Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আগামী চার বছর একের পর এক সিনেমা নির্মাণ করব -ডিপজল

একের পর এক সিনেমা নির্মাণের উদ্যোগ

| প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিনেদন রিপোর্ট: চলচ্চিত্রের দুঃসময়ে আবারও হাল ধরেছেন মুভি লর্ড খ্যাত ডিপজল। যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণার সিনেমার আন্দোলনে তিনি যেমন জোরালো ভূমিকা পালন করছেন, তেমনি নিজেও চলচ্চিত্রের বাজার ফেরাতে একের পর এক সিনেমা নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী চার বছর একটানা চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। তার এই পরিকল্পনার মধ্যে ইতোমধ্যে পাঁচটি সিনেমা নির্মিত হয়েছে। এফ আই মানিক পরিচালিত এ দেশ কার, সৌভাগ্য সিনেমা দুটি মুক্তির জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। এছাড়া গতকাল শেষ করলেন মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত দুলাভাই জিন্দাবাদ সিনেমার শূটিং। এ সিনেমার পর শূটিং শুরু করতে যাচ্ছেন শাহিন সুমনের পরিচালনাধীন মেঘলা, এক কোটি টাকা এবং বুকের কষ্ট। মেঘলার শূটিং শেষ করার পরপরই শুরু করবেন বুকের কষ্ট সিনেমার কাজ। এরপর আরও সাতটি সিনেমার কাজ পর্যায়ক্রমে শুরু করবেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, অশ্লীল সিনেমার আগ্রাসনে চলচ্চিত্র থেকে দর্শক যখন দূরে সরে গিয়েছিলেন, তখন ২০০৬ সালে এফ আই মানিককে নিয়ে তিনি কোটি টাকার কাবিন নির্মাণ করে চলচ্চিত্রের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। চলচ্চিত্রকে সুস্থ্য ধারায় তিনি নিয়ে আসেন। এ সিনেমার পর চাচ্চু, মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি, কাজের মানুষের মতো সুপার-ডুপার হিট সিনেমা নির্মাণ ও মুক্তি দিয়ে তিনি চলচ্চিত্রকে সুস্থ্য ধারায় নিয়ে আসেন। সেই থেকে চলচ্চিত্র আজ অবদি অনেকটা সুস্থ্য ধারায় বজায় রয়েছে। তবে এ সময়ে এসে সময়োপযোগী ভাল গল্প, নির্মাণ কৌশল এবং যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণার সিনেমার আগ্রাসনে চলচ্চিত্র মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ প্রেক্ষিতে আবারও চলচ্চিত্রের মোড় ঘুরাতে তিনি উদ্যোগী হয়েছেন। একের পর এক সিনেমা নির্মাণের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন। মুভি লর্ডের সাথে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলচ্চিত্রে এখন দুঃসময় চলছে। আমরা নিজেরা দর্শকের মনের মতো গল্প এবং নির্মাণ কৌশল উপহার দিতে না পারায়, তারা মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের সিনেমার দর্শক এখনো আছে। প্রয়োজন শুধু তাদের চাহিদা অনুযায়ী সিনেমা নির্মাণ ও মুক্তি দেয়া। আমি এখনও বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করি, আমার অভিনীত যেসব সিনেমা টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচার করা হয়, সেসব সিনেমা দর্শক অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে দেখেন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী সিনেমাগুলো নির্মিত হয়েছিল বলেই তো টেলিভিশনে দেখছেন। তারা যদি এসব সিনেমা টেলিভিশনে দেখতে পারেন, তবে নিশ্চয়ই হলে গিয়েও বড় পর্দায় সিনেমা উপভোগ করবেন। প্রয়োজন শুধু তাদের মন অনুযায়ী সিনেমা নির্মাণ করা। তিনি বলেন, আমার একেকটি সিনেমার গল্প তৈরি করতে চার থেকে পাঁচ মাস লাগে। অত্যন্ত গবেষণা করে গল্পগুলো তৈরি করতে হয়। দর্শক কি চায়, কি দেখতে চায়-এসব বিষয় মাথায় রেখে গল্প সাজাই। শূটিংয়ের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে শুরু করে নান্দনিক শূটিং লোকেশন ও বড় ধরনের আয়োজন থাকে। একটি পূর্ণাঙ্গ সিনেমা তৈরি করতে যে ধরনে প্রস্তুতির প্রয়োজন, তার সবই অবলম্বন করা হয়। তিনি বলেন, দর্শকের চাহিদা মতো যদি সিনেমা নির্মাণ করা হয়, তবে তারা কেন দেখবেন না! তাদের মুখ ফিরিয়ে নেয়ার কোনো কারণ নেই। আমাদের অধিকাংশ নির্মাতা সিনেমা বানান তাদের ইচ্ছামতো, দর্শক কি চায়-এ বিষয়টি মাথায় রাখেন না। এ কারণে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সমন্বয় করে সিনেমা নির্মাণ করতে হবে। আমাদের দেশের গল্পের সিনেমা হতে হবে। আমাদের পরিবার, সমাজ ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে যদি আধুনিকভাবে সিনেমা দর্শকদের উপহার দেয়া হয়, তবে সিনেমা না দেখার কোনো কারণ নেই। মূল বিষয় হচ্ছে, পরিকল্পনা করা। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সিনেমার এই দুঃসময়ে আবারও একের পর এক সিনেমা নির্মাণ করে মুক্তি দেয়ার। আগামী তিন থেকে চার বছরের একটি পরিকল্পনা নিয়েছি। এ সময়ের মধ্যে বিরতীহীনভাবে সিনেমা নির্মাণ ও মুক্তি দেব। আমি মনে করি, এখন সময় এসেছে আমাদের দেশের সিনেমা নির্মাণ করার। যৌথ প্রযোজনার সিনেমা হওয়া দোষের কিছু নয়, তবে তা নিয়ম ও নীতিমালা হতে হবে। সম্প্রতি যেসব যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নির্মিত হয়েছে, সেগুলো যৌথ প্রযোজনার নিয়ম নীতি অনুযায়ী নির্মিত হয়নি। আমার আপত্তি এখানেই। এ ধরনের সিনেমা আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বিকিয়ে দিয়ে বিদেশি সংস্কৃতিকে তো অবাধে চলতে দিতে পারি না। সংস্কৃতি বিনিয়ম হতে হবে সমানে সমান। ডিপজল বলেন, যুগের পর যুগ দর্শক আমাদের সিনেমাই দেখেছে। তারা আমাদের সিনেমা দেখে অভ্যস্ত। এখনও আমাদের সিনেমাই দেখতে চায়। এটা আমাদের নির্মাতাদের বুঝতে হবে। দর্শকের মন মানসিকতা অনুধাবন করতে হবে। তা নাহলে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেবে। আমি এ বিষয়টি উপলব্ধি করেই পুনরায় একের পর এক দেশের সিনেমা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, সিনেমাগুলো মুক্তি পেলে চলচ্চিত্রের মন্দাবস্থা অনেকটাই কেটে যাবে। আমি আমাদের নির্মাতাদের আহ্বান জানাবো তারাও যেন দেশের সিনেমা দর্শকের মন অনুযায়ী সিনেমা নির্মাণে এগিয়ে আসেন।



 

Show all comments
  • Laboni ১৮ জুলাই, ২০১৭, ১১:৪৭ এএম says : 0
    Asa na dekhiya kaj korun
    Total Reply(0) Reply
  • selina ২০ জুলাই, ২০১৭, ৮:৩৯ এএম says : 0
    Now the era of internet so the said project financially and socially not feasible .
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ