Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে অকাল বন্যা পানিবন্দি পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৮ পিএম, ৭ জুন, ২০১৭

আবুল কালাম আজাদ, বালাগঞ্জ (সিলেট) থেকে : টানা বৃষ্টিপাতের কারণে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুশিয়ারা ডাইকের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ভেঙে অকাল বন্যা দেখা দিয়েছে। এরফলে গতকাল বুধবার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ অকাল বন্যায় সিলেটের ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জ উপজেলার অর্ধ শতাধিক গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্মাণাধীন বালাগঞ্জ-খসরুপুর সড়কের (কুশিয়ারা ডাইক) একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এই সড়কের বালাগঞ্জ সদর ইউনিয়নের করছারপার, পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুর, হামছাপুর, জালালপুর ও ওসমানীনগরের সাদিপুর ইউনিয়নের কুশিয়ারা ডাইকের লামা তাজপুর এলাকাসহ একাধিক স্থান ভাঙন আক্রান্ত হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় কুশিয়ারা ডাইকের ওসমানীনগরের লামা তাজপুরস্থ ভেঙে যাওয়া ডাইকে বালুভর্তি বস্তা দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল বুধবার বিকেলে বালাগঞ্জ-খসরুপুর সড়কের (কুশিয়ারা ডাইক) ভাঙ্গন পরিদর্শন করেন সিলেট জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী।
কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদী তীরবর্তী ওসমানীনগর উপজেলার লামা তাজপুর, পূর্ব তাজপুর, দক্ষিণ তাজপুর ও চর গাঁওয়ের দুই সহ¯্রাধিক পরিবার ৪-৫ দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এলাকার ৯০ শতাংশ পরিবার দরিদ্র। পানিবন্দি হওয়ায় তাদের ঘরে খাবার নেই। এতে রমজান মাসে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব পরিবারকে। বিশুদ্ধ পানির অভাব থাকায় পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।
সাদীপুর ইউপি সদস্য স্বপন আহমদ বলেন, কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি এবং ডাইক ভেঙে এলাকার প্রায় ২৫টি গ্রামের ৩ সহ¯্রাধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। পানিবন্দি গরীব পরিবারগুলোর জন্য ত্রাণ বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানান তিনি।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, ভাঙন কবলিত স্থান পরিদর্শন করেছি। পানিবন্দি অসহায় পরিবারের জন্য ত্রাণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, ভাঙনস্থল পরিদর্শন করেছি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে কুশিয়ারা নদীর তীরঘেঁষা বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নে সবকটি গ্রাম প্রাবিত হওয়ায় প্রায় ১২হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
বালাগঞ্জ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের সম্মুখের রাস্তা, বালাগঞ্জ বাজারে ভিতরের রাস্তা, বালাগঞ্জ ডিএন মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ, তয়রুন নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশের রাস্তা ও মাঠ, ইউআরসি অফিসের রাস্তা, উপজেলা প্রশাসনের মূল সড়ক ও উপজেলা প্রশাসনের মাঠ পানিতে ডুবিয়ে গেছে এবং উপজেলা প্রশাসনিক ভবনের নিচতলার অফিসগুলোর ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে।
বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, তার ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় এসব গ্রামের প্রায় ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, বোরো ফসল হারানোর পর মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এসব এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানান।
বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদাল মিয়া বলেন, পানি বৃদ্ধিতে কুশিয়ারা ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইউএনওকে নিয়ে আমরা আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ