Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তীব্রতর হচ্ছে ভাঙন

| প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিলীন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও মসজিদ : হুমকির মুখে শহর রক্ষাবাঁধ আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার অপেক্ষায় হাজারো মানুষ
ইনকিলাব ডেস্ক : ধীরে ধীরে পানি কমছে আর বাড়ছে নদীভাঙন। ভাঙনে বিভিন্ন স্থানে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও মসজিদ বিলীন হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অদক্ষতায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এমন অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। সিলেটে বানভাসীরা আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজ নিজ বাড়ি ফিরলেও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। চট্টগ্রামে হালদা নদীসহ অর্ধশতাধিক খালের ভাঙনলীলায় বিপর্যস্ত-বিধ্বস্ত হয়ে সংকুচিত হতে চলছে আয়তনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনপদ ফটিকছড়ির মানচিত্র। মাদারীপুরে নদীভাঙন অব্যাহত। হুমকিতে শহর রক্ষাবাঁধ। ভাঙনে উপজেলার তিন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের ৫শ মিটার বাঁধসহ ৫০টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন। ভাঙন আশঙ্কায় হুমকিতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক। এসব মানুষ খাদ্য ও আশ্রয় সঙ্কটে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা তুলে ধরে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের আলোকে রিপোর্ট:
আসলাম পারভেজ ও সৈয়দ জাহেদুল্লাহ কুরাইশী চট্টগ্রাম থেকে জানান, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের পর হালদাসহ বিভিন্ন নদ ও খালের ভাঙনে বিপর্যস্ত চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ফটিকছড়ির বিস্তীর্ণ জনপদ। হালদার পাড় ও বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়া এবং সেইসাথে কাপ্তাই হ্রদের পানি ছেড়ে দেওয়ায় অনেক এলাকায় পানিবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। হাটহাজারীতে পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাড়ির আঙিনায়ও উঠেছে পানি। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও অদক্ষতায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। হাটহাজারীতে কয়েকদিন টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলের পর হালদা নদীর ভাঙনে বাড়ি ঘর বিলিন হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার অনেক এলাকা তলিয়ে যাওয়া সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হালদা নদীর নাজিরহাট নতুন ব্রীজ সংলগ্ন এলাকার বেড়িবাঁধ, বংশাল এলাকার হালদা নদীর বেড়িবাঁধ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ধলই কাজী পাড়া ও সেকান্দর পাড়া এলাকায় হালদার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। পূর্ব গুমান মর্দ্দন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হালদার ভাঙনে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ লাঙল মোড়া আরবান আলীর বাড়ী, টোনা গাজী চৌধুরী বাড়ী এলাকা হালদানদীর ভাঙনে ৩৮ পরিবারের বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ছিপাতলী আলমের কূল এলাকার বেড়ি বাঁধ ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। উত্তর মাদার্শা আমতুয়া এলাকার হালদা নদীর ভাঙনে বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। কুমারী খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে দেবানাথ পাড়া ও খলিফা পাড়া সড়কের ১০টি স্থান বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় হালদা নদীর বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। লাঙলমোড়ার হালদার ভয়াবহ ভাঙনে বিশাল এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উক্ত এলাকার ভাঙন রোধে ২০১৫ সালে দরপত্র আহŸান করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলেও কাজের মান ভাল না হওয়ায় এই এলাকার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। ভাঙন এলাকা বিলীন হলেও নির্বিকার পানি উন্নয়ন বোর্ড।
টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ী ঢল ও কাপ্তাই লেকের পানি ছাড়ার কারণে বন্যা এই উপজেলার অনেক এলাকায় পানিবদ্ধতা স্থায়ী রূপ নিয়েছে। উপজেলার আওতাধীন অন্তন্ত ৪০টি গ্রামের লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদর এবং মহাসড়কের সাথে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গতকাল পর্যন্ত সড়কগুলোর পানিতে তলিয়ে থাকায় এইসব সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্যার কবলিত এলাকার মানুষ নৌকা, বাঁশ ও কলা গাছের বেলা দিয়ে চলাচল করছে। বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় প্রায় ৭০টি সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অঘোষিত ভাবে বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বন্যায় হালদা নদীসহ অর্ধশতাধিক খালের ভাঙনলীলায় বিপর্যস্ত-বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে আয়তনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনপদ ফটিকছড়ি। সংকুচিত হতে চলেছে মানচিত্র! উপর্যুপরি বন্যায় এ পর্যন্ত ৭ ব্যক্তি নিহত হয়েছে। বিলীন-বিধ্বস্ত হয়ে গেছে দু’শতাধিক ঘর-বাড়ী। বীজতলা নষ্ট হয়েছে হাজারো হেক্টর জমির। মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। ভাটি জনপদ সমূহ এখনো রয়েছে পানিবন্দি। বন্যাউত্তর দুর্গত মানুষদের হাহাকার তো চলছেই। অথচ হালদা পাড়ের এক কিলোমিটার দুরত্বের বাসিন্দা পানি সম্পদ মন্ত্রী একটি বারের জন্যও উঁকি দিলেন না পার্বত্য চট্টগ্রামের পাদদেশের জনপদ তারই পাশর্^বর্তী উপজেলা ফটিকছড়িতে এ নিয়ে বেদনাহত আর বন্যা দুর্গত মানুষের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে।
বন্যায় স্থানীয় নারায়ণহাটের দক্ষিণে ফটিকছড়ি-হেঁয়াকো সড়কে বালুখালী বেইলী ব্রীজটি ভেঙে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। ফলে আটকা পড়ে আছে শত শত পণ্যবাহী যানবাহন। বন্যাগ্রস্ত এলাকাগুলো ইউএনও পরিদর্শন করলেও অন্যান্য অনেক জনপ্রতিনিধি এলাকায় ছিলেন অনুপস্থিত। স্থানীয় এমপি ওমরা হজ্জ থেকে ফিরেই চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও ফটিকছড়ি’র ইউএনওকে বলে পর্যাপ্ত ত্রাণ-সামগ্রী প্রেরণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যানরা অধিকাংশ এলাকায় থাকলেও স্থানীয় উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা কেউ কেউ এলাকায়ও ছিলেন না। তবে রোসাংগিরী ইউপি চেয়ারম্যান শোয়েব আল সালেহীন গলা পরিমাণ বন্যার পানির মধ্যে নেমে পড়ে বানবাসীদের পাশে দাড়িয়ে পুরো জনপদে আলোড়ন সৃষ্টি করেন।
২৩ জুলাই দু’দিনের বিরতি দিয়ে টানা তিনদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢল শেষে একটু কমলেও ফের ৪৮ ঘণ্টা মুষলধারে বৃষ্টিতে ফটিকছড়ি ৫ম দফা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। হালদার ভাঙা বাঁধ দিয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করায় নাজিরহাট-কাজিরহাট, ফটিকছড়ি-হেঁয়াকো সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পানিবন্দি হয়ে পড়ে লাখো মানুষ। এমনকি পাউবো’র পরিদর্শন টীমও গত ২৪ জুলাই বৃষ্টিত্রাসের কারণে ফেরৎ যেতে বাধ্য হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অবিরাম বর্ষণের ফলে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে ফটিকছড়ি উপজেলার বাগানবাজার, দাঁতমারা, নারায়ণহাট, পাইন্দং, কাঞ্চননগর, হারুয়ালছড়ি, সুন্দরপুর, সুয়াবিল, নাজিরহাট পৌর এলাকা, লেলাং, রোসাংগিরী, নানুপুর, বখতপুর, ধর্মপুর, সমিতিরহাট, জাফতনগর, আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
মাদারীপুরে দুর্বার নদীভাঙন : শহররক্ষাবাধ এখন হুমকির মুখে
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা জানান, চলতি বর্ষা মৌসুমে মাদারীপুরে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদী যেন রুদ্রমুর্তি ধারণ করেছে। এই দুই নদীর ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে তীরবর্তী এলাকার মানুষ। আতঙ্কে রয়েছে নিকটবর্তী আরও কয়েকশ পরিবার। ইতোমধ্যে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে অসংখ্য বসতভিটা-ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে নদীগর্ভে। নদী ভাঙনে সম্প্রতি শিবচর উপজেলার সন্যাসীরচর, চরজানাজাত, দত্তপাড়া, নিলখী ও বহেরাতলা ইউনিয়নে সাত শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের শিকার হয়েছে দুটি বেড়িবাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত অসংখ্য পরিবার উঁচু সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ভাঙনের শিকার সন্নাসীর চর ৮নং ওর্য়াডের জামে মসজিদটি। ব্যক্তিগত ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে আড়িয়াল খা নদীর অব্যাহত ভাঙনে মাদারীপুর শহর শহরক্ষা বাঁধ এখন প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে রয়েছে। মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘুন্সি গ্রামটি।
বিভিন্ন সূত্রে ও ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে জানা যায়, পদ্মা নদীর ও আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম। ভাঙনে এ উপজেলার সন্ন্যাসীরচরের খাসচর বাচামারা আজাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়, সন্যাসীরচর ইউপি চেয়ারম্যান রউফ হাওলাদারের বাড়িসহ তিন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দক্ষিণ বহেরাতলায় ইউনিয়নের নির্মাণাধীন বাঁধের ৫০ মিটারসহ ২০টি ঘরবাড়ি, নিলখী ইউনিয়নের একটি মাদরাসাসহ ৪০টি ঘরবাড়ি, দত্তপাড়া ইউনিয়নের মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের ৫শ মিটার বাঁধসহ ৫০টি ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।অ ন্যদিকে, পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে উত্তর চরজানাজাত ইউনিয়নের প্রাথমিক বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারের দ্বিতল ভবন, একটি গুচ্ছগ্রামসহ ৫০টি ঘরবাড়ি। এ এলাকায় নদীতে বিলীন হয়েছে কমপক্ষে ৪শ একর ফসলি জমি। ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে স্থানীয় সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী যে ত্রাণ দিয়েছে তা অপ্রতুল বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। শিবচর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে দুটি বিদ্যালয় ভেঙে গেছে।
এদিকে বন্যার পানি নেমে আসায় জেলার নদনদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির সাথে নদীভাঙনে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক রক্ষা বাঁধের শিবচর অংশের ১০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের বিশাল অংশ চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। কাউলিপাড়া দারুল উলুম কওমী মাদরাসা ও মাদানী কমপ্লেক্স এর অধ্যক্ষ আব্দুর রকিব বলেন, পদ্মা নদী এখন মাদরাসাটির খুব নিকটে এসে পড়েছে। যে কোন সময় মাদরাসাটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহাদাত হুসাইন চৌধুরী বলেন, মহাসড়কসংলগ্ন বাঁধের ভাঙন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এখানে কাজ শুরু করা দরকার। তা না হলে মহাসড়ক ঝুঁকিতে পড়বে । তিনি জানান, পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর ভাঙনে উপজেলার অনেক এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে যেসব জায়গায় তাদের প্রকল্প রয়েছে তারা কেবল সেখানেই কাজ করতে পারছেন। শহররক্ষা বাঁধে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, লঞ্চঘাটের মূল পয়েন্টে আশপাশের অন্তত ৫০টি বাড়িঘর নদীভাঙনের মুখে পড়েছে।
মুন্সীগঞ্জে পদ্মার ভাঙনে দু শতাধিক বসতবাড়ি বিলীন
মুন্সীগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জে প্রমত্তা পদ্মার ভাঙনে জেলার টংগীবাড়ী ও লৌহজং উপজেলার দুই শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মা নদীর পানি কমার সাথে সাথে তীব্র ¯্রােতের কারনে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন প্রবন এলাকাগুলো হলো লৌহজং উপজেলার গাওদিয়া, দুয়াল্লী, কোড়াডি, শাহীনুডী, মাওয়া, কান্দিপাড়া, যশলদিয়া, কবুতরখোলা, চাইরপাড়, খড়িয়া টংগিবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া দিঘীরপাড়, হাসাইল ও পাচগাও গ্রাম। সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, লৌহজং উপজেলার গাওদিয়া এলাকায় গত ১৫ দিনে নদী ৩০০মিটার ভিতরে ঢুকে পড়ে এতে প্র্রাায় ২৫ টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
সিলেটে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার অপেক্ষায় হাজারো মানুষ
ফয়সাল আমীন সিলেট থেকে জানান, সিলেটের আটটি উপজেলায় দীর্ষমেয়াদী বন্যায় দেখা দিয়েছে। তবে বর্তমানে ওইসব এলাকায় বন্যার পানি অনেকটা কমেছে। কিন্তু পানি কমার সাথে সাথে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। এছাড়াও আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করা বন্যা কবলিত এলাকায় লোকজন এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে। বন্যায় নিজের ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াতে তারা এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। তবে খুব শিগগই তারা বাড়ি ফিরবেন বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের আশ্রয়কেন্দ্রে ১৪৫টি পরিবারের ৬২৯ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের মধ্যে অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। এছাড়া অনেকেই এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে বলে জানা গেছে। সিলেটের জেলা প্রশাসক রাহাত আনোয়ার জানান, জেলার আটটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তবে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে এখনো লোকজন রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ লোকজন নিজের ঘর-বাড়ি মেরামতের পর আশ্রয় কেন্দ্র ত্যাগ করবে।
সেনবাগে বন্যার্তদের মাঝে আ’লীগ নেতার
সেনবাগ (নোয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নোয়াখালীর সেনবাগের বিভিন্নস্থানে বন্যার্ত গরীব, দু:স্থ ও অসহায়দের মাঝে গতকাল শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এাণ বিতরণ করেছেন- জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও তমা গ্রæপের কর্ণধার আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক। তিনি এসময় ভয়াবহ বন্যা কবলিত উপজেলার ছাতারপাইয়া, কেশারপাড় ও সেনবাগ পৌরসভা এলাকায় ছয় শতাধিক বন্যার্তদের মাঝে এ সব এাণ বিতরণ করেন।
ফুলগাজীতে ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ
ছাগলনাইয়া (ফেনী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল বিকেলে ফুলগাজী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত ৮ শতাধিক পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন ১৪ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবন্দ । ১৪ দলের নেতৃবৃন্দদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী দিলিপ বড়–য়া, জাসদের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী ১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আখতার, ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম প্রমুখ।
ফেনীতে বিএনপি নেত্রীর পক্ষে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ
ফেনী জেলা সংবাদদাতা জানান, বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে ফেনীর ফুলগাজীতে বন্যার্তদের মাঝে গতকাল ত্রাণ বিতরণ করেন নেত্রীর উপদেষ্টা ফেনী সদর আসনের সাবেক এমপি অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন। ফুলগাজী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে ত্রাণ বিতরণকালে আরো উপস্থিত ছিলেন,বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমদ,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল আহমদ মজুমদার, কেন্দ্রীয় সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব,উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান মজুমদার,সাধারন সম্পাদক মাষ্টার নুরুন্নবী প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভাঙন

২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ