Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রেমিট্যান্স আরও কমার পূর্বাভাস আইএমএফের

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : গত দুই বছরের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরেও প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আরও কমবেÑ এমন পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা আইএমএফ। এবার রেমিট্যান্স আয় ১২ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি হওয়ার কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ প্রায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা। মূলত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ায় এই আশঙ্কা করছে আইএমএফ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যালোচনা করে রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়ে এসব মন্তব্য করেছে আইএমএফ। আর্টিকেল ফোর মিশনের আওতায় এই পর্যালোচনা করেছে সংস্থাটি।
রেমিট্যান্স সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের হলনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) ১ হাজার ১৫৫ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার বা ১৪ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার।
আইএমএফের মতে, রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার অন্যতম দুটি কারণ হলো অনানুষ্ঠানিকভাবে (হুন্ডি) রেমিট্যান্স পাঠানো বেড়েছে। এর পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর অর্থনীতি দুর্বল হয়েছে এবং প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনযাত্রার খরচও বেড়েছে।
আইএমএফ বলছে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বছরে ৬শ কোটি ডলার থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সাড়ে ৮ শতাংশের সমান। বার্ষিক রেমিট্যান্স প্রবাহ সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের প্রায় আট গুণের সমান। বাংলাদেশে প্রতিবছর যত রেমিট্যান্স আসে, এর অর্ধেকই আসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে।
আইএমএফ আরও বলেছে, পাঁচ বছর ধরে পরমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লেও জিডিপিতে এর অংশ কমেছে। এখন রেমিট্যান্সের পরিমাণই কমে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে ৫ শতাংশ।
আইএমএফের মতে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো বিদেশি শ্রমিক নিয়োগের অন্যতম অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। শ্রমিকদের সিংহভাগই যান দক্ষিণ এশিয়া থেকে। কয়েক বছর ধরে ওই অঞ্চলে বাংলাদেশি শ্রমিকদের যাওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই জ্বালানি তেলের কম দাম মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতির অবস্থানকে দুর্বল করে দিয়েছে। অর্থনীতি সামাল দিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মুদ্রানীতি কঠোর করেছে। ওই সব দেশের সরকার নিজেদের অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। এর ফলে শ্রমিকের চাহিদা কমেছে। অন্যদিকে শ্রমিকের জীবনযাত্রাও ব্যয়বহুল হয়েছে। জীবনযাত্রা ব্যয়বহুল হয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের সঞ্চয় কমে গেছে এবং দেশে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা কমেছে।
হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স কমেছে বলে মনে করে আইএমএফ। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানো এখনো অব্যাহত আছে। অনানুষ্ঠানিক মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসার ফলে তা সরকারি পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত হয় না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ