Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঐতিহাসিক রামরায় দীঘি গড়ে উঠছে পিকনিক স্পট হিসেবে

| প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) থেকে আশরাফুল আলম : ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকৈলে অবস্থিত ঐতিহাসিক রামরায় দিঘী। দিঘীটি পিকনিক স্পট হিসেবে পরিচিত। দিঘীটি একনজর দেখতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসেন। বিশাল আকৃতির দিঘীর চার পাড়ে কয়েক হাজার লিচু গাছ ও পাড়গুলোর শীর্ষে এবং পেছনভাগে কয়েক হাজার বনজ ঔষুধি বৃক্ষ রোপন করায় দিন দিন এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব রামরায় দিঘীকে নেচারাল পার্ক হিসেবে ঘোষনা দেয়েছিলেন। সাবেক জেলা প্রশাসক জালাল আহম্মেদের উদ্যোগে এ পার্কটি বৃহত্তর দিনাজপুর অঞ্চলের পর্যটন স্থান হিসেবে রূপ নিয়েছে। রামরায় দিঘী বরেন্দ্র এলাকায় প্রাচীন জলাশয়গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তর দিঘী। দিঘীটি ৯’শ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৫৫০ মিটার আয়তনের এ দিঘীর গভীরতা ছিল ৮ থেকে ৯ মিটার। দিনাজপুর গ্যাজেটেরিয়া এবং ড. সেনের দিনাজপুরের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৮’শ খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিকে এ অঞ্চল ছিল মালদুয়ার পরগনার অন্তর্গত। তখন তার নাম ছিল রামগঞ্জ। সে সময় এ এলাকার জমিদারি ছিল নাথপন্থি দুই চিরকুমারী সহোদর রাণীর হাতে। বড় ও ছোট রাণী বলে পরিচিত এ দুই রাণী ছিল অত্যন্ত প্রজাবৎসল। প্রজাদের পানীয়-জলের কষ্ট নিবারনের জন্য তিনি ৩৬০ টি পুকুর খনন করেন। রামরায় দিঘী তার একটি।
রাণীশংকৈল উপজেলার ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে হোসেনগাঁও ইউনিয়নের উত্তরগাঁও গ্রামের খোলা মাঠের প্রান্তরে অবস্থিত এ রামরায় দিঘী ৫২ দশমিক ২০ একর জমির ওপর। এ পুকুরের শুধু জলভাগের আয়তন ৩৩ দশমিক ৮৬ একর এবং পাড় ১৮ দশমিক ৩৪ একর। পাড়গুলো বেশ উঁচু। দিঘীর দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ে ছিল সান বাঁধানো ঘাট। দিঘীর চারপাশের পাড়গুলোর উচ্চতা প্রায় ২২ ফুট। সাবেক জেলা প্রশাসক জালাল আহম্মেদ এ বিশাল ঐতিহাসিক পুকুরটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে এর চারপাশে পার্ক গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন। ২০০২ সালের ১৮ জুলাই সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পার্ক পরিকল্পনায় একমত পোষণ করেন। বৃক্ষরোপ উদ্বোধনের মাধ্যমে রামরায় হতে এ দিঘীর নামকরণ করা হয় রাণীসাগর।
প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে পুকুরের চার পাশের পাড়ে উন্নতমানের ১ হাজার ২৬০ টি লিচু, ৪শ’কাঠাল ৫ হাজার ভেষজ চারাসহ বনজ চারা রোপন করা হয়। ইতিমধ্যে এখানে এক মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হযেছে। এ ছাড়া দিঘীর চারদিকে কাটাতারের বেড়া দেওয়ার জন্য সাড়ে ৯ লাখ টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। আদো সে তারের বেড়া দেখা যায়নি। এই পার্কটিতে লোকজনের একমাত্র বিনোদনের স্থান গড়ে উঠেছে। লোকজনের যোগাযোগের সুবিধার্থে রাণীশংকৈল-কাঠালডাঙ্গী পাকা রাস্তা থেকে দিঘীর পশ্চিম পাড় পর্যন্ত ১ দশমিক ১ কিঃ মিঃ পাকা রাস্তা এবং হরিপুর-রাণীশংকৈল পাকা রাস্তা থেকে দিঘীর পশ্চিম পাড় পর্যন্ত ২ কিঃ মিঃ পাকা রাস্তা করার প্রকল্প গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে হাজার হাজার স্থানীয় পর্যটকের কোলাহলে নিভৃত পল্লী উত্তরগাঁও এখন ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। একটু অবসর সময় কাটাতে জেলার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের বিনোদন পিয়াসী মানুষ সপরিবারে ছুটে আসছেন এখানে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ