Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বৈদেশিক ঋণে ন্যুব্জ ব্যাংক

| প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

২০১৬ সাল পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৬১৬ কোটি ডলার : নজরদারির তাগিদ বিশেষজ্ঞদের
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
বৈদেশিক ঋণের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১৬ কোটি ডলার। যা আগামী দিনে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারকে অস্থিতিশীল করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, স্বল্প মেয়াদী এসব ঋণের বিষয়ে নজরদারির অভাব রয়েছে। এ সুযোগে বিশেষ থেকে আনা এসব অর্থের অপব্যবহারও হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বড় ধরণের সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে দেশ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে একটি নীতিমালার আওতায় এ ধরণের ঋণের নজরদারি করতে হবে।
গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘প্রসপেক্টাস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ অব সর্ট টার্ম ফরেন কারেন্সি ফিন্যান্সিং অব ব্যাংকস’ শীর্ষক কর্মশালায় এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরীর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান।
বিআইবিএমের প্রফেসর ড. শাহ মো. আহসান হাবিবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি টিম গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি খাতে ২০১২ সালে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৩ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ডলারে। সর্বশেষ হিসেবে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১৬ কোটি ডলার। আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, দেশের মধ্যে যখন উচ্চ সুদহার ছিল। তখন বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। সেসময়ে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার ছিল ১৭ শতাংশ পর্যন্ত। এখন তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বর্তমানে বিদেশি ঋণের সঙ্গে দেশিয় ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহারের তেমন কোনো পার্থক্য নেই।
তিনি বলেন, দেশের তুলনায় বিদেশি ঋণের সুদহার তুলনামূলক সস্তা হলেও সীমাহীন ঋণের অনুমোদন দেওয়া হবে না। কেননা, পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। এজন্য বিষয়টি নিয়ে ভাববার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, মালেয়েশিয়া স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ধরণের ঋণে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে সেসকল ঝুঁকি আছে তা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংককে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বলেন, স্বলমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের ভালো দিকের পাশাপাশি বেশকিছু ঝুঁকিও রয়েছে। আমরা যদি বৈশ্বিক চিন্তা করি, তাহলে দেখব, আগে যতগুলো ফাইন্যানশিয়াল ক্রাইসিস হয়েছে সেখানে দেখা গেছে, স্বল্পমেয়াদি ঋণ কম খরচে বড় করা হয়। বড় করে যখন ফিরিয়ে দেয়ার সময় আছে, তখন লোকাল কারেন্সি অবমূল্যায়ন হলে ব্যালেন্স অব পেমেন্টে সমস্যা দেখা দেয়।
তিনি বলেন, ব্যাংকিংয়ের সোর্সেস অব ফান্ডের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংককে সবসময় মনিটরিং করা উচিত। প্রত্যেকটি ব্যাংকের ফরেন কারেন্সির দায় বেড়ে যাচ্ছে। যদিও ক্রাইসিস সেশন এখনো টাচ করেনি। কিন্তু, ক্রাইসিস সেশন টাচ করার পরে কি আমরা পদক্ষেপ নিব, নাকি তার আগেই আমরা ব্যাংকগুলোকে সতর্ক? আমরা চাচ্ছি একটা শক্ত মনিটরিং ব্যবস্থা।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব উল আলম, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আহমেদ শাহিন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাংক

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৭ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ