Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বৃষ্টি আর যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী

| প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সায়ীদ আবদুল মালিক : শ্রাবনের ভারিধারায় রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে রাজধানীতে দেখা দিয়েছে আসহনীয় যানজট। বৃষ্টির পানি জমে কোন কোন এলাকায় কাদা-পানি মিলে একাকার হয়ে রাস্তা চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে যায়। এতে রাজধানীবাসী সকাল থেকেই নানা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হয়েই পড়তে হয়েছে চরম দুর্ভোগে। সারা শহরজুড়ে যানজট। গাবতলী থেকে সায়েদাবাদ, পুরান ঢাকা থেকে উত্তরা সবখানেই ছিল একই চিত্র। সড়কে দুইধারে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। এক থেকে দেড় কিলোমিটার পথ যেতে সময় লেগেছে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। গাড়ি যেন এগুতে চায় না। যানজটের কারণে সময়মত পাওয়া যায়নি গাড়ি। মাঝে মধ্যে দু’য়েকটি পাওয়া গেলেও দিতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটেই অনেককে যেতে হয়েছে নিজ নিজ গন্তব্যে। নগরবাসীর এ ভোগন্তির শেষ কোথায় কেউ জানেনা।
গত রোববার রাত থেকে কখনও হালকা আবার কখনও ভারিবর্ষণে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোড, জয়নাগ রোড, ওয়ারী, লাক্ষিবাজার, রায়সাহেব বাজার, লালবাগ, মগবাজার, শান্তিনগর, বাসাবো, যাত্রাবাড়ি, সুত্রাপুর, রামপুরা, মুগদাপাড়া, মানিকনগার মতিঝিল, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরসহ নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে পানি থৈ থৈ করছে। লঘূচাপের প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীসহ সারা দেশে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। প্রবল বর্ষণে নগরীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে চরম ভোগান্তির।
সরেজমিন দেখা গেছে, মহাখালী জাহাঙ্গীরগেট, খিলক্ষেত, বনানী, আর্মি স্টেডিয়াম, কুড়িল বিশ্বরোড ও রামপুরা-বাড্ডা এলাকায় যানজটে পড়ে ঘণ্টার ঘণ্টা যানবাহন সড়কে দাঁড়িয়ে আছে। বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত দু’পাশের সড়কেই দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
রুশা খান নামের এক যাত্রী জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় মতিঝিল থেকে বাসে উঠেছি, ধানমন্ডি যাওয়ার উদ্দেশ্যে। বেলা ১২টায়ও ধানমন্ডি যেতে পারিনি।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এ বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
রোববার রাত থেকেই রাজধানীতে কোথাও হালকা আবার কখনও মুশুলধারে বৃষ্টি হতে থাকে। এতে রাস্তায় পানি জমে কোথাও হাটু পানি আবার কোথাও নালা পানি হয়ে যায়। খানাখন্দকেভরা রাস্তায় রিকশা ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। কেউ কেউ ছোট বড় আহতও হয়েছে। স্যুয়ারেজ লাইন ও সিটি কর্পোরেশেনের ড্রেনের উপচে পড়া পানি রাস্তাঘাট ও বাসা বাড়ির পানিতে একাকার হয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ব্যাংক পাড়া মতিঝিলের বনশিল্প ভবন ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আশপাশে দেখা গেছে হাঁটু পানি। অধিকাংশ স্থানে সৃষ্টি হয়েছে পানিবদ্ধতার। সময় মত পানি নেমে না যাওয়ায় প্রধান প্রধান সড়কে পানি জমে গেছে। বৃষ্টির পানি জমে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে রাজধানীর মৌচাক, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ২৭, আজিমপুর ও যাত্রাবাড়ী এলাকায়। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়গুলোতে পানিবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় গাড়ি চলাচলেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়ে জনজীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। কোথাও কোথাও সড়কের ম্যানহোলের ঢাকনা না থাকায় অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়েছে। আবার পানিবদ্ধতার কারণে কোথাও কোথাও যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর ফকিরেরপুলে একটি হিউম্যান হলার বিকল হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বৃষ্টিতে রাজধানীর উত্তরা, বারিধারা, বাড্ডা, ফকিরেরপুল, পল্টন, মালিবাগ, শান্তিনগর, মগবাজার, বসুন্ধরা সিটির সামনে, মিরপুর, মহাখালী, কাজীপাড়া, শ্যামলী, শেওড়াপাড়া, মতিঝিল, ধানমন্ডি ও গুলশানসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাজধানীতে পানি জমে যাওয়া নতুন কিছু নয়। অথচ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদেও এ নিয়ে তেমন মাথা ব্যাথা নাই। সমস্যা সমাধানে মেয়রদের দৃশ্যমান উদ্যোগও নেই বলে অভিযোগ উঠেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাজধানীর রাস্তায় পানি জমে যায়। রাজধানীবাসী এ অভিযোগ করে আসছে বহুদিন ধরে। এ যেন দেখার কেউ নেই অবস্থা। আসপিয়া নামের এক পথচারী বলেন, বর্ষার আগে পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেন পরিষ্কার না করার কারণে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান সড়কের পাশাপাশি বৃষ্টির পানি জমে গেছে রাজধানীর বিভিন্ন ওলি-গলিতে। মৌচাক-মগবাজার-রাশমনো মেডিকেল হাসপাতালের সড়কে গিয়ে দেখা গেছে হাঁটু পানি। গতকাল সোমবার সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ধানমন্ডির জিগাতলা থেকে হাজারিবাগ সড়কে রিকশাসহ সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ ছিল। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডেও পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। পানি জমে থাকায় মোহাম্মদপুর মকবুল হোসেন ডিগ্রি কলেজের আশপাশের এলাকায় জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি। এছাড়া মিরপুরের সনি সিনেমা হল থেকে শুরু করে চিড়িয়াখানা সড়কেও জমে ছিল বৃষ্টির পানি। মাজার রোড ও গাবতলীর বিভিন্ন স্থানেও পানি জমে থাকতে দেখা যায়।



 

Show all comments
  • আজিজুল হক ২৬ জুলাই, ২০১৭, ১:০২ পিএম says : 0
    ঢাকার রাস্তাগুলো এখন নদীতে পরিণত হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • MD.CHANCHAL MAHMUD ২৬ জুলাই, ২০১৭, ৩:২২ পিএম says : 0
    doinik inqilab shompadhok sahab. assalamualikum. je vai kamon asanapne.apni onk bibachona kora daily news pepars sapen but a bapare amar kono monttobo nai.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যানজট

১৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ