Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রায়পুরার বাঁশগাড়ীর দুর্র্ধর্ষ লাঠিয়াল সর্দার আ,লীগ নেতা সাহেদ সরকার গ্রেফতার

| প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘাটিয়ে অবশেষে গ্রেফতার হয়েছেন রায়পুরার দুর্গম চরাঞ্চলের অশান্ত জনপদ বাঁশগাড়ীর দুর্ধর্ষ লাঠিয়ালদের প্রধান নেতা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাহেদ সরকার। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ তাকে সদর উপজেলার বাদুয়ারচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, অস্ত্রবাজী, বোমাবাজী ও চাঁদাবাজীর ২০টি মামলা রয়েছে। এই ২০টি মামলায়ই তিনি পলাতক ছিলেন। এলাকার লোকজন জানিয়েছে, পুলিশ ও আইনের চোখে পলাতক থাকলেও তিনি এতদিন প্রকাশ্যেই ঘোরাফেরা করেছেন। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে তার আত্মীয়-স্বজন থাকায় পুলিশ তাকে এতদিন গ্রেফতার করতে সাহস পায়নি। উচ্চ পর্যায়ে আত্মীয়-স্বজন থাকার সুযোগ নিয়েই তিনি রায়পুরার এমপি সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে বন্দুক ও টেটা যুদ্ধে লিপ্ত হবার সাহস পেয়েছেন। সাহস দেখিয়েছেন বিশাল সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে পুলিশকে আহত করে আসামী ছিনিয়ে নেয়ার। গত ২১ মে স্থানীয় এমপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু উভয় পক্ষকে ডেকে সালিস দরবারের মাধ্যমে ঘটনার মিমাংসা দেয়ার পরও তিনি সালিসি মিমাংসাকে অমান্য করে এমপি রাজু সমর্থিত চেয়ারম্যান সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে তার লাঠিয়াল বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়ায় এলাকায় আবারো বন্দুক যুদ্ধের আশংকায় পুলিশ মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়। গ্রেফতারের পর পুলিশ তাকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে সোপর্দ করে। পুলিশের বক্তব্য শোনানীর পর আদালত তার ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এরপর থেকে সাহেদ সরকারের বাহিনী এলাকা দখলে নিয়ে এলাকায় ব্যাপকভাবে বোমাবাজী, অস্ত্রবাজী ও চাঁদাবাজীতে লিপ্ত হয়। লাঠিয়ালরা কয়েকশত বাড়ীঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। লুটে নেয় কোটি কোটি টাকার সম্পদ। রায়পুরা থানায় ৭টি হত্যাকান্ডসহ ৪১ টি মামলা দায়ের করা হয়। এ অবস্থায় বাঁশগাড়ী এলাকার কয়েকটি গ্রাম লাঠিয়ালদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠলে রায়পুরার এমপি ও সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু সিরাজুল হক ও সাহেদ সরকারকে ডেকে বিরোধ মিমাংসা করার কথা বলে। বিরোধ মিমাংসার আলোচনা চলাকালেই সাহেদ সরকারের বাহিনী এলাকায় ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট শুরু করলে পুলিশ লাঠিয়ালদেরকে গ্রেফতার করার জন্য এলাকায় অভিযান চালায়। পুলিশ সাহেদ সরকারের প্রধান লাঠিয়াল সর্দার রুপ মিয়া মেম্বার, আজিজুল, হাবিবুর ও জাকিরসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করার পর সাহেদ সরকারের বাহিনী বন্দুক, বোমা ও টেটা নিয়ে পুলিশ বাহিনীর উপর হামলা চালিয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে কয়েকটি মামলা দায়ের করে। এ খবর গতকাল মঙ্গলবার দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশের পর সম্ভাব্য বন্দুক ও টেটা যুদ্ধ ঠেকাবার জন্য সাহেদ সরকারকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়। সাহেদ সরকারের গ্রেফতারের ঘটনাকে শান্তিপ্রিয় জনগন পুলিশের একটি বিশাল সফলতা বলে বর্ননা করেছে। তবে চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে গ্রেফতার করা হলে এলাকার জনগনের মধ্যে আরো স্বস্তি ফিরে আসবে বলে জানিয়েছে লোকজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ