মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : বর্তমানে বেশি বেতনের উচ্চযোগ্যতাসম্পন্ন ও কম মজুরির অদক্ষ কর্মীদের ভিড়ে মাঝারি দক্ষতার চাকরি হারিয়ে যেতে বসেছে। এতে শ্রম বাজারে সৃষ্ট বিভাজন তথা আয়বৈষম্যের কারণে সামাজিক সংহতি হুমকির মুখে পড়েছে। দি অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ওইসিডি) পক্ষ থেকে স¤প্রতি এ সতর্কবার্তা দেয়া হয়। বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ওইসিডির মহাসচিব অ্যাঙ্গেল গুরিয়া বলেন, বর্তমানে আয়বৈষম্য যেভাবে বেড়ে চলেছে তা অতীতে কখনো দেখা যায়নি। এ ধরনের পরিস্থিতি সামাজিক সুসংহতিকে ঝুঁকির দিকে ঠেলে দেয়। ধনী দেশগুলোয় শ্রমবাজারে বিভাজনের কারণে আয়বৈষম্য বেশি বেড়ে যাচ্ছে। দেখা গেছে, ওইসিডির ৩৫টি শীর্ষ ধনী সদস্য দেশে ১৯৯৫ থেকে ২০১৫Í এই ২০ বছরে মধ্যম শ্রেæীর কর্মহার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। বিপরীতে বেশি দক্ষতা প্রয়োজন এমন কাজের হার বেড়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। এছাড়া বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন নেই এমন কায়িক পরিশ্রমের কাজ ২ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি বেড়েছে। ওইসিডির প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, চাকরির ক্ষেত্রে মধ্যমশ্রেæীর দক্ষদের চাহিদা কমে এসেছে। ফলে নিম্ন ও মধ্যবর্তী শ্রেæীদের উপার্জন না বেড়ে স্থবির অবস্থায় রয়েছে। পরিস্থিতি এই পর্যায়ে নেমে আসার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। তার মধ্যে সিংহভাগ ধনী দেশগুলোয় প্রযুক্তিগত পরিবর্তনকেই বেশি মাত্রায় দায়ী করছে ওইসিডি। শ্রমবাজারে এই বিভাজন সৃষ্টির পেছনে অনেক দেশের সস্তা শ্রমে ঝুঁকে পড়ার প্রবণতাকেও দায়ী করা হয়েছে। ফলে দক্ষ ও অদক্ষ কাজের হার বেড়ে যাওয়াতে উচ্চ ও নিম্ন আয়ের মধ্যে ব্যবধান ক্রমে বেড়ে যাচ্ছে। আর এ কারণেই দরিদ্রতম ১০ শতাংশের উপার্জনের নয়গুণ বেশি সম্পদ শীর্ষ ১০ শতাংশ ধনীর হাতে জমা পড়ে রয়েছে। এখন থেকে ২৫ বছর আগের সময়ের সঙ্গে তুলনা করলে এই অনুপাত প্রায় সাত গুণ বেশি। আয়বৈষম্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক ধরনের উদ্বেগও বেড়ে চলেছে। আর তা হচ্ছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি অসামঞ্জস্যপূর্ণ অংশের ভাগীদার হয়ে যাচ্ছেন শীর্ষ উপার্জনকারীরা। কর্মসংস্থান ও বেকারত্বের হারের দিকে লক্ষ রাখার পাশাপাশি নীতিনির্ধারকদের বেতন এবং কর্মনিরাপত্তার দিকেও মনোযোগ দেয়া উচিত। শুধু তাই নয়, কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ কর্মীদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার পরামর্শও দিয়েছে ওইসিডি। সেসঙ্গে শ্রমবাজারকে আরো নমনীয় করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এছাড়া শ্রমবাজারকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে যেকোনো অর্থনৈতিক কঠিন সময় অথবা প্রযুক্তিগত সংকট সহজে সামলে নেয়া যায়। বিশ্ব-অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে থাকলেও সমস্যা রয়েছে: চলতি দশকে উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো সমপ্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি সেরা সময় পার করছে। আশা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে। তবে উদীয়মান দেশগুলোয় বিনিয়োগে নিজস্ব নিরাপদ সম্পদের অভাব থাকায় এক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। হেজ ফান্ড ম্যানেজার স্টিফেন জেন এ কথা জানিয়েছন। চীনসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশ সম্পদ পুঞ্জীভূত করে যাচ্ছে। কিন্তু তারা এমন কোনো স্থানীয় বাজার তৈরি করতে পারছে না যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে তারা ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারবে। এর ফলে মার্কিন ট্রেজারির ওপর বিপজ্জনকভাবে তাদের নির্ভরশীলতা বাড়ছে। এছাড়া উদীয়মান বাজারগুলোর আরেকটি সমস্যা হচ্ছে এখানে তারা মার্কিন ট্রেজারি, জার্মানির বন্ড ও ব্রিটেনের বন্ডের মতো এমন কোনো নিরাপদ সম্পদ তৈরি করতে পারেননি, বিনিয়োগকারীরা যেখানে কঠিন সময়ে অর্থ লগ্নি করতে পারবে। আর এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হলে অবশ্যই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কঠোর আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনে যেকোনো সময় লগ্নিকৃত অর্থ তুলে নেয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে জেন আরো বলেন, অব্যাহত প্রবৃদ্ধির মধ্যে থাকলেও সেভ-হ্যাভেন নামে পরিচিত বিনিয়োগের নিরাপদ সম্পদ তৈরি করতে পারেনি উদীয়মান দেশগুলো। এর ফলে গতানুগতিক সেভ-হ্যাভেনগুলোর সরবরাহ কমে গিয়ে ক্রমে দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভসহ (ফেড) অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো নিজস্ব সরকারি বন্ড কিনে নেয়ায় এই ঘাটতি আরো বাড়ছে। এএফপি, বøুমবার্গ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।