Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আতঙ্কে ছাত্রী শিক্ষক ও অভিভাবক মহল নেত্রকোনায় ২৪ ঘন্টায় চার শিশু ধর্ষিত

| প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা : নেত্রকোনায় ২৪ ঘন্টায় মধ্যে পৃথক পৃথক স্থানে চার শিশু ধর্ষিত হওয়ায় এলাকাবাসী, ছাত্রী শিক্ষক ও অভিভাবকদের মাঝে চরম আতঙ্ক, উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। জানা যায়, গত রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে সাতপাই রেলক্রসিং এলাকার রকিবুলের বখাটে ছেলে ইমন ১৩ বছরের শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুটিকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। শিশুটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ধর্ষক ইমনকে (১৬) হাতে নাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে শিশুটিকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাইফুল বারী জানান, প্রাথমিক পরীক্ষায় যৌন নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে।
এদিকে আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের টেংগা গ্রামের মোঃ সঞ্জু মিয়ার ছেলে জামাল উদ্দিন (২০) গত রোববার রাতে তারই প্রতিবেশী ১৩ বছরের এক মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। আটপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রমিজুল হক জানান, ছাত্রীটির বাবা ও মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে জামাল উদ্দিন রোববার রাতে তাদের বাড়িতে যায়। এ সময় বাড়িতে থাকা ৭০ বছর বয়সী দাদা ও ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইসহ ছাত্রীটিকে কৌশলে খাজা’র (মিষ্টি জাতীয় খাদ্য) সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছাত্রীটিকে ধর্ষণ করে জামাল। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে পুলিশ খবর পাওয়ার পরপরই ভিকটিমকে উদ্ধার করে আটপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্যে ভর্তি করা হয়। পরে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, সোমবার বিকাল চারটার দিকে পুলিশ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত জামাল উদ্দিনকে আটক করেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়েরে করা হয়েছে।
অপরদিকে মোহনগঞ্জ উপজেলার দেওতান গ্রামে গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশি এক লম্পট কর্তৃক আট বছরের এক শিশু ধর্ষিত হয়েছে। জানা যায়, মোহনগঞ্জের দেওতান গ্রামে আট বছরের শিশু মাইলোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে বাড়িতে রেখে মা মোহনগঞ্জ গেলে তারই প্রতিবেশি মহব্বত আলীর ছেলে লিমন মিয়া (১৮) ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটির মা বাড়িতে এসে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে কাথরাতে দেখে মোহনগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ধর্ষককে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।
অন্যদিকে কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী লেংগুড়া ইউনিয়নের জিগাতলা গ্রামে ৫ সন্তানের জনক কর্তৃক তৃতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রী (১৩) ধর্ষিত হয়েছে। জানা যায়, জিগাতলা গ্রামের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রীটি গত রোববার রাতে তার নিজ বসত ঘরে দাদীর সাথে ঘুমাচ্ছিল। তারই প্রতিবেশী মৃত আবেদ আলীর ছেলে ৫ সন্তানের জনক মোঃ আব্দুস সালাম সু-কৌশলে বসত ঘরে ঢুকে শিশুটিকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। ওই রাতেই ধর্ষিতার পিতা কলমাকান্দা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ ঝটিকা অভিযান চালিয়ে ধর্ষক সালামকে আটক করে। অভিযুক্ত সালামের পরিবারের দাবি, শিশুটির বাবার সাথে তাদের দীর্ঘদিন যাবৎ ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবু বকর ছিদ্দিক ধর্ষনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে থানায় ছালামের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। ভিকটিমকে উদ্ধার করে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির অন্যতম সদস্য সাংবাদিক আলপনা বেগম বলেন, সমাজে এক ধরণের অস্থিরতার কারণে নারী ও শিশু নির্যাতন দিন দিন বেড়েই চলেছে। মাদক দ্রব্যের সহজলভ্যতা আর অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতির কারণের একের পর এক শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। ইতিমধ্যেই তিন জন ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর ধর্ষককে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষিত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ