Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

তিন প্রতিষ্ঠানের যৌথ জরিপের প্রতিবেদনে হাওরের কৃষক ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না

| প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : হাওরের কৃষকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। এ জন্য অনেকেই কৃষি উৎপাদন থেকে সরে আসছেন। এসব এলাকায় শ্রমিকের মজুরিও কম। যার কারণে শ্রমিকরা কাজের সন্ধানে দেশের অন্যান্য এলাকায় চলে যাচ্ছেন। এজন্য হাওরে কৃষিক্ষেত্রে নিয়মিত প্রণোদনা দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে এফবিসিসিআই সভাকক্ষে ‘এক্সপার্ট গ্রুপ মিটিং অন বিজনেস ডেভেলপমেন্ট এন্ড পলিসি অব হাওর রিজিয়ন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ জরিপ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই), ফ্রেডরিখ নুউম্যান ফাউন্ডেশন (এফএনএফ) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ ভাবে জরিপ পরিচালিত করেছে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর মো. তাজউদ্দিন প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের হাওর অধ্যুষিত সাতটি জেলা রয়েছে। সেগুলো হলো সুনামগঞ্জ, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নেত্রকোণা, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এ সাত জেলায় ৮৫৮ হাজার হেক্টর জমি জুড়ে মোট ৩৭৩টি হাওর রয়েছে। এরমধ্যে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের দুটি ইউনিয়নের দুটি গ্রাম ও কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার দুটি ইউনিয়নের দুটি গ্রামসহ মোট চারটি গ্রামের ১২০ জন কৃষকের উপর জরিপটি চালানো হয়েছে। এদের মধ্যে ৭৩ দশমিক ৯ শতাংশ ক্ষুদ্র কৃষক ও ২৬ দশমিক ১ শতাংশ মাঝারি কৃষক।
তাজউদ্দিন বলেন, আমরা দেখেছি হাওরের কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায় না। তাই উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের জন্য চুক্তিভিত্তিক সমবায় সংঘ গঠনের প্রয়োজন। হাওরের কৃষকদের নিয়মিত প্রণোদনা দেওয়ারও সুপারিশ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, হাওরে ডাল সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনের উপর জোর দেয়া যেতে পারে। যথাযথ ব্যবস্থাপনার আওতায় হাওরে হাঁস পালন, ষাঁড় মোটাতাজাকরণ ও ছাগল পালনের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া হাওরের পানিতে খাঁচায় মাছ পালন এবং ফল গাছ রোপন, আগর ও বাঁশ চাষ করে কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দীন বলেন, আমাদের কৃষক, আমাদের শ্রমিক আর আমাদের উদ্যোক্তা- এরাই কিন্তু বাংলাদেশের অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে যারা বাস্কেট কেইস বলে সমালোচনা করেছেন আজকে তারা এই দেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছেন।
তিনি বলেন, এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ড্রেজিং থেকে শুরু করে বাঁধ নির্মাণ পর্যন্ত যে যে কাজগুলো করা দরকার সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং অন্যান্য যে সকল মন্ত্রণালয় আছে তাদের এগিয়ে আসতে হবে। আর এই কাজে সরকারের পাশে থেকে এফবিসিসিআই কাজটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
শফিউল ইসলাম বলেন, হাওরে কিছু এলাকা আছে যেখানে এখনো তিন দিন লেগে যায় পৌঁছতে। না রিকশা চলে, না গাড়ি চলার রাস্তা আছে। এমন সব জায়গার উন্নয়ন কাজে সরকারের পাশে এফবিসিসিআই সবসময় থাকবে।
অনুষ্ঠানে সাবেক মুখ্য সচিব ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম বলেন, যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি তা হলো- হাওরের জমি ইজারা না দেয়া। এটা উন্মুক্ত করে দিয়ে এটার কো-ব্যবস্থাপনা চালু করতে হবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই সাধারণ সম্পাদক মীর শাহাবুদ্দিন মোহাম্মদ, হাওর ও চর উন্নয়ন ইনিস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. আব্দুর রহমান সরকার, বিএডিসির পরিকল্পনা বিভাগের প্রধান ফেরদাউস রহমানসহ এফবিসিসিআইয়ের পরিচালকেরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ