Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বঙ্গবীর ওসমানীর ৯৯ তম জন্মদিন আজ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল মুহাম্মদ আতাউল গণি ওসমানীর আজ ৯৯তম জন্মদিন। ১৯১৮ সালের পহেলা সেপ্টেম্বর সিলেটের সুনামগঞ্জ মহকুমা শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ব্যাক্তিগত জীবনে অবিবাহিত বাংলার এই বলিষ্ঠ বীর সেনানী বাঙ্গালী জাতিসত্তার অভ্যুদ্বয়ের অন্যতম মহানায়ক ও স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান সিপাহসালার ছিলেন।
তাঁর জীবদ্ধশায় কোন যুদ্ধে তিনি পরাজিত হননি। জীবনের সব ক্ষেত্রে সফল এ বীরযোদ্ধা কখনো কোনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের শিকারে পরিণত হলেও কখনো হার মানেনি, অন্যায়ের কাছে তিনি কখনোই মাথা নত করেননি। পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের মুক্তি ও অধিকার অর্জন, শোষণ-বঞ্চনা, নিপীড়ন, নির্যাতন, অন্যায়, অসত্য আর অসুন্দরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ও বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর এবং সুখী, সমৃদ্ধ সুন্দর পৃথিবী গড়াই ছিল তার জীবনের লক্ষ্য।
বাংলাদেশ যখন পাকিস্তান নামক একটি অস্বাভাবিক রাষ্ট্রের অংশ। তখন বাঙ্গালী জাতিসত্ত¡ার অভ্যুদ্বয়ের মহানায়ক অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনীতিতে যোগদানের আহŸান জানালে কর্নেল (অবঃ) ওসমানী আওয়মী লীগে যোগ দেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে গণপরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠি সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করলে ওসমানী সিংহের মতো গর্জে উঠেন। তারই হাতে গড়া বঙ্গশার্দুলদের নিয়ে তিনি প্রাক্তন সৈনিক সংস্থা গড়ে তুলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তার পরের ইতিহাস অত্যন্ত করুণ বেদনাদায়ক ও হৃদয়বিদারক। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাত্রিতে ঘুমন্ত মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। শুরু হয় বাঙ্গালী জাতিসত্ত¡ার অভ্যূদ্বয়ের মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ। গোটা জাতি সেদিন তাকে পূর্ণমন্ত্রীর মর্যাদায় বরণ করে নেয় মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি ও সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে। জেনারেল ওসমানী সাহস ও বুদ্ধিমত্তার সাথে গড়ে তুলেছিলেন মুক্তিবাহিনী। মাত্র ৯ মাসের যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সহায়তায় তিনি পরাজিত করেন পরাশক্তির মদদপ্রাপ্ত আধুনিক সমরাস্ত্রে সুসজ্জিত বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী পাকিস্তানি বাহিনীকে। তাকে ‘বঙ্গবীর’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। অতঃপর ১৯৭২ সালের ৭ এপ্রিল সেনাবাহিনীর পূর্ণ জেনারেল পদমর্যাদায় তিনি সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এর পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একজন জনপ্রতিনিধি অর্থাৎ সংসদ সদস্য হয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ ও বিমানমন্ত্রী হিসেবে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুণর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। তবে তিনি বাকশালের বিরোধিতা করে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। বঙ্গবীর ওসমানী ছিলেন গণতন্ত্রের আপোষহীন সৈনিক। মানুষের সেবাকেই জীবনের ব্রত রূপে তিনি বেছে নিয়েছিলেন। দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে লন্ডনের এক হাসপাতালে ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।



 

Show all comments
  • আলমগীর রিয়াদ ৯ আগস্ট, ২০১৮, ৭:১২ পিএম says : 0
    আল্লাহ যেন ওনাকে ওপারে ভালো রাখুন। দেশ ও মাতৃকার জন্য যিনি জীবনের ভোগ বিলাস ত্যাগ করেছেন, তিনি ই শ্রদ্ধার পাত্র।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গবীর

১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ