Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ভুল তথ্য বন্ধের নির্দেশ মন্ত্রণালয়ের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এক কোটি মানুষ

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দেশের চলমান বন্যায় দুই সপ্তাহে ৩২ জেলার প্রায় পৌনে এক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এতদিন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ভিন্ন ভিন্ন তথ্য সরবরাহ করলেও এবারই প্রথম দুই দপ্তর বন্যার ক্ষতি নিয়ে একই রকম তথ্য দেয়া হয়েছে। এদিকে দেশে চলমান বন্যা বয়ে যাওয়ার ঘটনার ১৫ দিন পরে এ তথ্য প্রকাশ করলো মন্ত্রণালয়। গতকাল বুধবার মন্ত্রণালয়ের জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্রের (এনডিআরসিসি) উপ-সচিব জিএম আব্দুল কাদের ইনকিলাবকে বলেন, বন্যায় ৩২ জেলায় এ পর্যন্ত ৭৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৩৭ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জেলায় মৃত্যু হয়েছে ১৩২ জনের।
অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রাঙামাটি, নীলফামারী, গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, জামালপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজবাড়ী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, যশোর, মৌলভীবাজার, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, মুন্সীগঞ্জ, নাটোর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ঢাকা, শেরপুর জেলার বিস্তীর্ণ জনপদ এই দফায় বন্যার কবলে পড়েছে। দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৩২ জেলায় ২০১টি উপজেলা ও ৫১টি পৌরসভা বন্যাকবলিত হয়েছে। ২ লাখ ৯৬ হাজার ২৭৯ জন এ বন্যায় সর্বস্ব হারিয়েছেন। আরও ৭১ লাখ ৮৬ হাজার ৩৫৮ জন আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যায় ৭৫ হাজার ৩৩১টি ঘর সম্পূর্ণ এবং ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৮২৫টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুড়িগ্রামে ২৩ জন, লালমনিরহাটে ৬ জন, সুনামগঞ্জে ২ জন, নেত্রকোনায় ৪ জন, নীলফামারীতে ৬ জন, গাইবান্ধায় ১৩ জন, সিরাজগঞ্জে ৬ জন, দিনাজপুরে ৩০ জন, জামালপুরে ১৪ জন, ঠাকুরগাঁওয়ে ১ জন, নওগাঁয় ৫ জন, বগুড়ায় ৪ জন, যশোরে ৩ জন, টাঙ্গাইলে ২ জন, শেরপুরে ৩ জন, মৌলভীবাজারে ২ জন, কুমিল্লায় ২ জন, রংপুরে ৩ জন, মানিকগঞ্জে ১ জন ও জয়পুরহাটে ২ জন মিলিয়ে মোট ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে দুই সপ্তাহে। বানের পানিতে ১০ হাজার ৫৮৩ হেক্টর ফসলি জমি সম্পূর্ণ এবং ৬ লাখ ৫৮৭ হেক্টর জমি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গত জেলাগুলোতে অন্তত ৬২ হাজার ২০৮টি টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ৩২ জেলার বন্যা দুর্গতদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা নগদ, ২০ হাজার ৭১৮ মেট্রিক টন চাল এবং ৫৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এর আগে অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের তথ্যের মধ্যে গরমিলের কারণে সমন্বয়হীনতা দেখা দিলে মন্ত্রণালয়ের এনডিআরসিসি ও অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে একরকম তথ্য সরবরাহের নির্দেশনা আসে। অধিদপ্তরের পরিচালক যুগ্মসচিব মো. আবু তালেব বলেন, তথ্য সরবাহের সঠিকতা নিয়ে মন্ত্রণালয় খুব অসন্তুষ্ট। কয়েকদিন ধরে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের তথ্যের ভিন্নতা ছিল। এজন্যে সব কিছু যাচাই করে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর মঙ্গলবার থেকে একই তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ে উপ সচিব জিএম আবদুল কাদের বলেন, জেলা প্রশাসক ও জেলা ত্রাণ কর্মকর্তার মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের কথা থাকলেও অধিদপ্তর সংবাদমাধ্যমের খবর থেকে নিয়ে বিভিন্ন তথ্য দেয়ায় জটিলতা তৈরি হয়। মঙ্গলবার সচিবের নির্দেশনা এসেছে, কোনোভাবেই জেলা প্রশাসক ও ত্রাণ কর্মকর্তার বাইরে অন্য সূত্রের তথ্য নেয়া যাবে না। কিছুদিন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের তথ্যের ভিন্নতা থাকলেও আজ থেকে একই রকম তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে উত্তরের দুর্গত এলাকাগুলোর বানের পানি নেমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা আর খুব বেশি বাড়বে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ