Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দোকলাম সঙ্কট নিরসনে ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সফল হয়নি

ভারত ২৫০ ও চীনের ১শ’ মিটার পেছানোর প্রস্তাব

| প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রয়টারস : দোকলাম সংকট নিয়ে চীনের সাথে সাত সপ্তাহের মুখোমুখি অবস্থা কাটিয়ে উঠতে ভারতের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সফল হয়নি। এদিকে চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ মাধ্যম দোকলাম নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা অনিবার্য বলে জানিয়েছে। মধ্য জুনে এ সংকট শুরু হয়।
চীন জোর দিয়ে বলেছে, ভারতকে একতরফা ভাবে দোকলাম থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ভারত তার সৈন্যদের ২৫০ মিটার (৮২০ ফুট) পিছিয়ে আনার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু চীন সে ব্যাপারে সাড়া দেয়নি।
লোকচক্ষুর আড়ালে অনুষ্ঠিত সীমিত পর্যায়ের এ কূটনৈতিক আলোচনায় চীনারা ১শ’ মিটার পিছিয়ে যাওয়ার ভারতীয় প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। কারণ, তারা ঊর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি পায়নি।
এ কূটনৈতিক আলোচনা বিষয়ে অবহিত দ্বিতীয় একটি কূটনৈতিক সূত্র জানান, এখন অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। কোনো পক্ষই আর এগোচ্ছে না।
বেইজিংয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চীন কখনোই কোনো ভূখন্ড ছাড়বে না। রয়টারসের কাছে পাঠানো এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলে, কোনো পরিস্থিতিতেই চীন তার আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বকে বিনিময়ের শর্ত করবে না। ভারতকে শর্তহীন ভাবে তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দোকলাম নিয়ে মুখোমুখি অবস্থা দু’দেশের মধ্যে ১৯৮০ সালে সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থার পর এই প্রথম গুরুতর রূপ নিয়েছে। দু’দেশের মধ্যে ৩,৫০০ কি মি (২,১৭৫ মাইল) সীমান্ত রয়েছে।
মঙ্গলবার চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত গেøাবাল টাইমস বলে, চীন দোকলাম নিয়ে যুদ্ধে যায়নি এ আশায় যে নয়া দিল্লী বাস্তবতা উপলব্ধি করবে। পত্রিকা বলে, নরেন্দ্র মোদি সরকার যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করা অব্যাহত রাখে তাহলে চীনের পক্ষ থেকে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ অনিবার্য।
ভারত তার জন্মশত্রু পাকিস্তানের সাথে চীনের সম্পর্কের কারনে উদ্বিগ্ন্। ভারত চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের বিরোধী।
চীন এর আগে জাপানসহ যুক্তরার্ষ্টের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা জোটে যোগ না দেয়ার জন্য নয়া দিল্লীকে হুঁশিয়ার করে দেয়। মোদি দু’দেশের সাথেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন।
এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞ সি. রাজা মোহন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় লিখেছেন, এ বিরোধের কোনো সুখকর সমাধান হবে না। ভারত নতি স্বীকার করবে বলে মনে হয় না।
দ্বিতীয় সূত্র বলে, দোকলাম সংকটের ছায়া আগামী মাসে চীনের আয়োজিত ব্রিকস দেশগুলোর শীর্ষ বৈঠকের উপরও পড়তে পারে।
ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত দোকলাম মালভূমিতে প্রায় ৩শ’ সৈন্য পরস্পর থেকে ১শ’ মিটার (৩২৮ ফুট) দূরত্বে মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে আছে। তিনি বলেন, কোনো পক্ষই সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করেনি।
কয়েকদিন আগে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ পার্লামেন্টে বলেন যে আমরা এ সংকট নিরসনে চীনের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাব। যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়।
নয়া দিল্লীর জওয়াহরলাল বিশ^বিদ্যালয়ের চীন বিশেষজ্ঞ শ্রীকান্থ কোন্ডাপল্লি বলেন, যুদ্ধের সম্ভাবনা কম। কম্যুনিস্ট পার্টি কংগ্রেসের আগে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যুদ্ধে জড়াবেন বলে কেউ মনে করে না। অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় এ কংগ্রেসে পার্টির ৫ বছর মেয়াদী সাধারণ সম্পাদক পদে শি দ্বিতীয়বারের মত নির্বাচিত হবেন বলে নিশ্চিত।

 



 

Show all comments
  • Jamal ১১ আগস্ট, ২০১৭, ৯:০০ এএম says : 0
    Plz solve it by a discussion
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ