Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করছে মিয়ানমার

স্থল বোমায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের জীবন ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন

ইনকিলাব ডেস্ক: | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। পলায়নপর রোহিঙ্গাদের পথে পেতে রেখেছে স্থল বোমা। এতে রোহিঙ্গা মুসলিমদের জীবন ভয়াবহ বিপদের মুখে। গতকাল শনিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। অবিলম্বে মানুষের প্রাণহানিতে ব্যবহৃত এসব স্থল বোমা ব্যবহার বন্ধের জন্য মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি স্থল বোমা নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক ১৯৯৭ সালের মাইন ব্যান ট্রিটি বা স্থল বোমা বন্ধ সংক্রান্ত চুক্তিতে যুক্ত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে মিয়ানমার সরকারের প্রতি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক মিনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেছেন, নৃশংসতা থেকে পালাতে গিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা এই স্থল বোমার জন্য মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর উচিত এসব অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করা। কারণ, এসব অস্ত্র মানুষের প্রাণহানি ঘটায়, বিকলাঙ্গ করে দেয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তার রিপোর্টে প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা দিয়ে বলেছে, নিরপেক্ষ সংবাদ, ছবি ও ভিডিও থেকে এটা স্পষ্ট যে, মিয়ানমারের সেনারা বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্তে প্রাণঘাতী স্থল বোমা পেতে রেখেছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে রাস্তার পাশেও স্থল বোমা পেতে রেখেছে সেনারা। ওদিকে অবকাঠামো ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) নামে। বুথিডাং ও রাথেডাং এলাকার দু’জন রোহিঙ্গা শরণার্থী বলেছেন, গ্রামে সেনাবাহিনী প্রবেশ ও হামলার আগে রাস্তার পাশে স্থল বোমা পেতে রাখতে দেখেছেন সেনাবাহিনীকে। তাদের একজন ৩৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ। তিনি বলেছেন, এক প্রতিবেশীরছেলেকে এমনই একটি স্থল বোমার ওপর পা ফেলতে দেখেছেন তিনি। এতে ওই ছেলেটির ডান পা উড়ে গেছে। সীমান্ত থেকে ২০০ মিটার দূরে তাউং পাইও লেট ইয়ার এলাকাকে বেশির ভাগ রোহিঙ্গা প্রবেশের পথ হিসেবে ব্যবহার করে। ৪ঠা সেপ্টেম্বর সেখানে একটি স্থলবোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। হিউম্যান রাইট ওয়াচ দেখতে পেয়েছে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো থেকে আগুন, ধোয়া আকাশে ছড়িয়ে পড়ছে। এসব গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। সীমান্তের কাছে ওই একই পয়েন্টে তিনটি আলাদা স্থল বোমা বিস্ফোরিত হয় পরের দিনই। তাতে তিনজন রোহিঙ্গা গুরুত্বর আহত হন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে দু’জন রোহিঙ্গা বলেছেন, ৪ঠা সেপ্টেম্বরের বিস্ফোরণের আগে তাউং পাইও লেট ইয়ার বসতি এলাকায় সেনাবাহিনীর পোশাক পরা কিছু মানুষকে দেখা গেছে মাটিতে স্থল বোমা পেতে রাখতে। ৪ঠা সেপ্টেম্বর সীমান্তের কাছে সড়কে টহল দিতে দেখা গেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে। সেখানে নো ম্যানস ল্যান্ডে কয়েকজন সেনা সদস্যকে দেখা গেছে হাঁটু গেড়ে বসে মাটি খুড়ছেন। এরপর কালোমতো কিছু একটা মাটিতে পুতে রাখছেন। ২৫ শে আগস্ট আরসার উগ্রপন্থিদের হামলার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ অভিযান শুরু করেছে। জাতিসংঘ একে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহারে অগ্নিসংযোগ, গণহত্যা, মানবতা বিরোধী জঘন্য সব অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে। এ কারণে বাধ্য হয়ে কমপক্ষে চার লাখ ২২ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। এর প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি এর আগেই আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। তারা আহ্বান জানিয়ে বলেছে, রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি পাবলিক মিটিং করতে এবং মিয়ানমারে সেনাবাহিনী যে জাতি নিধন চালিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে নিন্দা জানাতে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবরোধ আরোপের আহ্বান জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অবরোধ দিতে। অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে মিডিয়ার খবর অনুযায়ী মিয়ানমার সরকার সীমান্ত এলাকা থেকে স্থল বোমা ও বিস্ফোরক ডিভাইস সরিয়ে ফেলতে সম্মত হয়। গার্ডিয়ান, রয়টার্স, বিবিসি।



 

Show all comments
  • Mira Rehnuma ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:১৭ পিএম says : 0
    জাতিসংঘ নামক ..........সংস্থা মজা লয় নাকি?
    Total Reply(0) Reply
  • Jahanara Asma ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৩৪ পিএম says : 0
    Jatisongho na altimatum dilo ter ki holo?
    Total Reply(0) Reply
  • Rubel ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৩৪ পিএম says : 0
    আল্লাহ আরাকানবাসীদের রক্ষা কর
    Total Reply(0) Reply
  • Dona Misu ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৪১ পিএম says : 0
    আল্লাহ তুমি সব মুসলিমকে এক হওয়ার তৌফিক দাও
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmad Hoseen ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:৩১ পিএম says : 0
    গন হত্যার জন্য আন্তরজাতিক আদালতে এ নরপশুদের কঠোর বিচার দাবী করছি ৷ সকল অন্যায় কারীর সাজা নিশ্চিত করা বিশ্ব বিবেকের কাজ ৷আমরা চাই অন্যায়কারী সাজা প্রাপ্ত হোক ৷
    Total Reply(0) Reply
  • Md Belal ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:৪৭ পিএম says : 0
    আমার বিশ্বাস, রোহিঙ্গাদের বিষয়ে পাকিস্থান বাংলাদেশ ইন্দোনেশিয়া মালয়েশিয়া সৌদি ইরান ও তুরস্ক একত্রে কাজ করলে, সব রোহিঙ্গা আরাকানে নাগরিক মর্যাদায় ফিরে যেতে পারবে।।
    Total Reply(0) Reply
  • Afroza Mili ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:৪৯ পিএম says : 0
    হে আল্লাহ এই নির্যাতিতদের ফরিয়াদ তুমি কবুল করো
    Total Reply(0) Reply
  • Milan Sarkar ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:৫১ পিএম says : 0
    আনেক সংস্থা রাষ্ট্র প্রধান বিভিন্নভাবে এর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে কিন্তু ইহা বন্ধের কোন কার্যকর পদক্ষেপ কোথায়! ?
    Total Reply(0) Reply
  • Iqbal Hossain ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৩:৩২ পিএম says : 0
    আরাকানে ইসলাম কায়েম হবে ইনশা আল্লাহুল আজিজ।এতোগুলো প্রাণ বিপলে যাবেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Azim Uddin ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৩:৩৪ পিএম says : 0
    আমাদের এক হতে হবে।মুসলিমদের আজ ঐক্যবদ্য হয়ে সমস্যা সমাধান করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ