Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

কোচের সঙ্গে বিরোধ নেই মাশরাফির-- আফসোস নেই, আছে তৃপ্তি

| প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : একবার নয়, দুইবার নয়, তিনি সাত-সাতবার চিকিৎসকের ছুরি কাঁচির নিচে গেছেন। এ রেকর্ড তাকে বানিয়ে দিয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে ইনজুরিপ্রবণ ক্রীড়াবিদদের একজন। কিন্তু অন্যদের সাথে বাংলাদেশের ৫০-ওভার ফরম্যাটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার একটি ছোট্ট পার্থক্য আছে। আর তা হলো, তিনি ইনজুরির কাছে হার মেনে নেননি। বরং খেলাটিকে ভালোবেসে, তারচেয়েও বেশি দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে, এখনো খেলে চলেছেন প্রবল প্রতাপে। তাই মাশরাফিকে নিছক কোন ক্রিকেটার ভাবলে ভুল হবে। অনেক বড় ভুল হবে। কারণ তিনি যে ¯্রফে ক্রিকেটার নন। তিনি একজন যোদ্ধা, তিনি একটি দেশের আলোর মশাল হাতে এগিয়ে চলা কান্ডারি।
কিন্তু তারপরও, এ কথা স্বীকার না করে উপায় নেই যে বারবার ইনজুরির অহেতুক হানার কবলে পড়তে না হলে, মাশরাফির ক্যারিয়ার আরও লম্বা হতে পারত। তার নামের পাশের নম্বরগুলো আরও অনেক বেশি আলো ঝলমলে হতে পারত। এ নিয়ে কি মাশরাফির হৃদয়ের গহীন কোণে কোন আফসোস, বা হাহাকার আছে? মোটেই না, মাশরাফির জীবনদর্শন যে সাধারণের থেকে একেবারেই আলাদা। তাই তিনি আফসোসের কথা শুনে এক গাল হেসে দিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, একসময় আফসোস হতো। কিন্তু এখন আমি অনুভব করি ইনহুরিগুলো আমার জন্য অনেক বড় একটা শিক্ষা হয়ে এসেছিল। ইনজুরি থেকে ফেরা খুব একটা সহজ কাজ নয়। কিন্তু যতবার আমি ইনজুরি থেকে ফিরেছি, আমি আগের চেয়ে বেশি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি নিজের উপস্থিতির জানান দিতে।’
আর তাই তো, ২০-ওভারের ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও মাশরাফি এখনো বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। পাশাপাশি তিনি ২০০৯ সালের পর থেকে টেস্ট ক্রিকেট না খেললে কি হয়েছে, এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফরম্যাটের ক্রিকেটকে বিদায় জানাননি।
তার এই বিদায়ের প্রশ্ন এলেই সামনে আসে আরেকটি নামও- কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সা¤প্রতিক উত্থানের পেছনে মূল কারিগর হিসেবে এই দুজনের অবদান অসীম। তবে অনেকের মতে, কোচের সঙ্গে বর্তমানে সম্পর্কে ফাটল ধরেছে অধিনায়কের। যদিও এমন ধারণাকে রীতিমতো তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন স্বয়ং মাশরাফি। তার দাবি- কোচের সঙ্গে কোনো ফাটল বা মনোমালিন্য নেই তার কিংবা দলের কারও, ‘আমার মনে হয় আমরা একে অপরকে খুব ভালো করে বুঝতে পারি। যখন আপনি কারো সাথে অনেকদিন ধরে কাজ করবেন, এরকম গুজব রটা স্বাভাবিক, এবং আমাদের ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই হয়েছে। আমাদের সমাজে এটা খুবই পরিচিত একটা ঘটনা। যখনই কোথাও কোন সমস্যা হয়, আমরা প্রায়ই শুনতে পাই যে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়ায় খামতি থেকে যাচ্ছে। যে কেউ এগুলো বলতে পারে, কারণ এখন যে কারও জন্যই এরকম মন্তব্য করে বসা খুব সহজ। তাদেরকে থামানোটাও কঠিন, কারণ তারা তো প্রকৃত সত্যটা জানে না। যখন আপনি দীর্ঘদিন যাবত কারও সাথে পথ চলবেন, নিশ্চিতভাবেই সেখানে কিছু ওঠা-পড়া থাকবেই।’
মাশরাফি আরও বলেন, ‘আপনি যদি আমাদের সা¤প্রতিক ফলাফলের দিকে নজর দেন, আমার মনে হয় না আমাদের আর এ ব্যাপারে কিছু বলার আছে। কখনো কখনো এমন হয়েছে যে আমি নির্দিষ্ট উপায়ে একটি কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবং তিনিও তাতে সায় দিয়েছেন। এবং আমি যদি তাতে ব্যর্থও হই, তিনি কিছু বলেন নি। আবার এমন সময়ও এসেছে যখন তিনি বলেছেন, ‘এটা এভাবে করো’, আর আমি বলেছি, ‘আচ্ছা তবে এটাই চেষ্টা করে দেখি’। সেই সিদ্ধান্তটা কাজ করুক বা না করুক, আমরা কখনো একে অপরের দিকে আঙ্গুল তুলিনি। সম্ভবত এ কারণেই আমরা এতটা সফল হতে পেরেছি। তাই আমাদের মধ্যে তথাকথিত দ্ব›েদ্বর কথা চাউর করা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাশরাফির

১৭ জানুয়ারি, ২০২২
১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ