Inqilab Logo

শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরার ফাঁদ : চাঁই ও পল

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) থেকে আসলাম পারভেজ : | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

হাটহাজারীতে চাঁই ও পলের ব্যবহার কমে যাচ্ছে। স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময় এমনকি পরবর্তীতেও এখানে মাছ ধরার এই সব ফাঁদের ব্যাপক প্রচলন ছিল। কারণ খাল বিল ছড়ার প্রচুর মাছ ছিল। সামান্য বৃষ্টিতে মাছ উজানে যেত। এই মাছ আটকানোর জন্য বিলে চাঁই বসানো হতো। জমির আইল কেটে চাঁই বসালে প্রচুর মাছ চাঁইয়ের ফাঁদে আটকা পড়ত। আর চাঁইয়ের আটকা পরা মাছ বিক্রি করে স্থানীরা পরিবারের বরণ-পোষণও চালাত। তাই অনেকে চাঁই দিয়ে মাছ ধরার জন্য বর্ষার প্রতিক্ষায় থাকত। বিশেষ করে যাদের নিজস্ব পুকুর আছে। তারা চাঁইয়ের ভেতর মাছের খাবার দিয়ে রাতে পুকুরে বসিয়ে রাখত। আর তা খেতে গিয়ে মাছ চাঁইয়ের ভেতর আটকে যেত। একইভাবে পল দিয়ে মাছ ধরার ফাঁদও ছিল সেইরকম। ভাদ্র মাসে রোদে অতিষ্ট হয়ে মাছ যখন একটু ছায়ার জন্য ছুটাছুটি করত তখন পল দিয়ে মাছ আটক করা হত। খাল ও পুকুর থেকে পল দিয়ে মাছ ধরা হত। ব্যাপক হারে জমিতে কীটনাশক প্রয়োগের ফলে মাছের বংশবৃদ্ধি যেমন কমেছে তেমনি অধিক জনসংখ্যার মাছের যোগান দিতে ব্যাপক হারে মাছ নিধনের ফলে মাছ এখন বিলে খালে নেই বললে চলে। তাই চাঁই ও পল দিয়ে মাছ ধরতে এখন আর কেউ আগ্রহী নয়। তারা মাছ না পেয়ে হতাশ হয়ে চাঁই বসাতে বিরক্তিবোধ করেন। অনেক পরিবার বর্ষা আসার পূর্বে বিক্রির জন্য চাঁই পল ইত্যাদি তৈরি করত। এটা ছিল পরিবারে বাড়তি আয়ের অবলম্বন। বিশেষ করে মহিলারা বাঁশ ও বেত চাঁই ও পল তৈরি করে পরিবারে অর্থের যোগান দিত। আগেকার দিনের মত বর্তমানে তেমন চাঁই আর পল বিক্রি হয়না। কারণ এইসব ফাঁদ দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়। এখন অবশ্য যাদের পুকুর আছে কিংবা পোনার চাষ করে তারাই শুধু চাঁইয়ের ব্যবহার করে। পুকুরে পানি অধিক হলে পানি কমানোর জন্য চাঁই বসানো হয়। যাতে পোনা পুকুর থেকে বের হতে না পারে। হালদা নদীর নাজির হাট এলাকার কোন কোন স্থানে চাঁই দিয়ে ছোট মাছ ও চিংড়ি ধরার কার্যক্রম চলে। অন্য কোন স্থানে চাঁইয়ের প্রচলন নেই বললেও চলে। ব্যবহার কমে যাওয়ায় তেমন বিক্রি হয় না বলে উৎপাদকের পরিবারে বাড়তি আয়ও কমে গেছে। তাছাড়া খাল বিল মাছ শূন্য হয়ে পরায় চাঁই, পল দিয়ে মাছ ধরে যারা বাজারে বিক্রি করত। তাদের আয়ও কমে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাঁই ও পল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ