Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে

সংসদে অর্থমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, আর্থিক খাত ব্যবহার করে কোন ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান যাতে সন্ত্রাসে অর্থায়ন করতে না পারে সেজন্য একটি শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে কোন হিসাব পাওয়া গেলে অবিলম্বে তার লেনদেন স্থগিত করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এতথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের উত্তর দেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো জানান, ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্সের নির্দেশানুসারে প্রতিটি রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থায় যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচার সংক্রান্ত জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমানের সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বিষয়টি সরকারের নজরে রয়েছে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাংলাদেশের টাকা বিদেশে পাচার হবে, এর বিরুদ্ধে সরকার অবশ্যই গ্রহণ করবে।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী শীর্ষ একশ’ ঋণখেলাপী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তথ্য ব্যুরোর (সিআইবি) ডাটাবেজে রক্ষিত গত এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ কার্যরত তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের খেলাপী ঋণের পরিমাণ এক লাখ ১১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।
মোবাইল ব্যাংকিং-এ দৈনিক ৮৪৪ কোটি লেনদেন \ সরকারী দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি বছরের মে মাসের হিসাব অনুযায়ী বর্তমান মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)- এর মাধ্যমে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ ৮৪৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। দৈনিক গড় লেনদেনের সংখ্যা ৪৯ লাখ ৫ হাজার। তিনি আরো জানান, বর্তমানে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের এজেন্ট সংখ্যা ৭ লাখ ৪৬ হাজার এবং সর্বমোট গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ২৬ লাখ। বর্তমানে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে প্রদানরত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১৭টি।
বৈদেশিক সাহায্য নির্ভরশীলতা হ্রাস পেয়েছে \ স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল মতিনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী সংসদে জানান, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ১৯৮০ থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির প্রায় গড়ে ৫১ ভাগ বৈদেশিক সাহায্য হতে অর্থায়ন করা হতো। যা ১৯৯১-২০০০ পর্যন্ত ৪৪ ভাগ এবং ২০০১-২০১০ পর্যন্ত ৩৭ ভাগে হ্রাস পেয়েছে। গত ২০১১-১৬ সময়ে এডিপি’র গড়ে প্রায় ৩৪ ভাগ বৈদেশিক সহায়তা হতে অর্থায়ন করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরো জানান, বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের পর্যায়ে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এসকল লক্ষ্য অর্জনের জন্য দেশে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক ও প্রাইভেট সেক্টর বিনিয়োগ আবশ্যক। এছাড়াও আগামীতে বাংলাদেশকে ৭ ভাগ হতে ৮ ভাগ বা এর অধিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে জিডিপি’র শতকরা ৩০-৩৫ ভাগ অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব হতে এ পরিমাণ বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে বৈদেশিক সাহায্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালনে সক্ষম।
আওয়ামী লীগের সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের পর্যাপ্ততা/উর্ধগতি ও আন্তর্জাতিক বাজারে সুদহারের গতিবিধি বিবেচনায় ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড ও ইনভেস্টমেন্ট বন্ডের পাশাপাশি একই ধরনের মুনাফার হার সম্বলিত ইউরো ও পাউন্ড স্টার্লিং বন্ড প্রবর্তনের বিষয়টি যথাসময়ে বিবেচনা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ