চলে আসবে বলে আমরা আশা করছি। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী- খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ২ হাজার ২৪৯ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার মোট ২৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ১৫টিতে রক্ষণাবেক্ষনের কাজ চলছে করা হচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। পিজিসিবির ওই চার জোনে মোট ৩২টি জেলা রয়েছে, যেখানে দেশের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীর বসবাস। এর বাইরে ঢাকা জোনের জেলা ফরিদপুরসহ আরও কয়েকটি স্থানে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিচ্ছে।   
পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে দেশের পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্যুৎ পাঠানোর জন্য দুইটি ২৩০ কেভির লাইন আছে। একটি আশুগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জে, আরেকটি ঘোড়াশাল থেকে ঈ¦শরদীতে। ঝড়ে আশুগঞ্জ থেকে সিরাজগঞ্জ লাইনের টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঘোড়াশাল থেকে ঈশ্বরদী লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ অব্যাহত রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এ লাইনটি ওভারলোডের কারণে ট্রিপ করে। ফলে ওয়েস্টার্ন গ্রিড আমাদের ইস্টার্ন গ্রিড থেকে আলাদা হয়ে যায়। ফলে ওই এলাকার প্রায় সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো চালু করতেও কিছুটা বিদ্যুৎ লাগে। আবার কোনো কারণে কোনো সঞ্চালন লাইনে লোড বেড়ে গেলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। সংরক্ষণের সুযোগ না থাকায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। কোনো কারণে কোনো কেন্দ্র বা সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হলে পুরো সিস্টেমে সরবরাহের ঘাটতি তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে কিছু এলাকা বিদ্যুৎহীন রেখে অথবা অন্য কোনো গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ এনে ‘লোড’ সমন্বয়ের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তা করা না গেলে অর্থাৎ লোড সমন্বয় না হলে অন্য কেন্দ্রগুলোর ওপর চাপ বাড়ে। এভাবে অতিরিক্ত চাপ তৈরি হলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জেনারেটর বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আর নতুন করে কোনো কেন্দ্র বন্ধ হলে সরবরাহে ঘাটতি আরও বাড়ে এবং একইভাবে অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রও বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। এর আগে ২০১৪ সালের ১ নভেম্বর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা সঞ্চালন কেন্দ্রে বিপর্যয় দেখা দিলে ভারতের সঙ্গে সঞ্চালন লাইন বন্ধ হয়ে যায়। জাতীয় গ্রিড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ভারতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রক্রিয়া। একই সময় দেশের উৎপাদনে থাকা সব বিদ্যুৎ কেন্দ্র একযোগে বন্ধ হয়ে গেলে ধস নামে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। ফলে সারা দেশে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দেয়।
এদিকে অসহনীয় গরম ও বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অসুস্থ হয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষ। বেশি বিপাকে পড়েছে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা। ভ্যাপসা গরমে ঘরে বাইরে কোথাও স্বস্তি নেই মানুষের। তবে আবহাওয়াবীদদের মতে, বৃষ্টি হলে গরমের মাত্রা কমতে পারে। অপরদিকে গরমের কারণে ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিস ও পানিবাহিত নানা রোগবালাই বাড়ায় এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রচুর পরিমানে পানি, স্যালাইন ও লেবুর শরবত খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।     
বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুব-উল-আলম বলেন, কয়েকটি টাওয়ার ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে সঞ্চালন লাইন বিপর্যস্ত হয়েছে। আর তাই বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। টাওয়ার ও সঞ্চালন লাইনের মেরামতের কাজ চলছে। কয়েকদিনের মধ্যেই এ সমস্যার সমাধান হবে। আসন্ন রমজান মাসে দেশে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১ মে রাতে ঝড়ের কারণে কিশোরগঞ্জের একটি বিদ্যুতের টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে বন্ধ হয়ে যায় আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জের ২৩০ কিলোভোল্ট সঞ্চালন লাইন। বিকল্প সঞ্চালন লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হলে পরের দিন সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। এতে দেশের দক্ষিণ ও উত্তরের ৩২  জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। দ্বিতীয় সঞ্চালন লাইনটি ২ মে বিকেলের মধ্যে ঠিক করা হলেও আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জের টাওয়ারটি এখনও সংস্কার করা যায়নি। এছাড়া দেশের দক্ষিণ-উত্তরাঞ্চলের ১৫টি বিদ্যুৎকন্দ্রে মেরামতের কাজ চলছে। এ কারণেও বিদ্যুতের উৎপাদন কম বলে বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়।
প্রচন্ড খরতাপ ও লোডশেডিংয়ে জনজীবন অতিষ্ঠ
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : গ্রীস্মের প্রচন্ড খরতাপে গেল কদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তবে এই অসহ্য গরমের মধ্যে যুক্ত হয়েছে ঘনঘন লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণা। প্রতিদিন অন্তত চার থেকে পাঁচবার করে চলছে বিদ্যুতের আসা যাওয়া খেলা।
তবে উৎপাদনে ঘাটতি থাকায় সারাদেশে দৈনিক অন্তত এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। আর জ্বালানী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের নির্ভরযোগ্য কোনো উৎস তৈরি না হওয়ায় এ সঙ্কট। একই সাথে তারা সঞ্চালন ব্যবস্থার দুর্বলতাকেও দায়ী করেন।
গ্রীষ্মের খরায় পুরছে নগরীর পথঘাট। তীব্র গরমে দুর্বিসহ অবস্থা সকল শ্রেণী পেশার মানুষের। আর তপ্ত রাস্তায় ফুটপাতের পথ ধরে হেটে চলা পথচারীদের অনেকেরই ছায়াসঙ্গী ছাতা। তারপরও গরমের এই তাপদাহ থেকে যেনে একটু স্বস্তি নেই। এদিকে সারাদিন সীমাহীন দুর্ভোগের পর ঘরে ফিরেও এতটুকু স্বস্তি পাচ্ছে না নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীবাসী। গত কয়েকদিন ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দৈনিক অন্তত চার থেকে পাঁচবার করে লোডশেডিং হচ্ছে।
তবে এই গরম ও লোডশেডিংয়ে একটু বেশি ভোগান্তিতে আছে ছাত্রছাত্রীরা। লোডশেডিংয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়ালেখা করবে তারও কোনো উপায় নেই। কারণ গ্রীষ্মের উত্তাপ অনেক বেশি। সূত্র বলছে, শহরের পাশাপাশি শহরতলীতেও চলছে ভয়াবহ লোডশেডিং। বিভিন্ন ইউনিয়ণ ও উপেজেলাগুলোতে অসংখ্যবার বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছে। যা পূর্বের যেকোনো সময় থেকে অধিকমাত্রায় বেশি।
তবে নগরবাসীর অভিমত, নগরীতে দিন-রাত মিলিয়ে তারা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন মাত্র ১১ থেকে ১২ ঘণ্টা। বাকি ৯ থেকে ১০ ঘণ্টা বিদ্যুতের দেখা মিলছে না। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে শহর ও শহরতীলেতে গড়ে উঠা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের উৎপাদনে। জেলার ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা- এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে জাতীয় অর্থনীতিও প্রভাবিত হবে।
এদিকে বারবার লোডশেডিংয়ের কারণে পানি উৎপাদন ব্যবস্থাতেও সমস্যা হচ্ছে, ওয়াসা ঠিকমতো পানি সরবরাহ করতে পারছে না, অন্যদিকে বাসাবাড়িতে আন্ডারহেড থেকে ওভারহেড ট্যাংকে পানি সরবরাহে মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সূর্যের তাপদাহে যেন পুড়ছে সবকিছু। চারদিকে তীব্র তাপদাহের সঙ্গে লোডশেডিংও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। এতে ঘামে ভিজছে কর্মব্যস্ত মানুষজন। এতে করে নগরবাসীর জীবনে নেমে এসেছে সীমাহীন দুর্ভোগ। অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন তারা। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না তেমন কেউ। এমনকি গরমের কারণে স্কুল-কলেজগুলোতেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। ভ্যাপসা গরমে ও তাপদহে খেটে খাওয়া মানুষসহ সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়েছে বহুগুণ। তাপ প্রবাহের কারণে অনেক এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। মাঝে মধ্যে আকাশে মেঘের ঘনঘটায় আশার সঞ্চার হলেও বৃষ্টির দেখা না মেলায় হতাশ জেলাবাসী।



 

Show all comments
  • আজিজ ২২ মে, ২০১৭, ৩:৫১ এএম says : 0
    জীবনটা অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুত

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৪ জানুয়ারি, ২০২৩
১০ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ