পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আন্তঃধর্মীয় সমাবেশে মুসলিম ও বৌদ্ধ ভিক্ষু নেতার করমর্দন
চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে থাকা মিয়ানমার এবার নতুন কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে স¤প্রীতি প্রদর্শনে মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তঃধর্মীয় বিশ্বাসীদের এক কর্মসূচি।
এতে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন ধর্মের ২০ হাজার মানুষ। তারা ইয়াঙ্গুনের এক ফুটবল স্টেডিয়ামে মোমবাতি প্রজ্বলন এবং প্রার্থনায় অংশ নেন। ওই কর্মসূচিতে মুসলিম নেতা ও বৌদ্ধ ভিক্ষুকে হাত মেলাতে দেখা গেছে। বিভিন্ন ধর্মের মানুষের পারস্পরিক শত্রুতা-অবিশ্বাস আর ঘৃণা দূর করার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে গত মঙ্গলবার আন্তঃধর্মীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান-মুসলিম স¤প্রদায়ের নেতাদের নিয়ে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি শক্তিশালী করার কথা জানিয়ে সু চির উদ্যোগে সরকারিভাবে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। স্টেডিয়াম ভর্তি মানুষের উপস্থিতিতে বৌদ্ধ-মুসলিম-হিন্দু-খ্রিষ্টান প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত সবাই সা¤প্রদায়িকতার অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করে একে অপরের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর শপথ নেন। ইয়াঙ্গুনের বৌদ্ধদের প্রধান ভিক্ষু ইদ্ধিবালা সকলকে উদ্দেশ করে বলেন, “একে অপরকে হত্যার পথ থেকে ফিরে আসুন, একে অপরকে নিপীড়নের পথ পরিহার করুন, একে অপরকে ধ্বংস করার পথ ত্যাগ করুন’। বক্তব্য শেষে তিনি মুসলিম নেতা মুফতি হাফিজ আলীর সাথে করমর্দন করেন।
দেশের সব মানুষের জীবন, শিক্ষা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের একান্ত দায়িত্ব বলে মনে করেন মুফতি হাফিজ। উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দেশের জন্য সবার ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা উচিত’। ওই কর্মসূচির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় বৌদ্ধ ভিক্ষু ও মুসলিমরা পাশাপাশি বসে আছেন।
রোহিঙ্গাদের উপর এই নির্যাতনকে জাতিগত নিধনের ‘পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। তবে এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সা¤প্রতিক বছরগুলোতে মিয়ানমারে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের উত্থান জোরালো হয়েছে। ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসিও এই জাতীয়তাবাদী রাজনীতির পথেই হাঁটছে। দলে মুসলিমদের একটিও আসন নেই। সু চি নিজেও রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের কথা স্বীকার করেননি। ফলে জনসংখ্যার অতি ক্ষুদ্র অংশ রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো মানুষের সংখ্যা বলত গেলে দেশটিতে এখন নগণ্য।
রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতেও বারবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে মিয়ানমার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে সাধারণ মানুষেদের মধ্যে সামরিক বাহিনীর জনপ্রিয়তা অনেক। রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচারে তারা তেমন বিচলিত নয়। বিশেষ করে মুসলিম হওয়াতে তেমন আওয়াজ তুলছে না বৌদ্ধরা।
রাখাইনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর ওপর কথিত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলা ও এর জবাবে নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার হত্যা এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ বিশ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। ছয় সপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার পরও রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগ থামানো যাচ্ছে না। এই অবস্থায় বৌদ্ধ সংখ্যাগুরু দেশটিতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে অবিশ্বাস ও সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে থাকা দেশটির সরকার এবার সেই প্রেক্ষাপটেই আন্তঃধর্মীয় বিশ্বাসীদের এক কাতারে দাঁড় করালো। সূত্র : ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।