Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বিদ্রোহীদের চাপে কোণঠাসা আ.লীগের দলীয় প্রার্থীরা

প্রকাশের সময় : ১৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে

আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের চাপে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত নৌকার প্রার্থীরা। উপজেলার সকল ইউনিয়নে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। আশাশুনি নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫৩ জন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১১৬ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে একজন মহিলাসহ ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে আ.লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি প্রভাষক মোনায়েম হোসেন সানা। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন লড়ছেন আছিফুর রহমান তুহিন। লাঙ্গল প্রতীকে সাইফুল্লাহ, হাতপাখায় লুৎফর রহমান ও পান্না কায়সার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছন। এ ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনে ৯ ও সাধারণ আসনে ২৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। বুধহাটা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে একজন মহিলাসহ ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এরমধ্যে আ.লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন প্রকৌশলী আ.ব.ম মোছাদ্দেক। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান। এছাড়াও বর্তমান বুধহাটা ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মেম্বর শরিফা খাতুন ফুটফুটি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীকে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে সংরক্ষিত ১১ ও সাধারণ আসনে ৪১ জন প্রার্থী রয়েছে। কুল্যা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী রয়েছে। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছন ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ ঢালী। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম রফিকুল ইসলাম। এ ইউনিয়নের আ.লীগের একমাত্র বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন। এলাকায় প্রচার আছে খুব কম সময়ের মধ্যে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়া এ নেতা নিজেকে বিজয়ী করতে কালো টাকা ছড়াচ্ছেন। তাছাড়া এ ইউনিয়নে ইয়াকুব আলি হাতপাখা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে সংরক্ষিত ১০ ও সাধারণ আসনে ৪১ জন প্রার্থী রয়েছে। দরগাহপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রার্থী রয়েছে। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেখ মিরাজ আলী। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন শেখ তারিকুল হাসান। এছাড়া হাতপাখা প্রতীকে মাহবুবর রহমান, আ.লীগ নেতা এ এস এম জমির উদ্দীন ঘোড়া, বিএনপির সমর্থিত সাইফুল খান মোটরসাইকেল, সোহেল মামুল টেবিল ফ্যান ও জাহাঙ্গীর আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ১৩ ও সাধারণ আসনে ৩৪ জন প্রার্থী রয়েছে। বড়দল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে ৮ জন প্রার্থী রয়েছে। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আব্দুল আলীম মোল্যা। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আজহারুল ইসলাম মন্টু। হাতপাখা প্রতীকে সবুর সরদার, আ.লীগ সমর্থিত প্রার্থী আব্দুর রউফ গাজী ঘোড়া, আব্দুল হান্নান মন্টু আনারস, বিশ্বজিৎ ম-ল ঢোল, আবুল কালাম সানা মোটরসাইকেল ও শিক্ষক আব্দুল গফুর চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ৮ ও সাধারণ আসনে ৪৩ জন প্রার্থী রয়েছে। আশাশুনি সদর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী রয়েছে। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে চেয়ারম্যান এড. শহিদুল ইসলাম পিন্টু। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন জিএম আবু হেনা মোস্তফা কামাল। লাঙ্গল প্রতীকে আজাদ হোসেন টুটুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এ ইউনিয়নে আ.লীগ নেতা ঢালী সামছুল আলম আনারস ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সম সেলিম রেজা মিলন চশমা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে সংরক্ষিত ১৫ ও সাধারণ আসনে ৩৩ জন প্রার্থী রয়েছে। শ্রীউলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী রয়েছে। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা আ.লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জেলা আ.লীগের সদস্য বর্তমানে চেয়ারম্যান আবু হেনা মু. সাকিলুর রহমান। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এড. নূরুল আমিন। এ ইউনিয়নে আ.লীগের একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থীর রয়েছেন। এরা হলেন ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি এসএ নূর মোহাম্মদ ও জেলা আ.লীগের উপদেষ্টা এড. জহুরুল হক ও ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি প্রভাষক দীপঙ্কর কুমার বাছাড় দিপু। এখানে সংরক্ষিত ১০ ও সাধারণ আসনে ৩৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। খাজরা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এ ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক বর্তমানে চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ডালিম। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বোরহান উদ্দিন বুলু। হাতপাখা প্রতীকে হাফিজুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঘোড়া প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি রুহুল কুদ্দুছ। এছাড়াও এখানে আ.লীগ নেতা রবিউল ইসলাম আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এখানে সংরক্ষিত ১০ ও সাধারণ আসনে ৪৬ জন প্রার্থী রয়েছে। আনুলিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুছ। এ ইউনিয়নে আ.লীগের একমাত্র বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান। এছাড়া এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ১০ ও সাধারণ আসনে ৩৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রতাপনগর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আ.লীগের মনোনিত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন শেখ শাহ আলম। এ ইউনিয়নে আ.লীগের একমাত্র বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আনারস প্রতীক পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যুবলীগ নেতা খালিদুর রহমান বাবু। এছাড়াও এ ইউনিয়নে সংরক্ষিত ১১ ও সাধারণ আসনে ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছন। কাদাকাটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন প্রার্থী রয়েছে। আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি দীপঙ্কর কুমার দীপ। বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তুহিন উল্লাহ তুহিন। হাতপাখা প্রতীকে আব্দুল আজিজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ইউনিয়নে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে দুই জন। তারা হলেন বর্তমান চেয়ারম্যান মফিজুল হক মোড়ল ও মিজানুর রহমান মন্টু। সংরক্ষিত ৯ ও সাধারণ আসনে ৩২ জন প্রার্থী রয়েছে। এ বিষয়ে জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, জেলায় দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকে ইতোমধ্যে সতর্ক করা হয়েছে। একই সাথে তাদের একটি তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্রোহীদের চাপে কোণঠাসা আ.লীগের দলীয় প্রার্থীরা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ