Inqilab Logo

বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সঞ্চয়পত্র বিক্রির রেকর্ড

| প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সঞ্চয়পত্র বিক্রি ক্ষেত্রে আগের সব রেকর্ড অতিক্রম হয়েছে। গত (২০১৬-১৭) অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রে ১১ মাসেই নিট বিনিয়োগ এসেছে ৪৬ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের অর্থবছরের পুরো অর্থবছরে নিট বিনিয়োগ এসেছিল ৩৩ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়েছে ১২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার।
অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, বর্তমানে ব্যাংক আমানতের সুদের হার ৪ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে। অন্যদিকে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের সুদ হার ১১ থেকে ১২ শতাংশের মতো। বেশি সুদ পাওয়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে খুব বেশি আশার খবর না থাকায় সা¤প্রতিক বছরগুলোতে সঞ্চয়পত্রই সাধারণ নাগরিকদের কাছে বিনিয়োগের নিরাপদ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখন সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হলে আগের হারে মুনাফা মিলবে না। এই আশংকা থেকেই গত মাস খানেকের বেশি সময় ধরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির হিড়িক পড়েছে।
জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তরের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার। পরে সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ৪৫ হাজার কোটি টাকা গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আলোচ্য অর্থবছর শেষে দেখা যায়, সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও অতিক্রম করেছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। ওই অর্থবছরের ১ মাস হাতে রেখেই এই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিক্রি হয়েছে ৪৬ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। অর্থাৎ ১১ মাসেই লক্ষ্যমাত্রা থেকে ১ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। একক মাস হিসাবে মে মাসে বিক্রির পরিমাণ ৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা।
এছাড়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরের মূল বাজেটে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল ১৫ হাজার কোটি টাকা। সুদের হার কমানোর পরও বিক্রি না কমায় সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ২৮ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়। অর্থবছর শেষে দেখা যায়, সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ৩৪ হাজার ১৫২ কোটি টাকা ধার হয়েছে।
সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়েই সরকারকে এই ঋণ বহন করতে হচ্ছে; গুণতে হচ্ছে সুদ। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারলে সরকারের বাজেট ব্যবস্থাপনা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ার করে আসছিলেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা।
বাজেটের সমাপনী বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী সঞ্চয়পত্র সম্পর্কে বলেন, আমি দেশবাসীকে জানাতে চাই যে, অনন্তকালের জন্য সঞ্চয়পত্রের সুদের হার নির্দিষ্ট থাকতে পারে না। সুদের হারের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে, মূল্যস্ফীতি বাড়লে সুদের হার বাড়ে আর মূল্যস্ফীতি কমলে সুদের হার কমে।
বিষয়টি তাই আমাদের পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
বাজেট ঘাটতি মেটাতে প্রতি বছরই অভ্যন্তরীণ উৎস ব্যাংকের পাশাপাশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ নেওয়ার একটি লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে সরকার। ২০১০-১১ সালের দিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতো না সরকার। তখন সাধারণ মানুষ ও বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি ছিল ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের দিকে। তবে পুঁজিবাজারে ধস এবং ব্যাংক আমানতের সুদ ধীরে ধীরে কমতে থাকে। অন্যদিকে সঞ্চয়পত্রের সুদহার বাড়িয়ে দেয় সরকার। ফলে সঞ্চয়পত্রে সাধারণ মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সঞ্চয়পত্র

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ