Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বন্যার ঘোলা পানির ঢল ও পূর্ণিমা বিদায়ের সাথে উপকূল ইলিশশূন্য

| প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

খুচরা বাজারে দরও আকাশচুম্বি
নাছিম উল আলম : শ্রাবণের বিগত পূর্ণিমার আগে পরে বিপুল সংখ্যক ইলিশ সাগর উপকূলে ছুটে এলেও উজানের বন্যার ঘোলা পানি সাগরে পতিত হবার মাত্রা বৃদ্ধির সাথে তা আবার মধ্য সাগরে ফিরে গেছে। ফলে গত সপ্তাহখানেক যাবত সাগর উপকূলে ইলিশের দেখা নেই। দিন দশেক আগেও দক্ষিণের উপকূলীয় এলাকায় ঝাকে ঝাকে ইলিশ জেলেদের মুখে হাসি ফোটালেও দিন কয়েকের মধ্যেই তা মিলিয়ে গেছে। গত দিন পাঁচেক যাবত হতাশ জেলেরা অনেকটা খালি জালই টেনে তুলছে সাগর উপকূল থেকে। ফলে ট্রালারের জ্বালানী ব্যায়সহ জেলেদের খোরাকির টাকায়ও টান পড়ছে। দাদন দেয়া মহাজনদেরও মাথায় হাত। সরবারহ হ্রাস পাওয়ায় বাজারে দামও আকাশচুম্বি। দক্ষিণের নদ-নদীতে মিঠা পানির ইলিশের উপস্থিতিও এবছর এখনো যথেষ্ঠ কম। গতকাল বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও ভোলার পাইকারী মোকামগুলোতে ১২শ গ্রাম সাইজের ইলিশ বিক্রী হয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা মন দরে। ১কেজি সাইজের ইলিশের দর ছিল ৪৮হাজার থেকে ৫৫হাজার টাকা। সাড়ে ৮শ গ্রাম থেকে সাড়ে ৯শ গ্রাম সাইজের ইলিশ বিক্রী হয়েছে ৩৮হাজার থেকে ৪০হাজার টাকা মন দরে। আর ৫শ গ্রামের নিচে জাটকার সাইজের ইলিশ বিক্রী হয়েছে কুড়ি হাজার টাকার মধ্যে। গত দু দিন খুচরা বাজারে ৮শ গ্রাম থেকে ১ কেজী সাইজের ইলিশ বিক্রী হচ্ছে ১২শ থেকে দেড় হাজার টাকা কেজি দরে।
ইলিশের এ অগ্নিমূল্য খুচরা বাজারেও যথেষ্ঠ বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। গত দিন পনের সাগরের ইলিশের ভাল আমাদানীর ফলে মোকামগুলোতে দামও ছিল এর প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি। গত তিন দিন বরিশালের পাইকারী মোকামে সাগরের ইলিশ নিয়ে কোন ট্রলার আসেনি। অথচ এর আগের সপ্তাহে প্রতিদিন ১০-১২টি ইলিশ বোঝাই ট্রলার এ মোকামে নোঙর ফেলত। ফলে খুচরা বাজারেও এর যথেষ্ঠ ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। তবে এবার গত পূর্ণিমায় সাগর উপকূল নোনা পানির ইলিশের কিছুটা প্রাচুর্য থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলের অভ্যন্তরীন জলাশয় বা মিঠাপানির নদ-নদীগুলোতে ভড়া বর্ষায়ও ইলিশের খুব একটা উপস্থিতি লক্ষ করা যায়নি। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে মেঘণা অববাহিকার বিভিন্ন নদ-নদীগুলোর মিঠা পানির ইলিশের কদর যথেষ্ঠ বেশী। তাই সাদে গন্ধে অতুলনীয় এ ইলিশের দামও সাগরের একই সাইজের মাছের তুলনায় সবসময়ই বেশী। কিন্তু গত দিন কয়েক যাবত উজানের বন্যার ঘোলা পনি ব্যপকভাবে সাগরমুখি হবার কারণে উপকূল তেকে ইলিশ গভীর সমুদে চলে গেছে বলে মনে করছেন জেলেগন।
তবে আগামী ২২আগষ্ট ভাদ্র মাসের অমাবশ্যা পরবর্তি পূর্ণিমা ভরা কোটাল সহ এর আগে পরে পুনরায় সাগর উপকূল হয়ে দক্ষিণের নদ-নদীগুলোতে ইলিশের আনাগোনা বৃদ্ধির আশা করছেন জেলে ও ইলিশ মোকামের পাইকারগন। অপরদিকে মৎস অধিদফ্তরের মতে সারা বিশ্বের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশেই ইলিশের উৎপাদন ক্রমশ বাড়ছে। বছরে প্রবৃদ্ধির হার ৪-৫%। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে ইলিশের উৎপাদন ৩লাখ ৯৫হাজার টনে উন্নীত হয়। যা সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ৪লাক্ষাধীক টনে উন্নীত হবার সম্ভবনার কথা জানিয়েছেন মৎস্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল। তবে এর পূর্ণাঙ্গ পরিসংখ্যান এখনো পাওয়া যায়নি। দেশের অভ্যন্তরীন বাজারে মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ২০১২-১৩সাল থেকে ইলিশ রফ্তানী বন্ধ রেখেছে সরকার। কিন্তু সাগর পথে পাশ্ববর্তি দেশে ইলিশ পাচারের অভিযোগ অনেক পুরনো অভিযোগ। এমনকি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কাকদ্বীপ ও ডায়মন্ড হারবার এলাকা থেকে অনেক দ্রæতগামী ট্রলার এসে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থনৈতিক এলাকায় ইলিশ ধরে নিয়ে যাবার অভিযোগও রয়েছে। তবে এসব বিবষয়ে মৎস অধিদফ্তরের দায়িত্বশীল মহল কোন তথ্য দিতে পারেনি । তাদের মতে আইন-শৃংখলা বাহিনী বিষয়টি নিশ্চই দেখছে।



 

Show all comments
  • নাজিম ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ২:০৩ এএম says : 0
    সবই বন্ধু দেশের ভালো ভালবাসা
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইলিশ

৫ মার্চ, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ