Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরিতে আদালতের নির্দেশনা নিন

ইসির প্রতি বিশেষজ্ঞদের আহবান

| প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পঞ্চায়েত হাবিব : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। নির্বাচনে অংশ নেয়া রাজনীতিক দলগুলো যাতে সমানভাবে সভা সমাবেশ করতে পারে সে বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিদের্শনা নিতে পারে কমিশন। তা করতে না পারলে ক্ষমতাসীন দল সভা সমাবেশে নির্বাচনী প্রচারনা চালিয়েই যাবে। আর বিরোধী দলগুলো সভা সমাবেশ করতে গিয়ে পুলিশী বাধায় পড়বে। কারণ সরকারি দল চায় না বিএনপিসহ বিরোধী দল নির্বাচনী প্রচারণায় সমান সুযোগ ভোগ করুক। এ জন্য তারা আইন শৃংখলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে। প্রচারণায় সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে না পারলে রোডম্যাপ ঘোষণা দিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে না নির্বাচন কমিশন। কারণ ক্ষমতাসীনরা নিজেরা সভা সমাবেশ করছে; অথচ বিরোধী দলগুলোকে তা করতে দিচ্ছে না। এমনকি ঘরোয়া ভাবেও আলোচনায় বাধা দেয়া হচ্ছে। গতকাল রবিবার নির্বাচন কমিশনের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এভাবেই ইনকিলাবকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমদ, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ সুজনের সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।
জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের রোড়ম্যাপ ঘোষণার পর সকল রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পরিবেশ তৈরি করা দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কারণ রাজনৈতিক দলগুলো কমিশনের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল। সেই রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকার সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে না। তার জন্য কমিশন উচ্চ আদালতের নিদের্শনা নিতে পারে। তা না করতে পারলে রোডম্যাপ ঘোষণা দিয়ে কিছুই হবে যে লাউ সেই কদু।
তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সুজনের সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, আমার মনে হয় এ কমিশন দিয়ে জাতীয় নির্বাচন হবে না। কমিশন রোডম্যাপ ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক সভাসমাবেশ বেশি করে করতে পারে। সেখানেই সিইসি বলে, এ মুহূর্তে সরকার কীভাবে পরিচালিত হবে ও রাজনৈতিক কর্মপরিবেশের বিষয়গুলো আমাদের এখতিয়ারে নয়। সরকারের কর্মকান্ডে এখনই কমিশন হস্তক্ষেপ করবে না। তার বক্তব্য সঠিক নয়। সরকারি দল সারা বছর সরকারি টাকায় সভাসমাবেশ করবে আর বিরোধী দলগুলো ভোটের একমাস আগে পাবে তা তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলো না। সকল রাজনৈতিক দলের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হলে এখন থেকে দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে সভা সমাবেশ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে ইসিকে। তা না হলে নির্বাচন কমিশন উচ্চ আদালতের নিদের্শনা নিতে পারে।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ক্ষমতাসীনরা কখনোই চায় না তাদের বিরোধী মতের রাজনৈতিক দলগুলো সভা সমাবেশ করুন। আগামী একাদশ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে এখন থেকে রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সব দলকে সমানভাবে সভা সমাবেশ করতে দিতে হবে। এটা করতে দেয়ার সব দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন কমিশন। সরকারের সদিচ্ছা না থাকলে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় এবং জনগণ ওই নির্বাচন মেনে নেবে না।
সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে কমিশনের স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের বিধান রয়েছে। সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা, দায়িত্বশীলতা ও জবাবদিহিতা প্রদর্শন করা আরও বেশি জরুরি। সেখানে রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পরিবেশ তৈরি করা দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। এটা করতে না পারলে দেশের জন্য ক্ষতিকর। আইন ও আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনকে কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও বদলি-সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কমিশনের সদস্যদের যৌথ সিদ্ধান্তে নিতে হবে। কারণ নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতি কমিশনের নির্বাচন সংক্রান্ত দায়িত্বের সাথে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট। এর ব্যত্যয় ঘটলে কমিশন নিজেই আইন ভঙ্গ করবে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আশা করি যে, মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ বিষয়টি আমলে নিবেন।



 

Show all comments
  • Md.sadek ১৭ জুলাই, ২০১৭, ৪:০৩ এএম says : 2
    Very good idea. Thank you
    Total Reply(0) Reply
  • Rahman ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১০:৪৩ এএম says : 1
    So-called level playing field is not the matter of election commissioner. After declaring TOFSIL for national election, election commission will take necessary step to arrange a fair and credible election. Mr. Hafiz, Mr. Bodi are exploiting people in the wrong concept.
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ আনিছুর রহমান মুকুল ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১১:০৯ এএম says : 1
    মনে হয় না কোন লাভ হবে! তারপরও আদালতে যাওয়া উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Saleh Bablu ১৭ জুলাই, ২০১৭, ১১:০৯ এএম says : 1
    Absolutely 100% Good idea.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ