Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বীজতলা ও রোপা আমনের জন্য শুভ সূচনা

দক্ষিণাঞ্চলে শ্রাবণধারা শুরু

| প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : ভরা বর্ষার খরা কাটিয়ে দক্ষিণাঞ্চলসহ উপক’লভাগের আবহাওয়া শ্রাবন ধারায় ফিরে এসেছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মওশুমী বায়ু সারা দেশে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবলভাবে থাকায় গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধা ৬টার পূর্ববর্তি ৩৬ ঘন্টায় বরিশালে ৮০মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এসময় পুটয়াখালী ও কলাপাড়াতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরো বেশী। গতকাল সকালে দক্ষিণাঞ্চলসহ উপক’লভাগে ভারি বর্ষণের সতর্কতাও জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। পায়রাসহ সবগুলো সমুদ্র বন্দরকে ৩নম্বর সংকেতের পাশাপাশি বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো নদী বন্দরকে ১নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। শ্রাবনের অঝোর ধারায় গত দুদিনই দক্ষিণাঞ্চলের স্বাভাবিক জনজীবন অনেকটাই বিপর্যস্ত। 

এবার অষাঢ়ের শেষ ভাগ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের আবহাওয়ায় অনেকটা শরতের আমেজ লক্ষ করা গিয়েছিল। এমনকি শ্রাবনের আকাশে ছিল নীলের ওপর সাদা মেঘপুঞ্জের আনাগোনা। তাপমাত্রার পারদ উঠে গিয়েছিল প্রায় ৩৫ডিগ্রী সেলসিয়াসে। এমনকি জুন মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৫ভাগ বেশী বৃষ্টি হবার পরে চলতি মাসের প্রথম কুড়ি দিনে এখনো বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অনেকটাই কম। চলতি মাসে বরিশাল অঞ্চলে সাড়ে ৫শ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও জুলাই-এর প্রথম কুড়ি দিনে বৃষ্টি হয়েছে আড়াইশ মিলমিটারের কিছু বেশী। তবে ভারতের উড়িশ্যা উপক’লে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে মওশুমী বায়ু দেশের ওপর সক্রিয় হয়ে ওঠার পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় থাকায় বুধবার শেষ রাত থেকেই আবহাওয়া পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে থাকে। গত বুধবার দিনভর থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারী বর্ষণের পরে গতকাল দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ছিল শ্রাবনের ধারা। বিকেলের দিক বৃষ্টিপাতের মাত্রা কিছুটা হৃাস পেলেও আবহাওয়া ছিল বৈরী।
আবহাওয়া বিভাগ থেকে আগামী ৪৮ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লভাগ জুড়ে মাঝারী থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবনতা বৃদ্ধির কথাই বলা হয়েছে। গতকাল সকালে পূর্ববর্তি ২৪ঘন্টায় বরিশালে ৪০,কলাপাড়াতে ৮৭, ভোলাতে ৪৮ ও পটুয়াখালীতে ৬০মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত আরো ৪০মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বরিশালে। এসময় পটুযাখালী, কলাপাড়া, ভোলা ও পটুয়াখালী উপক’লে আরো প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে আজ সকালের পরবর্তি ৪৮ঘন্টায় পরিস্থিতির সামান্য পরিবর্তনের কথা বলা হলেও শ্রাবনের আসন্ন অমাবশ্যার ভরা কোটালে ভর করে বৃষ্টিপাতের পরিমান বৃদ্ধি পাবারও সম্ভবনা রয়েছে। শ্রাবনের এ বর্ষন দক্ষিণাঞ্চলের মূল দানাদার খাদ্য ফসল আমনের জন্য যথেষ্ঠ উপকারী হতে পারে। বিগত দিন পনের যাবত বৃষ্টির অভাব আমনের বীজতলা সহ রোপা আমনের জন্য কিছুটা ঝুকি বৃদ্ধি করলেও গত দুদিনের বর্ষণ সে পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। তবে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকলে আমন বীজতলা এবং রোপা আমন সহ উঠতি আউশ ধানের ক্ষতিরও সম্ভবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদগন। আবহাওয়া বিভাগের বুলেটিনে ভারতের উরিশ্যা উপক’ল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবার কথা জানিয়ে তা দূর্বল অবস্থায় মধ্য প্রদেশ এলাকায় লঘু চাপের পরিনত হয়ে মওশুমী বায়ুর অক্ষের সাথে মিলিত হবার কথা বলা হয়েছে। মওশুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্বে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মওশুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় ও বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়ে বরিশাল সহ সমগ্র উপক’লীয় এলাকায় মাঝারী থেকে ভারি বজ্র বৃষ্টির সম্ভবনার কথা বলা হয়েছে। সে সাথে কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণেরও সম্ভবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ