Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নিধন করা হচ্ছে -জাতিসংঘ

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু স¤প্রদায়ের ওপর মিয়ানমারের পরিকল্পিত আক্রমণের সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জেইদ রা’দ আল হুসেইন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নিধন করা হচ্ছে। সুইজারল্যান্ডের জেনেভার গতকাল জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে জেইদ রা’দ আল হুসেইন বলেন, জাতিসংঘের তদন্তকারীদের রাখাইন রাজ্যে ঢুকতে না দেয়ায় সেখানকার পরিস্থিতি পুরোপুরি নির্ণয় করা যাচ্ছে না। কিন্তু যে পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে পাঠ্য বইয়ের জন্য ‘জাতিগত নিধনের’ উদাহরণ হয়ে থাকবে।
মানবাধিকার কমিশনের প্রধান বলেন, এই অভিযান স্পষ্টতই ভয়াবহ এবং তা আন্তর্জাতিক নীতি মৌলিক ভিত্তির লঙ্ঘন। আমরা অনেক খবর পেয়েছি এবং স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, নিরাপত্তাবাহিনী ও স্থানীয় মিলিশিয়ারা রোহিঙ্গাদের গ্রাম পুড়িয়ে দিচ্ছে, একের পর বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করছে। এমনকি পলায়নরত বেসামরিক নাগরিকদের গুলি করা হচ্ছে।
এর আগে ২০১৬ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর মিয়ানমারের সরকারের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন অভিযান চালানোর অভিযোগ তুলেছিল। সামরিক অভিযানে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর তুলেছিল। সামরিক অভিযানে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতা ও নিপীড়নে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় শান্তিতে নোবেল জয়ী ও মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চি’র সরকারের সমালোচনা করে আসছেন।
জেইদ রা’দ বলেন, আমি সরকারকে (মিয়ানমার) আহ্বান জানাচ্ছি চলমান নির্মম সামরিক অভিযান বন্ধ করার। অভিযানের আইনের যেসব লঙ্ঘন হয়েছে সেগুলোকে বিচারের আওতায় আনা এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে ব্যাপক আকারের বৈষম্য রয়েছে তা নিরসন করার।
মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জানান, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সীমান্তে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রাখায় তিনি স্তম্ভিত হয়েছেন। কারণ এতে করে বাংলাদেশে পালানোর চেষ্টাকারী রোহিঙ্গাদের মাইনের ফাঁদে পড়ে মৃত্যু হতে পারে। জেইদ রা’দ মিয়ানমার সরকারের অবস্থানেরও সমালোচনা করেছেন। মিয়ানমার সরকার জানিয়েছে, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যদি নিজেদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে পারে তাহলে তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৬২ সাল থেকেই কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন অধিকার সঙ্কুচিত করে আসছে। এর মধ্যে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব না দেওয়ার বিষয়ও রয়েছে। জেইদ বলেন, এই কারণেই অনেক মানুষকে জোর করে উচ্ছেদ করা হচ্ছে যাতে করে তারা ফিরতে না পারে।
রোহিঙ্গারা নিজেদের বাড়িঘরে আগুন দিচ্ছে- মিয়ানমার সরকারের এমন দাবি বন্ধের আহ্বান জানান জেইদ। তিনি বলেন, সরকারের এই অবস্থান বাস্তবতাকে অস্বীকার করছে এবং আন্তর্জাতিকভাবে দেশটির ভাবমর্যাদা ক্ষুন্ন হচ্ছে। অথচ এই সরকারই নিজেদের সদিচ্ছার কারণে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা পেয়েছিল।
রাখাইনের সহিংসতা কবলিত অঞ্চলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিদের প্রবেশের সুযোগ দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জেইদ। সূত্র : এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ