পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সীতাকুন্ড সংবাদদাতা : চট্টগ্রাম সীতাকুন্ড স›দ্বীপ চ্যানেলের বিভিন্ন ঘাট দিয়ে পূর্ণিমার প্রথম জোঁতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালী ইলিশ। তবে মহাজন বা দাদনদের হাতে জিম্মি উপজেলার প্রায় ৩৮ হাজার জেলে। সরকার ঘোষিত চিহ্নিত উপকূলীয় এলাকার ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রসহ সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত করণ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ফলে এসময় উপজেলার মৎস্যজীবীরা ইলিশ ধরার জন্য সাগরে নামতে পারেনি। বেধে দেওয়া সময়ের পর উপজেলার সৈয়দপুর, বাঁশবাড়ীয়া, বোয়ালীয়াকুল, কুমিরা, সলিমপুর, শেখেরহাট, মুরাদপুর, বাড়বকুন্ড, ভাটিয়ারী, ফৌজদারহাটসহ বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে পরিবারের সদস্যরা এখন ইালশ শিকারে ব্যস্ত। জানা যায়, ইলিশ মৌসুম বলতে শ্রাবন, ভাদ্র, আশ্বিন এই তিন মাসকে বোঝায়। তবে মৌসুমের শুরুতে তারা ইলিশ শিকারে গহীন সাগরে অবস্থান করলেও মাছ না পেয়ে ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ে।
ফলে প্রথম মৌসুমে সাগর থেকে মাছ শিকার করতে না পেরে পূর্ণিমার জোঁয়ের অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকেন জেলে পল্লীর বাসিন্দারা। আর মৌসুম ছাড়াও বছরে বাকী দিন গুলো তাদের অভাব অনটনে কাটে। অন্যান্য সময় তারা সাগরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরলেও সে সকল মাছ বাজারে বিক্রি করে তাদের সংসার চলেনা। তাই তারা ইলিশ মৌসুমের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু সকালে ঘর থেকে বের হয়ে মাছ শিকার করতে অনেক সময় সন্ধ্যাও নেমে আসে। আর মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরার আগেই দাদনদাররা ইলিশ গুলো জোরপূর্বক তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। জীবন বাজি রেখে সাগরে যে মাছ ধরতে যায় তারা, সে আশা আর পুরোন হয় না। মাছের বিনিময় জেলেদের সামান্য পয়সা দিলেও সে পয়সায় চুলই আগুন জ¦লেনা।
এভাবে মাছের ন্যায্য মূল্য থেকেও তারা যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত হয়ে আসছে। এক সময়ে মৌসুমে জলদস্যুদের উৎপাত বেশি থাকলেও এখন পর্যন্ত সাগরে জলদস্যুদের বিচরণ চোখে পড়েনি বলে জানিয়েছেন জেলে নেতা উপন্দ্রে জলদাস ও দর্ক্ষিন সলিমপুর জেলে পল্লীর জীবন হরিদাস। তারা বলেন,বর্তমানে আমাদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়লেও আমাদের মুখে হাসি নেই। তার কারণ সারাদিন গহীন সাগরে মাছ শিকার করে ঘাটে নৌকা ভীরার আগেই দাদনদার মাছগুলো তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নিচ্ছে। ফলে গহীন সাগরে মাছ শিকার করে তীরে আনলেও কোন লাভ হয়না। দীর্ঘদিন ধরে মাছের ন্যায্য মূল্য থেকেও বঞ্চিত আমরা জেলে পরিবারগুলো। কিন্তু এ সমস্যাগুলো কোনো ভাবেই সমাধান হচ্ছে না।
তারা আরো বলেন, বর্তমানে ইলিশের কেজি সাইজ অনুযায়ী ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এদিকে উত্তর চট্টলার উপকূলীয় মৎস্য জলদাস কল্যাণ ফেডারেশনের সীতাকুন্ড ও পতেঙ্গার সভাপতি লিটন জলদাস বলেন, সীতাকুন্ড উপজেলা জুড়ে ৩৩টি জেলে পল্লীর প্রায় ৩৮ হাজার জেলে পরিবারের সদস্য রয়েছে। তবে সাগরে আগের মত জলদস্যুর উৎপাত দেখা না গেলেও ইলিশ মৌসুম ছাড়া অন্যান্য সময়ে বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ পাওয়া যাচ্ছেনা সাগরে। ফলে তারা সংসার চালাতে দাদনদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। তাই দাদন সমস্যা রোধ করা না গেলে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রুস্ত হবে সরকার, অন্যদিকে মাছ তথা আমিষ থেকে বঞ্চিত হবে সাধারন মানুষ।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা বলেন, উপজেলার বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা দাদনদের কাছে জিম্মি বিষয়টি শুনেছি। জেলে স¤প্রদায়ের মানুষগুলো অর্থের ভাবেই দাদনদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জাল,নৌকা কিনে এবং সংসার চালায়। তাই তারা দাদনদের কাছে ইলিশ মাছ দিতে বাধ্য হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে কোন জেলে সহযোগিতা চাইতে উপজেলায় আসেনি। বর্তমানে মৎস্য জীবীদের প্রয়োজন তারা অন্যত্র থেকে ঋণ নিয়ে জাল ও নৌকা কিনতে পারলে দাদনদের সাথে তাদের যে সমস্যা সেটা আর থাকবেনা। ফলে তারা মাছেরও ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।