কদর রাত তালাশ করা
এ. কে. এম ফজলুর রহমান মুন্শী : সহীহ বুখারী শরীফে হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : তোমরা রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোড় তারিখে লাইলাতুল কদর বা কদর রাত তালাশ কর।
এই হাদীসে রসূলুল্লাহ (সাঃ) কদর রাত খুঁজে বের করার জন্য চেষ্টা ও সাধনা করতে উম্মাতে মুহাম্মদীকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই রাতটি খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তা এজন্য দেখা দিয়েছে যে, কুরআন মাজীদ ও হাদীসে এই রাতের মর্যাদা ও মাহাত্ম্যের কথা বলিষ্ঠকণ্ঠে ঘোষিত হয়েছে বটে, কিন্তু সে রাত যে কোনটি, অখÐ ও অব্যাহতকালের স্রোতের মধ্যহতে কোন্ অংশটি কদর রাত নামে অভিহিত, তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি। যদি দেয়া হত, তাহলে কোনরকম দুশ্চিন্তার অবকাশই থাকত না। কিন্তু খুঁজে বের করার কাজ সহজতর হওয়ার লক্ষ্যে কতগুলো দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এক: আল কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে: কদর রাতে কুরআন নাযিল হয়েছে। দুই: কদর রাত রমজান মাসে এসে থাকে। তিন: রমজান মাসের শেষ দশকে আসে। চার: রমজান মাসের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর কোন একটিতে আসে। বেজোড় রাতগুলো হলো ২১-২৩-২৫-২৭-২৯ তারিখের রাত। অতএব এই তারিখসমূহে কদর রাত তালাশ করতে হবে। পাঁচ: সহীহ বুখারী ও সুনানে নাসাঈতে খলীফাতুল মুসলিমীন ওমর (রাঃ) ও হযরত আবু যর (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে বলা হয়েছে যে, মাহে রমজানের শেষ সাত দিনের কোন একটিতে কদর রাত তালাশ কর। ছয়: সহীহ বুখারী জামে তিরমিজী, সুনানে নাসাঈ, মুস্তাদরাকে হাকেম গ্রন্থে উদ্ধৃত ও হযরত আবু বক্রাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: রমজান মাসের শেষ নয় দিন, কিংবা পাঁচ দিন, অথবা তিন দিন অবশিষ্ট থাকতে কিংবা সর্বশেষ রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ কর। ইমাম তিরমিজী ইমাম নাসাঈ ও ইমাম হাকেম এক বাক্যে বলেছেন যে, উপরোক্ত হাদীসটি উত্তম সনদে বর্ণিত হয়েছে এবং এই দিক-নির্দেশনা খুবই স্পষ্ট ও আসল ব্যাপারের খুবই নিকটবর্তী। যার ফলে কদর রাত খোঁজ পাওয়া বিন্দুমাত্র কঠিন বা অসুবিধাজনক থাকল না।