Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভাঙনে দিশেহারা মানুষ

| প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বন্যার পানি নামছে। পানি নামার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে নদীভাঙন। ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী মানুষ। একাধিক বার বাড়ি সরিয়েও রেহাই পাচ্ছেন না ভাঙন কবলিত মানুষ। যতবারই পেছনে যাচ্ছে তত ধেয়ে আসছে নদী। নদী গ্রাস করে নিয়েছে সাজানো গোছানো ঘরবাড়ি, আবাদি জমি, স্কুল, মাদরাসা, মসজিদ। মানিকগঞ্জের কালীগঙ্গা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের নদী কবলিত মানুষ। আর চট্টগ্রামের আনোয়ারায় নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে উপজেলা চেয়ারম্যান ভাঙন প্রতিরোধ কাজ দ্রুত শুরুর আশ্বাস দেন। বন্যা-ভাঙনকবলিত মানুষের ছন্নছাড়া জীবনের করুণ কথা নিয়ে আমাদের সংবাদদদাতাদের পাঠানো তথ্যের আলোকে ডেস্ক রিপোর্ট-
মানিকগঞ্জ থেকে এ এফ এম নূরতাজ আলম বাহার জানান, মানিকগঞ্জের কালীগঙ্গা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করেছে সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের নদী কবলিত মানুষ। গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করা হয়। এতে অংশ নেয় নবগ্রাম ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ডের পাছবারইল গ্রামের বটতলা এলাকায় নারী, পুরুষসহ কয়েকশত ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ।
এই মানববন্ধন কর্মসুচিতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন নবগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাকিব হোসেন ফরহাদ, নবগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জললুল কবীর মিল্টনসহ এলাকার ভুক্তভোগী মানুষ।
এ সময় বক্তারা বলেন, গত ২০ বছরে সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালীগঙ্গা নদীর গর্ভে পাছবারইল, ছোটবারইল, বেংরুই ও দিঘুলীয়া গ্রামের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই মুহুর্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে আগামী ২ বছরের মধ্যে নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ, মানিকগঞ্জ থেকে ঝিটকা যাওয়ার আঞ্চলিক মহাসড়ক, মসজিদ, স্কুলসহ ঐতিহ্যবাহী বারইল বাজারসহ কালীগঙ্গারগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এ কারণে ভাঙন ঠেকাতে এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগি এলাকাবাসী।
আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) থেকে জাহেদুল হক জানান, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার জুঁইদন্ডী ও বরুমছড়া ইউনিয়নে প্রতিদিন শঙ্খনদের ভাঙনের শিকার হচ্ছে নদী তীরবর্তী মানুষ। শঙ্খের অব্যাহত ভাঙনে শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে আবারও খুরুস্কুল গোদারপাড় ¯øুইচ গেইট সংলগ্ন বাঁধের বিশাল অংশ ভেঙ্গে যায়। এতে করে জোয়ারের পানি উঠানামায় প্রতিদিন বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা সদর ও শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম মোহছেন আউলিয়া সড়কটিও নদীতে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম দেখা দিয়েছে। আর এ কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ২ ইউনিয়ন মানুষ।
ভাঙন অব্যাহত থাকলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইউনুছ এন্ড ব্রাদার্স কাজ পেয়ে এখনো পর্যন্ত ভাঙন প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। যার কারণে ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা ফুঁসে উঠেছে। এলাকাবাসির অভিযোগ, ৫১০ মিটার এলাকার ভাঙন ঠেকাতে পাউবো ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের অবহেলায় ভাঙন আরো তীব্র হয়ে কয়েকশ একর ফসলি জমি পানিতে ভাসছে। গতকাল শনিবার দুপুরে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় বরুমছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন চৌধুরীসহ সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বরুমছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন চৌধুরী বলেন, জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা করা না হলে নতুন করে আরো অনেক ঘরবাড়ি বিলীনসহ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। পরিদর্শনকালে উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী ইনকিলাবকে জানান, নদী ভাঙনের ফলে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এলাকাবাসির চরম ক্ষতি হয়েছে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। যাতে করে গোদারপাড় এলাকার ভাঙন প্রতিরোধের কাজ দ্রুত শুরু করা যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ