Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

যা বলার কোর্টে বলব

সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচিতে প্রধান বিচারপতি

প্রকাশের সময় : ১৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৪ এএম, ১৬ আগস্ট, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে গণমাধ্যমে কোন কথা বলবেন না জানিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, যা বলার কোর্টে বলবো। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি শেষে ষোড়শ সংশোধনীর বাতিলে পূর্ণাঙ্গ রায় নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মসূচির উদ্বোধনী পর্বে প্রধান বিচারপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের সঙ্গে অনেক রাঘব বোয়াল জড়িত ছিল। এই মামলার নথি পর্যালোচনা করে সেটি জানা গেছে। কিন্তু তদন্তে ত্রুটির জন্য তাদের বিচারে সোপর্দ করা যায়নি। যদিও আমাদের রায়ে আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি, এটি একটি ফৌজদারি ষড়যন্ত্র। পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল এবং তাদের বিচারে সোপর্দ করার জন্য। আজকের দিনটি জাতির জন্য একটি দুঃখময় দিন। প্রধান বিচারপতি বলেন, আজকে আমাদের ইতিহাসে একটি মর্মান্তিক দিন। উপমহাদেশে জাতির পিতা দুজনকে হত্যা করা হয়। একজন মহাত্মা গান্ধী, অপরজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড সম্পূর্ণ কাপুরুষোচিত বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হয়তোবা কারও শত্রু বা বিরাগভাজন হতে পারেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ছোট ছেলে শিশু শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ যাঁরা নব্য বিবাহিত, আজকে পত্রিকায় পড়লাম, তাঁদের গায়ে হলুদ হয়েছিল। এগুলো মুছে যায়নি। বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসের, উনি রাজনীতিতে ছিলেন না। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুর সমস্ত পরিবারকে এই ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা স্তম্ভিত হয়ে যাই, যে রকম তারা হত্যা করেছিল। আরও কষ্টদায়ক হলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যাকারীদের রাষ্ট্রের আইন দ্বারা বিচারের পথ বন্ধ করে দেয়া। আমি এই বিচার বিভাগের একজন সদস্য হিসেবে অত্যন্ত গৌরবান্বিত বোধ করছি। এই সুপ্রিম কোর্ট ওই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে সেই বিচারের পথ প্রশস্ত করেছিল।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, আমি যখন আপিল বিভাগের সবচেয়ে কনিষ্ঠ বিচারক, তখন অসুস্থ ছিলাম। সিঙ্গাপুরে আমার ক্যানসারের চিকিৎসা চলছিল। আমি চিকিৎসায় থাকা অবস্থায় মামলাটির বিচারের জন্য বেঞ্চ গঠন করা নিয়ে সমস্যা চলছিল। আমাকে বলা হয় তাড়াতাড়ি চলে আসার জন্য। ডাক্তার তখনো বলেনি, আমি বাঁচতে পারব কি না? যা-ই হোক, আমি আমার চিকিৎসা বাদ দিয়ে চলে আসলাম, পরে শপথ নিয়ে চিকিৎসার জন্য চলে গেলাম।
আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতির জনক, এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। উনি ছিলেন বলে দেশ স্বাধীন হয়েছে। সে কারণে আমি আজ আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি হতে পেরেছি। পাকিস্তান যদি থাকত, হাইকোর্ট পর্যন্ত হয়তো যাওয়া যেত, কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বা বিচারপতি হওয়া কল্পনার বাইরে ছিল। কাজেই বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করি। এ জন্য করি, আমি স্বাধীন দেশের একজন নাগরিক, সেই সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের একজন সিনিয়র বিচারপতি হিসেবে আসীন আছি। হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী পর্বে উভয় বিভাগের বিচারপতিরা ও সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচিতে সহায়তায় রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সিফিশন মেডিসিন বিভাগ। ১২০ জন স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য নিবন্ধন করেছেন। বেলা দুইটা পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলে। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে দ্বিতীয় বারের মতো রক্তদান কর্মসূচি পালন করছে সুপ্রিম কোর্ট।



 

Show all comments
  • সাব্বির ১৬ আগস্ট, ২০১৭, ৪:০১ এএম says : 0
    আমরা অপেক্ষায় রইলাম
    Total Reply(0) Reply
  • afsar shikder ১৬ আগস্ট, ২০১৭, ১১:৫৭ এএম says : 0
    good &honest man
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধান বিচারপতি

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ