Inqilab Logo

শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নির্বিষ বোলিংয়ে প্রোটিয়াদের দিন

| প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : ‘পেসারদের স্বর্গ দক্ষিণ আফ্রিকা’- বচনামৃতের মত আঁকড়ে সেদেশে পাড়ি জমিয়েছিল বাংলাদেশ। দল নির্বাচনের সময়ও মাথায় রেখেছিল ঐ একটি প্রচলিত বাক্য। সাকিব আল হাসানের মত তারকাকে দিল ছুটি, অভিজ্ঞতার আলোকে না হয়ে দল সাজলো পেস নির্ভর। সেখানে এক সপ্তাহ থাকার পরও কন্ডিশন, উইকেট আর প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তাকে বিবেচনায় না নিয়ে টস জিতেও বোলিংয়ের সিদ্ধান্তটিই যে কাল হলো তা হাড়ে হাড়ে টের পেল বাংলাদেশ।
পচেফস্ট্রুমের সেনওয়েস পার্ক স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিন হাতে বল ঘুরালেন বাংলাদেশের ৭জন। তৃতীয় সেশনেও মুস্তাফিজ, তাসকিন, শফিউলদের ঝুলিতে নেই কোন উইকেট। মাঝে স্পিনেও চেষ্টা করে দেখলেন অধিনায়ক। সেখানেও ব্যর্থ মিরাজ, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহ, সাব্বিররা। চা-বিরতিতে দুই দলের সেরা পারফরমারের ছবি আলাদাভাবে দেখানো হলো। মাত্র সেঞ্চুরি করা ডিন এলগারই দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা। আর বাংলাদেশের? মাহমুদউল্লাহ! দুই ওভার বল করে ১৩ রান দিয়েই সেরা হয়ে গেছেন এই অলরাউন্ডার। কারণ, দলের সব বোলার যখন উইকেটশূন্য থাকেন, তখন যে সবচেয়ে কম রান দেওয়া বোলারকেই বেছে নেওয়া হয়। এমনই হতাশার এক দিন পার করছে বাংলাদেশ! প্রথম দিন শেষে ১ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২৯৮ রান। ১২৮ রানে অপরাজিত ডিন এলগার, হাশিম আমলা আছেন ৬৮ রানে।
বাংলাদেশি বোলারদের এমন পারফরম্যান্সের পরও যে একটা উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিক দল, এর পুরো কৃতিত্ব এলগারের। ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে দ্রæত এক রান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে রান নেওয়া সম্ভব নয় বলে যখন মানা করে দিলেন, ততক্ষণে বড় দেরি হয়ে গেছে। নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে সময়মতো পৌঁছাতে পারলেন না এইডান মার্করাম। অভিষেকে ৯৭ রানে রান আউট হওয়ার ‘অনন্য’ এক অভিজ্ঞতা হয়ে ফিরলেন প্রোটিয়া ওপেনার। তবে এর চেয়েও মজার ব্যাপার, অভিষেকেই নার্ভাস নাইন্টিজে রান আউট হওয়ার তৃতীয় ঘটনা এটি। পাকিস্তানের আবদুল কাদির ৯৫ রানে রান আউট হয়েছিলেন ১৯৬৪ সালে। আর এর ১০ বছর পর কিংবদন্তি গর্ডন গ্রিনিজও তাঁর অভিষেকে রান আউট হয়েছিলেন ৯৩ রানে।
এভাবে ইতিহাসের অংশ না হলে প্রায় হারিয়ে বসা এক স্বাদ পেত বাংলাদেশ। টেস্ট আঙিনায় পা রাখার পর প্রথম তিন বছরেই বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ব্যাটসম্যান অভিষেকেই সেঞ্চুরি পেয়েছেন। ২০০৩ সালের পর থেকেই এমন অভিজ্ঞতা পায়নি বাংলাদেশ। তিন রানের জন্য মার্করাম পারলেন না ১৪ বছরের সে ‘অপেক্ষা’ ফুরাতে। মার্করাম সেঞ্চুরি না পেলেও মধ্যাহ্নবিরতির আগের ওভারেই নিজের নবম সেঞ্চুরি পেয়ে গেছেন এলগার। ৯টি চার আর দুটি ছক্কায় অপরাজিত আছেন ১২৮ রানে। ৭ চার আর এক ছক্কায় ফিফটি নিয়ে তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন বিশ্বসেরাদের একজন হাশিম আমলা (৬৮)।
এর আগে বাংলাদেশের একাদশ নির্বাচন নিয়ে চলে ছোটখাট একটা নাটক। ম্যাচের সরাসরি সম্প্রচারে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের ছবিসহ নাম প্রকাশের যে তালিকা দেখানো হয়েছিল তাতে ছিল না সাব্বির রহমানের নাম। তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও শফিউল ইসলামের পাশাপাশি চতুর্থ বোলার হিসেবে ছিল রুবেল হোসেনের নাম। কিন্তু বিভিন্ন ক্রিকেট ওয়েবসাইটে সাব্বিরের নাম ছিল। তবে নামজাদা অনেক সংবাদ সংস্থার প্রকাশিত একাদশে সাব্বিরের নাম ছিল না।
গত অক্টোবরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকের পর বাংলাদেশের প্রায় সব টেস্টেই ছিলেন সাব্বির। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে একমাত্র তিনিই ছিলেন ধারাবাহীক। এরপরও একাদশে তাকে নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোটা ছিল বিষ্ময়কর।
পরে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পাওয়া খেলোয়াড়দের তালিকা দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় সাব্বির দলে আছেন। নেই রুবেল। প্রস্তুতি ম্যাচে বাজে ব্যাটিং করা লিটন দাশ আছেন একাদশে, খেলবেন উইকেটকিপার হিসেবে। একমাত্র স্পিনার হিসেবে একাদশে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাদ পড়েছেন চোটে আক্রন্ত সৌম্য সরকার। গত মার্চের পর আবার ফিরেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ব্যক্তিগত কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে নেই সাকিব আল হাসান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বোলিং

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ