Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গরিবের সোনা মিলন গোল্ড

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

গরীবের সোনা। দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাচ্ছে। যাদের সোনা ক্রয়ের সাধ আছে সাধ্য নেই। গরীবের সোনা তাদের সম্বল। বাস্তবে সাধারণ ও গরীব পরিবারের সোনার চাহিদা মিটাচ্ছে মিলন গোল্ডের ইমিটেশন গহনা। যা হার মানিয়েছে ভারতের সিটি গোল্ডকে। আস্তে আস্তে অভ্যন্তরীণ বাজার দখল করছে গরীবের সোনা ‘মিলন গোল্ড’। তৈরী হচ্ছে ঝিনাইদহ জেলার সীমান্তবর্তী মহেশপুরের গ্রামে গ্রামে। প্রতিদিন হাজার হাজার পিস গলার হার, কানের দুল, হাতের চুড়ি, চেইন, ব্রেসলেট, পায়ের নুপুর, টিকলি ও আংটি গ্রামের ওই কারখানা থেকে সরবরাহ হচ্ছে রাজধানী ঢাকা, যশোর, খুলনা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন ইমিটেশন মার্কেটে। বিক্রিও হচ্ছে ভালো। চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে ভারতের মার্কেটেও। সীমান্ত গ্রামে তৈরীকৃত মিলন গোল্ড বিদেশেও রফতানী করা সম্ভব। এতে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে সক্ষম হবে। পাশাপাশি সাশ্রয় হবে ভারতের সিটি গোল্ড আমদানীর বিপুল পরিমাণ অর্থ। টেকসই, মজবুত ও রং এর দিক থেকে সিটি গোল্ডের চেয়ে কোন অংশেই কম নয় মিলন গোল্ডের গহনা। অথচ দামের বেশ ফারাক।
সিটি গোল্ডের যে কোন ইমিটেশন গহনার দাম ৫/৭শ’ টাকা। অথচ মিলন গোল্ডের তেরী একই ধরনের জিনিসের দাম গড়ে দেড়শ’ থেকে ২শ’ টাকা। পাথর বসানো একেবারে ছোট গহনা মাত্র ৫০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। সোনার দাম অনেক বেশী হওয়ায় অনেকের পক্ষেই সোনার গহনা ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। সাধারণ পরিবারের গরীব লোকজন তাদের স্ত্রী ও কন্যাদের সখ পুরণে সুবিধা পাচ্ছে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে। মিলন গোল্ডের গহনা ব্যবহারের পর রং নষ্ট হলে আবার রং করার ব্যবস্থা আছে। তাতে আবার নতুন চকচকে হয়ে যায় গহনা। বিনা খরচে ব্যবহার্য গহনার রং করে দেয়ার নিশ্চয়তা দেয়ায় ক্রেতা বাড়ছে। মহেশপুর পৌরসভার পাশে মিলন গোল্ডের ইমিটেশন গহনা তৈরীর মূল কারখানা। দুই ভাই এখন ভাগ হয়ে নিজস্ব কারখানা তৈরী করেছে। ওই কারখানার আওতায় বৈচিতলা, খালিশপুর, সামান্তা ও যাদবপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে স্বামী পরিত্যাক্তা, প্রতিবন্ধী ও বেকার লোকজন বাড়ী বসেই হ্যান্ড্রিক্র্যাপটস এর মতো মিলন গোল্ডের গহনা তৈরী করে অর্থ উপার্জন করছে। ঢাকা থেকে ব্রঞ্জ ও তামার পাত নিয়ে ছোট ছোট অসংখ্য কারখানায় প্লাস্টিকের ফ্রেমে গহনা তৈরী হচ্ছে। জমা পড়ছে কারখানার রং ঘরে। সেখানে এক ধরণের কেমিক্যাল দিয়ে সোনালী রং করা হচ্ছে। চলে যাচ্ছে বাজারে। প্রায় দেড় হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে ইমিটেশন জুয়েলারীর কারখানাকে ঘিরে।
মহেশপুর এখন ইমিটেশন গহনা পল্লী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। মহেশপুরের দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক আবুল হোসেন লিটন জানান, ২০০৯ সালে দিকে গরীবের সোনার গহনা তৈরী শুরু হয়। ধীরে ধীরে বাজার পায়। এখন রীতিমতো শিল্পে পরিণত হয়েছে। অল্পদিনে মিলন গোল্ডের ব্যাপক বিস্তার ঘটছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথমদিকে বাজারে চাহিদা ছিল একেবারেই কম। এখন অনেক চাহিদা। ক্রমাগতভাবে এটি শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে।



 

Show all comments
  • কামাল ১০ অক্টোবর, ২০১৭, ২:৩৫ এএম says : 0
    দেশের উন্নয়নের জন্য এই ধরনের আরো কিছু উদ্যোক্তা প্রয়োজন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সোনা

১০ অক্টোবর, ২০১৭

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ